হাইলাইটস
- ছোটোবেলা থেকে মায়েরা বলে এসেছেন শাক-সবজি না খেলে কিন্তু কানা হযে যাবি।
- মনে দৃষ্টিশক্তি হারানোর ভয় থাকত বটে। কিন্তু উচ্ছে, বেগুন, ঢ্যাঁড়শ, পালং-পুইঁশাক খেতে মন চাইত না।
- ছোটোবেলায় সবারই মাছ খেতে গন্ধ লাগে। তাই ঘি-আলুভাজা, ডিমের কারি কিংবা চিকেন বরাবরই মধ্যবিত্ত বাড়ির ছোটোদের প্রিয় খাদ্য।
একটু বড় হতেই সবার হাতে চলে আসে ফেলুদার বই। মনে মনে সকলেই বড় হয়ে গোয়েন্দা হওয়ার স্বপ্ন দেখে। আর ফেলুদার মতো দুঁদে গোয়েন্দা হতে গেলে দৃষ্টিশক্তি যে সজাগ হতে হবে সে ধারণা কিশোর কিশোরীদের মনে দানা বাঁধতে থাকে। তবে শাক-সবজি বা ফল-মাছের নিয়মিত খাবার অভ্যাস বড় হয়েই জন্মায় বেশি।
আজকের প্রজন্ম তো পিজা-বার্গার সহ অন্যান্য ফাস্টফুডকেই নিজের মনের মণিকোঠায় জায়গা দিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে কম্পিউটার, স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে চোখের উপর চাপও পড়ে। ছোটোদের মতো চোখের চাপে অতিষ্ট বড়রাও। বরং বলা ভালো বড়দের চোখের সমস্যা হয় বেশি। চোখে ব্যথা, ক্লান্তি, চোখে জল আসা, কটকট করা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া নিত্যদিনের ঘটনা।
এদিকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে কম্পিউটার, স্মার্টফোনের ব্যবহার কমানো যাবে না। তাই জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ চোখের যত্ন নিতে হবে প্রতিদিনই। আর এর জন্য খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার।
২০১১ সালে গবেষকদের দাবি ছিল যে চোখকে ভালো রাখতে গেলে শরীরের জিঙ্ক, কপার, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং বিটা ক্যারোটিনের প্রয়োজন। এগুলির মধ্যে একটিও যদি তার ভারসাম্য হারায় বা মাত্রায় কমে যায় তাহলে চোখের দৃষ্টি শক্তিতে প্রভাব পড়ে। আবার পরবর্তীকালে ২০১৩ সালের একটি গবেষণায় অবশ্য ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড, জেক্সান্থিন, লুটেইন এবং বিটা ক্যারোটিনকেই চোখের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে ধরা হয়।
যদিও অত্যাধুনিক গবেষকরা বলছে চোখের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যৌগ হল ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড (DHA সহ), কপার বা তামা, লুটেইন এবং জেক্সান্থিন। এই সব যৌগ মিলবে আমাদের নিত্যদিনের খাবারেই।
চোখের খিদে
মাছ- মাছ যে চোখের পক্ষে ভালো তা ছোটোবেলা থেকেই শেখানো হয়। ডাক্তাররাও বাঙালি মায়েদের এই দাবিকে সমর্থন করেন। রেটিনার সমস্যা, ম্যাকিউলার ডিজেনারেশনের মতো স্থায়ী চোখের অসুখ, ক্ষীণ দৃষ্টির সমস্যা এড়াতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড খুবই প্রয়োজনীয়। যেসব মাছে যথেষ্ট পরিমাণ ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যেমন রুই, পমফ্রেট, ইলিশ, পাঙাশ, টুনা খান। চিংড়ি, কাঁকড়া, স্কুইডেও, সাধারণ গেরি গুগলিতে যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড রযেছে। তৈলাক্ত সামুদ্রিক মাছও পাতে রাখতে পারেন।
বাদাম- জলখাবারে রাখুন বাদাম জাতীয় শুকনো ফল। কাজু, আখরোট, চিনাবাদাম, ব্রাজিলিয়ান নাট কিংবা ডাল জাতীয় খাদ্যে থাকে যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই। চোখের পক্ষে দারুণ উপকারী।
দানা শস্য- বাদামের মতো প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি পাওয়া যায় শিয়া বীজ, ফ্লেক্স বীজেও। খাদ্যতালিকায় রাখতএ পারেন এগুলিকেও।
টক জাতীয় ফল- টক জাতীয় ফলে যেমন পাতিলেবু, কমলালেবু, আঙুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এটি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের সমস্যারক হাত থেকে বাঁচায়।
সবুজ শাক-সবজি- সবুজ যে কোনও শাক সবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন। চোখ তো বটেই যে কোনও রোগ প্রতিরোধে এর জুড়ি মেলা ভার।
গাজর- গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন। এই দুটিই চোখের খেয়াল রাখতে ওস্তাদ। স্যালাডে কাঁচা গাজর ছোটো থেকে খাওয়ার অভ্যাস করলে সারাজীবন চোখের দৃষ্টি ভালো থাকবে।
মিষ্টি আলু- গাজরের মতো চোখের জন্য উপকারী মিষ্টি আলু। এতেও প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন ই থাকে।
ডিম- খেতে আমরা সবাই ভালো ভালোবাসি। ব্রেক ফাস্ট থেকে শুরু করে ডিনার সবেতেই ডিমের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। ডিমের পুষ্টিগুণও ভয়ানক। এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে লুটেইন এবং জেক্সান্থিন। চোখের জন্য এটি খুবই উপকারী।
জল- জলের কোনও তুলনা হয় না। চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং শুষ্কতা দূর করতে প্রতিদিন পরিমাণ মতো জল খান। জলের বিকল্প জল নিজেই।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-05-27 17:22:45
Source link
Leave a Reply