তাই মনোবিদদের পরামর্শ অযথা সন্দেহ করবেন না। সম্পর্কে উদ্বেগ তৈরি হলে তা নিজেই পরীক্ষা করে দেখুন। যদি দেখেন সম্পর্ক কোনোভাবেই টেকার নয় তাহলে তা থেকে বেরিয়ে আসুন।
তবে সবসময় যে সম্পর্কে উদ্বেগ বা সঙ্গীর প্রতি সন্দেহ থাকাটা ভুল তা কিন্তু নয়। মনোবিদদের মতে সম্পর্ক শুরুর প্রথম দিকে সঙ্গীকে নিয়ে একটা উদ্বেগ থেকেই যায়। এটা স্বাভাবিক। অনেকেই আগের সম্পর্কের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে নতুন সম্পর্ককে ভরসা করতে পারেন না। ভরসা করতে পারেন না নতুন সঙ্গীর উপর। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ভরসা আপনা থেকেই তৈরি হযে যায়। তাই প্রতম প্রথম উদ্বেগ হওয়া নিয়ে বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এই উদ্বেগকে যদি সারাজীবনের সঙ্গী করে ফেলেন তাহলেই বিপদ।
কখন বুঝবেন যে আপনি সন্দেহবাতিক রোগের শিকার?
খেয়াল করে দেখুন তো, সারাদিন কি আপনি ব্রেক-আপ হওয়ার ভয়ে জড়োসড়ো হযে থাকেন? কিংবা সারাক্ষণ মনে করেন যে সঙ্গী যখন ইচ্ছে আপনাকে ছেড়ে অন্য কার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে পারে?
আপনি সঙ্গীকে যতটা মিস করছেন সঙ্গী আপনাকে ততটা মিস করছে না। এমন চিন্তা কি সারাদিন আপনার মাথায় ঘুরপাক খায়?
সঙ্গী আপনাকে সামান্য এড়িয়ে গেলেই আপনার গা হাত ঝিন ঝিন করতে থাকে?
সঙ্গী দেখা করতে দেরি করলে আপনি হতাশায় ভুগতে শুরু করেন?
এমনকি নতুন বা পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে বেশিক্ষণ সময় কাটালে বা কথা বললে আপনি ছটফট করতে থাকেন?
অথচ পরীক্ষা করতে গিয়ে প্রতিবারই আপনি দেখেন যে সঙ্গী আপনার প্রতি বিশ্বস্ত। তাহলে আপনি সন্দেহবাতিকের শিকার।
নিজের ক্ষতি নিজেই করছেন
সন্দেহবাতিকে অভ্যস্ত হযে পড়া মানে নিজের ক্ষতি নিজেই করা। সঙ্গী আপনার এই ব্যবহারে বিরক্ত তো হনই, বরং বাড়াবাড়ি হলে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন। মানে আপনি ব্রেক আপের যে সন্দেহটা করতেন তা আপনার সন্দেবহাতিকের কারণেই হয়ে যাবে। হতেই পারে সঙ্গী আপনার হাত ধরে রাস্তা দিয়ে হাঁটা পছন্দ করেন না। তারমানে এই নয় যে তিনি আপনাকে ভালোবাসেন না। আর তারফলে যদি আপনি তাঁকে সন্দেহ করেন তাহলে নিজের সুন্দর সম্পর্কের সুন্দর মুহূর্তগুলি সহজেই হারিয়ে ফেলবেন। সম্পর্কে উদ্বেগ বা নিজের মনে অতিরিক্ত সন্দেহ তৈরি হলে সারাদিন সঙ্গীর পিছনে গোয়েন্দাগিরি করেই কাটাতে হবে। এতে নিজের কাজের ক্ষতি হবে। ক্যারিয়ারের ক্ষতি হবে।
সন্দেহবাতিকের কারণ
মনোবিদদের মতে সন্দেহবাতিক রোগের শিকার হওয়ার অনেক কারণ থাকে। একদিনে এই রোগ তৈরি হয় না। যেমন, আগের সম্পর্কের তিক্ততা কিংবা প্রতারণার কারণে নতুন সম্পর্কেও সন্দেহ তৈরি হতে পারে।
রূপ, গুণ বা কাজ নিয়ে আত্মবিশ্বাস কম থাকলেও সন্দেহবাতিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ছোটোবেলায় মা-বাবার কিংবা আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ক্রমাগত অবহেলাও সম্পর্কে উদ্বেগ বা সন্দেহ আনতে পারে। এমনকি বাবা-মায়ের নিজেদের খারাপ সম্পর্কের ফলেও সন্তান সন্দেহবাতিকের শিকার হয়।
রোগের উপশম
সন্দেহবাতিক রোগ থেকে মুক্তি মেলার অনেক পথ আছে। যদি নিজের সমস্যাটা নিজে বুঝতে পারেন তাহলে নিজেই নিজের রোগ সারাতে পারবেন।
আত্মবিশ্বাস হারালে চলবে না। এক্ষেত্রে স্বার্থপর হোন। অন্যে কী করছে না ভেবে নিজের কাজে মন দিন। নিজের মধ্যে কোনও খামতি থাকলে তা পূরণের চেষ্টা করুন।
কোনও সম্পর্ক তৈরি হলে তার উপর একেবারে নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন না। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার ভয় থাকতেই পারেন, কিন্তু তার মানে জীবন থেমে থাকা নয়। যে সম্পর্কে আছেন সেটাকেই আগে উপভোগ করুন।
সবসময় ইতিবাচক ভাবনা চিন্তা করুন। সঙ্গী কোনও সমস্যায় পড়ে বা কাজের চাপে আপনাকে সময় নাই দিতে পারেন। তা বলে তিনি আপনাকে ছেড়ে চলে যাবেন এসব চিন্তা মাথা থেকে সরিয়ে রাখুন। কেউ যদি এসব ভাতে আপনাকে উস্কায় তাহলে তাকেই বরং এড়িয়ে চলুন।
সঙ্গীর সঙ্গে সবসময়ই যোগাযোগে থাকুন। নিয়মিত কথা বলা, অনলাইন চ্যাট কিংবা মেসেজে যোগাযোগ রাখুন। ব্যস্ততার কারণে একে অপরকে যোগাযোগ করতে না পারলে পরে কথা বলুন।
মনের কথা মনে বেশি চেপে রাখবেন না। সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন জাগলে সরাসরি সঙ্গীকে জিজ্ঞেস করুন।
আর সবচেয়ে বড় কথা নিজে থেকে সমস্যার সমাধান করতে না পারলে মনোবিদের সাহায্য নিন।
তবে হ্যাঁ, সন্দেহের কারণ বারবার সত্যি হলে সম্পর্ক বা সঙ্গীকে বেশি মূল্য দেওয়ার প্রয়োজন নেই। অসুস্থ সম্পর্ক থাকার চেয়ে কোনও সম্পর্ক না থাকাই ভালো।
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-05-04 21:50:13
Source link
Leave a Reply