রান্নার গুণাগুণ অনেকখানি নির্ভর করে মসলার উপর প্রকৃত মাপ এবং ভেজাল ছাড়া মসলা দিয়ে রান্নার স্বাদই অন্যরকম। দীর্ঘদিন ধরে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সাকসেসের কর্ণধার আফরোজা জামান বিভিন্ন হোম মেইড মসলা তৈরি ও বিপণনের ব্যবস্থা করেন। এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণার্থীরা তাকে মসলার পরিমাপ, গুণাগুণ মূল্য নির্ধারণে বিভিন্ন সাজেশন দিয়ে সাহায্য করে থাকেন। মূলত বিরানীগুলো যেমন- কাচ্চি বিরানী, কাশমেরী বিরানী, পাকিস্তানী বিরানীগুলোতে যে সব মসলা ব্যবহার করতে পারেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাফরান যা দুধে ভিজিয়ে রেখে ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া ব্যবহার হয় কাশমেরী মসলা যাতে বিশেষ করে কাশমেরীর এক ধরনের স্টার ফুল থাকে যা থেকে খুব সুন্দর সুগন্ধ ছড়ায়। বিরানী মসলা গুড়া করার সময় তেজপাতা, এলাচসহ অন্যান্য মসলাগুলো পরিষ্কারের জন্য ধুয়ে শুকিয়ে নিলে ভাল হয়। এছাড়া বিরানীতে পারমিটেড ফুড কালার ব্যবহার করা হয় যাতে সুগন্ধ ও স্বাদ বাড়ে। ঈদ স্পেশাল স্পেশাল বিরানী করতে ফুড কালার ব্যবহার করতে পারেন তা অবশ্যই খাবার রঙ কিনা পরীক্ষিত হতে হবে এবং খাবার কালারগুলো একটু দামী হবে।
এবার আসা যাক কাবাবের কথায়- ১৮টা মসলা মিক্স করে তৈরি হয় কাবাব মসলা। তন্মধ্যে জৈষ্ঠ্যমধু, একাংগী, লং, এলাচ, দারুচিনি, জয়ফল, জয়ত্রী, গোলমরিচ উল্লেখযোগ্য। সব মসলার মাপ নিয়ন্ত্রণ করে ধুয়ে মুছে কড়া রোগে শুকিয়ে ভাঙ্গিয়ে বৈয়াম জাত করা হয়। তাছাড়া পলি প্যাকেটেও এ মসলা পাওয়া যায় তবে সংরক্ষণ করতে হবে শুকনা জায়গায়। মসলাগুলো রেফ্রিজারেটরে রেখেও দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়।
এরপর আসি ভাজা মসলার কথায়- ভাজা মসলা ১২ রকমের মসলা দিয়ে তৈরি। চটপটি, ফুচকা, মাংস কারী, কালিয়া ভূনা চচ্চরি, দোপেয়াজা সব রান্নাতেই ব্যবহার করা যায় এই মসলা। এতে আলাদা একটা গন্ধ থাকে যা রান্নাতে ব্যবহার করলে এবং খাবার ডিসের উপর ছিটিয়ে দিলে মৌ মৌ এক সুঘ্রাণ পাওয়া যায়। যেকোনো ভাজা আইটেমে ব্যবহার করুন ভাজা মসলা যেমন- সিংগারা, সমুচা, রোলের স্টাফিং তৈরিতে, পাকোড়া ও কিমাতে ব্যবহার করতে স্টেক, সস, বারবিকিউ সস ব্যবহারের পাশাপাশি ব্যবহৃত হচ্ছে তন্দুর মসলা, কারী মসলা। গ্রীল যত পোড়া পোড়া ভাব হবে, মসলার সুগন্ধও তত বের হবে।
চাওমিন পেসি, ফ্রাইড রাইস, গ্রীল চিকেন বীফ তৈরিতে প্রয়োজন চিলি অয়েল। এই তেল কিছু মসলার সমন্বয়ে তৈরি করা হয়। চিলি অয়েল মেরিনেট করে রেখে রান্না বা বেক করা হয়। কেক তৈরিতে ব্যবহার করতে পারেন কেক ইম্প্রুভার যা কেকের কোয়ালিটি অনেক গুণ ভাল করে। যেকোনো চাইনিজ বা থাই রান্নায় ব্যবহার করুন চাইনিজ মসলা। বসিল লিফ, পাপড়িকা, ও মসলা ব্যবহারে খাবারের স্বাদ বাড়ে এবং প্রাকৃতিক রং ব্যবহার না করেও সুন্দর রং পাওয়া যায়। এসব মসলা সঠিকভাবে পরিচর্যা এবং ব্যবহার করতে সঠিক প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
২৭ রমজান থেকে চাঁদরাত পর্যন্ত মসলা বিক্রয়ে ১০% ছাড় থাকবে এবং এক হাজার টাকার মসলা কিনলে প্রশিক্ষণার্থীর পছন্দমত একটা ক্লাশ ফ্রি দেয়া হবে। সাকসেস এর ধানমন্ডি ও সাইন্সল্যাব দুটি ট্রেনিং সেন্টারেই মসলা পাওয়া যাবে। তাছাড়া এসব মসলা নিউমার্কেট, গুলশান মৌলভীবাজার বা হাতের কাছের যেকোনো দোকানেই কিনতে পাওয়া যায়। মসলাগুলো ২৫ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। ফোন : ০১৮১৯২৭৫৬৯১, ৮৬৫৩৯৮২, ৮৬৫৩৩৩৮।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০০৯
Leave a Reply