বর্ষাবাদলের দিনে বৃষ্টিতে ভিজতে কার না মন চায়। ইচ্ছা থাকলেও অনেক সময় পোশাকের কারণে মন সায় দিতে চায় না। আবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও বৃষ্টি বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। ঘরে ফিরে বৃষ্টিভেজা পোশাকের যত্ন প্রথমেই নেওয়া উচিত। কেননা, রাস্তাঘাটের কাদা লেগে যায়। এ ছাড়া এক কাপড়ের রং অন্য কাপড়ে লাগার ভয় তো রয়েছেই।
এ সময় কম কাপড় বের করা উচিত। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে। সহজে কাপড় শুকাতে চায় না। কাপড় নষ্ট হওয়ার ভয় বেশি থাকে। অনেকে বিপজ্জনকভাবে চুলার ওপর শুকিয়ে থাকে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কাপড় শুকানোর পর ইস্ত্রি করে রাখা উচিত। এতে কাপড়ের ছত্রাক নষ্ট হয়ে যায়। বিশেষ করে বাচ্চাদের কাপড়ের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। সাদা বা হালকা যেকোনো রঙের কাপড় ভিজে গেলেই পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। তা না হলে ছিটা দাগ বা তিলে পড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া আলমারি খুলে ফ্যান ছেড়ে দিয়ে রাখুন। যাতে ভ্যাপসা গন্ধ দূর হয়ে যায়। জানান গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ফিরোজা সুলতানা।
কাপড়ে কাদা বা রং লাগলে কী করা উচিত। কখনই বা লন্ড্রিতে যাওয়া উচিত সে সম্পর্কে নানা পরামর্শ দিয়েছেন ক্যালকাটা ড্রাই ক্লিনার্সের পান্থপথ শাখার শো-রুম ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, ‘বাইরে থেকে এসে ভেজা কাপড় আলাদাভাবে মেলে দিতে হবে। প্রতিটি কাপড়ের মধ্যে দূরত্ব রাখতে হবে, যাতে এক কাপড়ের রং অন্য কাপড়ে লেগে না যায়। অল্প ভেজা কাপড় বাতাসে বা রোদে শুকিয়ে রেখে দিলে সমস্যা হয় না। তবে বেশি ভিজে গেলে তা ধুয়ে দেওয়াই ভালো। তা না হলে ছোপ ছোপ দাগ বা তিলে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কাপড় ময়লা না হলে শুধু পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। ধোয়ার জন্য শ্যাম্পু, ডিটারজেন্টও ব্যবহার করা যেতে পারে। সুতি কাপড়ে কাদা লেগে যাওয়ার পর যদি শুকিয়ে যায়, তাহলে প্রথমে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর শক্ত কিছুর ওপর রেখে নরম কাপড়ে সামান্য শ্যাম্পু নিয়ে হালকাভাবে ঘষতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। নরম কাপড়টি থেকে রং ওঠে কি না, তা যাচাই করে নিন। আবার এক কাপড়ের রং অন্য কাপড়ে লাগলে সে ক্ষেত্রে একটি ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। যে কাপড়ে রং লেগেছে তা পরিষ্কার পানিতে চুবিয়ে রাখুন। কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা চুবিয়ে রাখতে হবে। এতে রং উঠে যাবে। কাপড়টি শুকিয়ে গেলে ট্যালকম পাউডার দাগের জায়গায় লাগিয়ে দিন। শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার করলে কাপড়ে লেগে থাকা রঙের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে। ফলে রংটি পাকা হয়ে যায়। পরে তা তুলে ফেলা সম্ভব হয় না।
সাধারণত সুতি, জর্জেট বা শিফন কাপড়ের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে। সিল্ক, মসলিন, তসর বা জামদানি কাপড়ের ক্ষেত্রে ড্রাই ক্লিনার্স বা লন্ড্রিতে কাপড় দেওয়া উচিত। এতে কাপড় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। ম্যাজেন্টা, ফিরোজা রঙের কাপড় পানিতে ভেজানোর সময় সতর্ক থাকা উচিত। এসব কাপড় থেকে রং ওঠার আশঙ্কা বেশি থাকে। বহু রঙের কাপড় শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত। ভালো মানের ড্রাই ক্লিনার্স বা লন্ড্রিতে আপনার কাপড় দেওয়া উচিত।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ১৮, ২০০৯
Leave a Reply