হাইলাইটস
- একদল লোকের যেমন কাবুলিওয়ালার টাকা খুব প্রয়োজন হত তেমনই হেঁশেলে প্রয়োজন হত আফগানিস্থানের শুকনো ফল এবং মশলা।
- মশলা মানেই হিং। নিরামিষ পদের অভিনব স্বাদের জিয়নকাঠি।
‘এই কাবুলিয়ালা। তোমার ঝুলিতে কী আছে’? মিনির প্রশ্নের উত্তরে কাবুলের বাসিন্দা রহমত আলির উত্তর ছিল, ‘হাঁতি আছে বাবা হাঁতি আছে’।
রহমতের এই কথা শুনে মিনি খুব মজা পেত। আর মিনিকে মজা পেতে দেখে দারুণ মজা পেত রহমত কাবুলিওয়ালাও। মিনিকে দেখলেই নিজের মেয়ের কথা মনে পড়ত তার। সুদূর আফগানিস্থানে মেয়েকে রেখে ভারতে সে এসেছিল বাদাম, পেস্তা, কাজু, কিশমিশ মেওয়া, Hing বিক্রি করতে।
রহমত একা নয়, তাঁর দেশের ভাই বিরাদররা এদেশে আসতে আফগানিস্থানের শুকনো ফল বিক্রি করতে। পাশাপাশি স্থানীয়দের চড়া সুদে টাকা ধার দিতেন তাঁরা। সেই টাকা উসুল করতে খুন খারাপি পর্যন্ত হয়ে যেত। রবি ঠাকুরের কাবুলিওয়ালাও খুনের মামলায় জেল খেটেছিল। একদল লোকের যেমন কাবুলিওয়ালার টাকা খুব প্রয়োজন হত তেমনই হেঁশেলে প্রয়োজন হত আফগানিস্থানের শুকনো ফল এবং মশলা। মশলা মানেই হিং। নিরামিষ পদের অভিনব স্বাদের জিয়নকাঠি।
সমীক্ষা বলছে বিশ্বে উৎপন্ন Hing-এর অর্ধের ব্যবহৃত হয় ভারতবর্ষে। অথচ এদেশে Hing-এর চাষ হয় না। পুরোটাই আমদানি করতে হয়। আর ভারতের Hing-এর প্রধান সরবরাহকারী হল আফগানিস্থান। অথচ আমাদের দেশের প্রত্যেক বাড়ির রান্নাঘরেই এক কৌটো হিং-এর খোঁজ অবশ্যি মেলে।
আফগানিস্থান এবং দক্ষিণ ইরাণের ফেরুলা আসা-ফোটিডা গাছ থেকে Hing পাওয়া যায়। বর্তমানে অবশ্য আফগানিস্থানের প্রতিবেশী তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তানেও Hing-এর চাষ হয়।
ভারতের আবহাওয়ায় Hing উৎপাদন হওয়া বেশ সমস্যার। Hing চাষের জন্য প্রয়োজন শুষ্ক মাটি এবং ৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট। কিন্তু ভারতের আবহাওয়া মূলত আর্দ্র। বর্ষার পরিমাণও বেশি। সেই কারণেও আফগানিস্থান সহ অন্যান্য দেশে থেকে Hing আমদানি করতে হয় ভারতকে।
প্রতিবছর আফগানিস্থান থেকে প্রায় ১২০০ টন Hing আমদানি করে ভারত। কিন্তু ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে হিমালয়ান বায়োরিসোর্স টেকনলজির তরফে হিং উৎপাদনের চেষ্টা শুরু হয়েছে। চাষ হচ্ছে হিমাচল প্রদেশের লাহৌল ভ্যালিতে। নিজের দেশের হিং-এর স্বাদ নিয়ে কেমন হতে পারে তা নিয়ে যেখানে চর্চা চলছে তখনই আফগানিস্থান থেকে এল খারাপ খবর। সেদেশ দখল করে নিয়েছে তালিবান জঙ্গীরা। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর সেখানে এখন চলছে ভয়ানক আশান্তি। বহির্বিশ্বের সঙ্গে আফগানিস্থানের বণিজ্যিক সম্পর্ক কেমন তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই।
আরও পড়ুন
তালিবানী শাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই ভারতে শুকনো ফল (কাজু, রকিশমিশ, মেওয়া, পেস্তা, আমন্ড, আখরোট) এবং মশলা (হিং)-র দাম বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। এমনিতে এক কেজি Hing-এর দাম ১৫০০ টাকা। যদিও কলকাতার বাজারে ইতিমধ্যেই সেই দাম বেড়ে হয়ে গেছে ২০০০ টাকা প্রতি কেজি।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-09-02 15:39:58
Source link
Leave a Reply