হাইলাইটস
- কড লিভার অয়েল। এটি একটি পরিপূরক পুষ্টি উপাদান।
- কড মাছের যকৃত থেকে এই তেলটি পাওয়া যায়।
- কড লিভার অয়েলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ডি।
- ছোটোদের শরীরের ভিটামিন ডি অভাব দেখা দিলে কড লিভার অয়েলের ক্যাপসুল বা সিরাপ খাওয়ানো হয়।
হাড়ের জয়েন্টের শক্ত হয়ে যাওয়া, বাত, হার্টের অসুখ, দাঁত, নখ, চুল এবং চুলের যত্নে কড লিভার অয়েলের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও তা নিয়েও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কড লিভার অয়েল ব্যবহারের লাভ-
উপকারি ফ্যাট
প্রত্যেক মানুষের শরীরের সঠিক মাত্রার চর্বি প্রয়োজন। চর্বি বা ফ্যাট দুই রকমের হয় একটি ভালো ফ্যাট এবং অপরটি খারাপ ফ্যাট। কড লিভার অয়েল ভালো ফ্যাটে পরিপূর্ণ। এতে আছে উপকারী ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি ত্বকের পক্ষে ভালো। শরীরের ভিটামিন এবং মিনারেলের সামঞ্জস্যতা বজায় রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ভালো ফ্যাট শরীরের প্রবেশ করলে খিদে কম পায়। শরীরে কার্বোহাইড্রেটের সামঞ্জস্যতা ঠিক করে। এর ফলে ব্লাড সুগারের মাত্রা ঠিক থাকে।
বাত কমায়
বাতের ব্যথার কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে কড লিভার অয়েলের জুড়ি মেলা ভার। ইনফ্লেমেশেন বা শরীরের প্রদাহ ক্ষমতা কমাতে মাছের তেল তথা কড লিভার অয়েল দারুণ কার্যকর। এর সাহায্যে হাড়ের কোমলতা এবং কাঠিন্যের সামঞ্জস্য বজায় থাকে।
বয়সজনিত কারণে পেশির সমস্যা
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পেশি শিথিল হতে থাকে। বেশ কয়েকজন গবেষক দাবি করেন যে, কড লিভার অয়েলে অবস্থিত ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড পেশি দৃঢ় করতে সাহায্য করে। এছাড়াও শরীরের ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও কড লিভার অয়েল গুরুত্বপূর্ণ।
করোনারি আর্টারির অসুখ
নিয়মিত কড লিভার অয়েল সেবনে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সরবরাহ বাড়তে থাকে। করোনারি আর্টারির অসুখ প্রতিরোধেও দারুণ কাজ দেয় এটি। রক্ত জমাটের সমস্যার সম্ভাবনাও কমে।
ক্ষত সারায়
বেশ কয়েক বছর আগের একটি সমীক্ষা বলছে কানের ক্ষতের ওষুধে কড লিভার অয়েল ব্যবহার করা হয়। গবেষকদের মতে কড লিভার অয়েলে উপস্থিত ভিটামিন এ-র কারণেই ক্ষত তাড়াতাড়ি সেরে যায়।
মস্তিষ্কের যত্ন নেয়
কড লিভার অয়েল ভিটামিন ডি-তে পরিপূর্ণ। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে এই ভিটামিন ডি মস্তিষ্ককে সতেজ রাখতে সহায়তা করে। বিশেষ করে বয়সজনিত কারণে স্মৃতিশক্তি বিকল হলে ভিটামিন ডি তা ফেরাতে সহায়তা করে। আবার আরেকটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যে কড লিভার অয়েল সেবনে স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমে। স্মৃতিশক্তি বাড়ে। মস্তিষ্কের যত্ন নেয়।
টিউবারকিউলোসিস প্রতিরোধ করে
২০১১ সালের একটি সমীক্ষা বলছে টিউবারকিউলাইসিস বা টিবি রোগ প্রতিরোধে কড লিভার অয়েলে বেশ কার্যকর।
ইনফ্লেমেশন কমায়
একদল গবেষকের দাবি, শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে কড লিভার অয়েল। এতে থাকে ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড। এর সাহায্যে শরীরের প্রদাহ শক্তি কমে।
কড লিভার অয়েল এবং ভিটামিন ডি
কড লিভার অয়েলে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি। যদি কোনও কারণে রোদ সহ্য না হয় তাহলে কড লিভার অয়েলের সাহায্যে ভিটামিন ডি শরীরে সরবরাহ করা যায়।
হাড়কে শক্ত রাখার জন্য ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের মতো ভিটামিন ডি-এর উপস্থিতিও শরীরের একান্ত প্রয়োজন।
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হলে অস্টিওসালাশিয়া এবং অসটিওপরোসিস হতে পারে।
এর ফলে ক্যান্সার, টাইপ ওয়ান এবং টাইপ টু ডায়বিটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন, মাল্টিপল স্কেরোসিস এবং অন্যান্য রোগ হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।
কড লিভার অয়েলের পুষ্টিগুণ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাগ্রিকালচারের গবেষণার দাবি এক চামচ কড লিভার অয়েল (৪.৫ গ্রাম)-এর পুষ্টিগুণ হল-
এনার্জি- ৪১ ক্যালোরি
ভিটামিন এ- ৪,৫০০ IU
ভিটামিন ডি- ৪৫০ IU
স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড- ১.০১৭ গ্রাম
মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড- ২.১০৪ গ্রাম
পলিআনস্যাচুরেটেডফ্যাটি অ্যাসিড- ১.০১৪ গ্রাম
কোলেস্টেরল- ২৬ মিলিগ্রাম
কড লিভার অয়েলের ঝুঁকি
– আজকাল পরিবেশ দূষণের কারণে মাছের শরীরে পারদ, পলিক্লোরিনেটেড বিফেনাইল, ডিটক্সিন ইত্যাদি বিষাক্ত পদার্থ থাকে। সেই পদার্থগুলি আবার শরীরে প্রবেশ করলে নানা বিপদ হতে পারে।
– অতিরিক্ত কড লিভার অয়েড সেবনে আবার অ্যানোরেক্সিয়া, ওজন কমে যাওয়া, পলিউরিয়া এবং হৃদস্পন্দনের সমস্যা হতে পারে।
– এছাড়াও কড লিভার অয়েলের কারণে রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেড়ে গেলে ধমনী এবং কলায় ক্যালসিফিকেশন হতে পারে। এমনকি কিডনিতে পাথর জমার সম্ভাবনাও থাকে।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ৪,০০০ IU ভিটামিন ডি-র প্রয়োজন।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-08-18 15:17:43
Source link
Leave a Reply