মানুষের শরীরের সবচাইতে সেনসিটিভ অংশ যা সব সময় শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়ার আশংকা থাকে, তা হচ্ছে ঠোঁট। যদি শীত একটু আগেই চলে আসে তাহলে এই সমস্যা আরো বৃদ্ধি পায়। শুষ্ক ও চিড় খাওয়া ঠোঁট খুব তাড়াতাড়ি উজ্জ্বলতা হারায় এবং দেখতেও ভালো দেখায় না। এই প্রকার সমস্যা থাকলে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। ভিটামিনের অভাব, অ্যালার্জি, পানিশূন্যতা, ধূমপান, অত্যধিক ঠোঁট চাটার অভ্যাস, সূর্যের তাপ, কিছু ঔষধের প্রতিক্রিয়ায়, কিছু অসুখের লক্ষণ হিসেবে যেমন- ডায়াবেটিস, সোরিয়াসিস, থাইরয়েড ইত্যাদি, ঠান্ডা আবহাওয়া, মুখ দিয়ে শ্বাস গ্রহণ করা ইত্যাদি কারণে ঠোঁট শুঁকিয়ে ফেটে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে। এই শুষ্ক ও ফেটে যাওয়া ঠোঁট ঠিক করার জন্য বাজারে অনেক রাসায়নিক পণ্য পাওয়া যায়। কিন্তু ঘরোয়া কিছু উপাদান দিয়েও আপনি এই সমস্যাটির সমাধান করতে পারেন। সেই ঘরোয়া উপাদানগুলো এবং তাদের ব্যবহার বিধি জেনে নিই আসুন।
১। মধু ও চিনি
এক্সফলিয়েটের মাধ্যমে ঠোঁটের মরা চামড়া দূর হয়ে দ্রুত ঠোঁট নরম ও কোমল হবে।
- ২ চামচ চিনি ১ চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে আপনার ঠোঁটে লাগিয়ে কয়েক মিনিট রাখুন।
- তারপর হাত দিয়ে আস্তে আস্তে ঘসুন, এতে মরা ও শুষ্ক চামড়া নরম হবে।
- এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মধুর চমৎকার ময়েশ্চারাইজিং ক্ষমতা আছে এবং মধুর নিরাময় ক্ষমতা ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ফেটে যাওয়া ও খসখসে ঠোঁটের চিকিৎসায় ভালো কাজ করে।
- দিনে কয়েকবার আপনার ফেটে যাওয়া ঠোঁটে বিশুদ্ধ অরগানিক মধু লাগান
- গ্লিসারিনের সাথে মধু মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে লাগালে সকালে নরম ঠোঁট পাবেন।
- গোলাপ জলের সাথে মধু মিশিয়েও ঠোঁটে লাগাতে পারেন। এতে আপনার ঠোঁট আদ্রতা পাবে ও সতেজ হবে।
২। গ্রিনটি ব্যাগ
শুষ্ক ঠোঁটের জন্য সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া প্রতিকার হচ্ছে গ্রিনটি। ভেজা গ্রিনটি শুষ্ক ঠোঁটের আদ্রতা ফিরিয়ে দিতে পারে খুব দ্রুত। একটি ব্যবহৃত গ্রিনটি ব্যাগ নিয়ে আপনার ঠোঁটে ৪ মিনিট চেপে ধরে রাখুন। প্রতিদিন এটা করুন।
৩। প্রাকৃতিক তেল
বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক তেল যেমন- নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল বা সরিষার তেল ব্যবহার করলে ঠোঁট নরম কোমল থাকবে। ঠান্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়ায় ঠোঁট ফেটে যাওয়ায় সমস্যা দূরীকরণে এবং ঠোঁটের আদ্রতা বজায় রাখতে নারিকেল তেল সবচেয়ে কার্যকরী উপায়।
৪। শশা
শুষ্ক ত্বকের অস্বস্তি দূর করতে শশার রস ব্যবহার কার্যকরী একটি উপায়। শশার টুকরা বা শশার রস দুটোই ব্যবহার করতে পারেন।
৫। অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরার নিরাময় গুণের কথা আমরা সবাই জানি। শুষ্ক ও ফেটে যাওয়া ঠোঁট ঠিক করতেও এটা সাহায্য করে। অ্যালোভেরার জেল নিয়ে ঠোঁটে লাগান এতে ফাটা নিরাময়ের পাশাপাশি ব্যথা ও কমবে যদিও এর স্বাদ অপ্রীতিকর।
পেট্রোলিয়াম জেলি, ক্যাস্টর অয়েল, জোজোবা অয়েল, মিল্ক ক্রিম ও গ্লিসারিন শুষ্ক ও ফাটা ঠোঁটের নিরাময়ে ভালো কাজ করে।
টিপস :
- পানিশূন্যতা দূর করার জন্য প্রচুর পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করুন।
- আপনার অ্যালারজিক রিয়েকশন হয় এমন জিনিস এড়িয়ে চলুন।
- আপনাকে পর্যাপ্ত পুষ্টি প্রদান করবে এমন তাজা ফলমূল ও শাকসবজি খান।
- ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন।
- ঠোঁটের শুষ্ক চামড়া টেনে উঠাবেন না। উষ্ণ গরম পানিতে তুলার বল ভিজিয়ে ঠোঁট পরিষ্কার করুন।
- লিপ বাম ব্যবহার করুন। বিশেষ করে শিয়া বাটার বা কোকোয়া বাটার আছে এমন লিপবাম সব সময় সাথে রাখুন।
- ঠোঁট কামড়ানোর ও ঠোঁট চাটার অভ্যাস থাকলে পরিহার করুন।
স্বাস্থ্য | DesheBideshe
2021-07-08 13:05:01
Source link
Leave a Reply