একটি বাক্য প্রায়ই শুনি। এক শিক্ষিত মা সমস্ত পরিবারকে শিক্ষিত করে। এটি সত্যি। সন্তান তাঁর মা-বাবার কাছ থেকে IQ স্তর-সহ অন্যান্য বৈশিষ্ট্যও সমান ভাবে অর্জন করে থাকে— এটি মেনে নেওয়া যায়। তবে একটি জেনেটিক স্টাডিতে প্রমাণিত যে, বিশেষ ভাবে বুদ্ধিমত্তার গুণাগুণ সে পেয়ে থাকে তার মায়ের কাছ থেকেই।
সাইকোলজি স্পট নামক জার্নালে এ বিষয় একটি সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছ। ১৯৯৪ সালে একটি স্যাম্পেল সার্ভে করা হয়েছিল। ১ থেকে ২২ বছর বয়সি ১২,৬৮৬ জনের ওপর চালানো হয়েছিল এই সার্ভে। জাতি, শিক্ষার স্তর, আর্থ-সামাজিক স্ট্যাটাস সম্পর্কে তাঁদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল। আবার সেই একই প্রশ্ন করা হয়েছিল মায়েদের। বিশ্লেষণের সময় দেখা যায় যে, বুদ্ধিমত্তার জিনটি X ক্রোমোজোমের সঙ্গে জড়িত। এটি আবার প্রধান ফিমেল ক্রোমোজোম।
১৯৯৪ সালেই এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আর একটি সমীক্ষায় পাওয়া যায় যে, যেহেতু মহিলাদের মধ্যে X ক্রোমোজোমের সংখ্যা দ্বিগুণ, তাই সন্তানের মধ্যে সেই ইন্টেলিজেন্স জিন সরবরাহ করে দেওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল।
বাচ্চা কতটা বুদ্ধিমান ও চালাক হবে, তা-ও মায়ের তরফের জেনেটিকই নির্ধারণ করে থাকে। অন্য দিকে বাবার জিনগুলি সন্তানের বুদ্ধিমত্তায় সামান্য প্রভাব ফেলে বা একেবারেই প্রভাব ফেলে না।
বিজ্ঞানও সমর্থন জানিয়েছে যে বুদ্ধিমত্তা এক ধরণের ‘শর্তসাপেক্ষ’ জিন, যা সাধারণত মায়ের মাধ্যমে তাদের মধ্যে প্রেরিত হলে কাজ করে। আবার বাবার তরফ থেকে এলে শর্তসাপেক্ষ ও অন্যান্য জ্ঞান ভিত্তিক জিনগুলি বশীভূত বা নিষ্ক্রিয় থাকে।
আবার বিশেষজ্ঞদের মতে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মায়েরাই সন্তানের দেখাশোনা ও লালন পালনে মুখ্য এবং প্রাথমিক ভূমিকা গ্রহণ করেন। এর ফলে বাচ্চাদের উন্নয়নের জটিল পর্যায় তাদের ওপর মায়ের প্রভাবই সবথেকে বেশি পড়ে। মায়ের প্রভাবেই প্রভাবিত হয়ে তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে।
বুদ্ধিমত্তা একটি ব্যাপক ও বিস্তৃত ধারণা এবং সামগ্রিক ভাবে নানান বিষয় একে প্রভাবিত করতে পারে। বিজ্ঞান অনুযায়ী, ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বুদ্ধিমত্তা অবশ্যই বংশপরম্পরায় লাভ করা যায়। কিন্তু অবশিষ্ট হার নির্ধারিত হয় কিছু পারিপার্শ্বিক বিষয়ের কারণে। সন্তান তাঁর মা বাবার সঙ্গে কতটা ইমোশনালি যুক্ত, এই বিষয়টিও তাঁদের বুদ্ধিমত্তা নির্ধারণ করে।
সক্রিয় অভিভাবক সন্তানকে আবেগপ্রবণ ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারে, সে বিষয় কোনও সন্দেহ নেই। বিজ্ঞান অনুযয়ী আবেগপ্রবণ মা ও তার উপস্থিতি বাচ্চাদের মধ্যে বুদ্ধিমত্তার হারকে তাৎপর্যপুর্ণ ভাবে বাড়িয়ে দেয়। আবেগের দিক দিয়ে সক্রিয় অভিভাবকের প্রভাবে বাচ্চাদের বুদ্ধি, জ্ঞানভিত্তিক বুদ্ধিমত্তা, ব্যক্তিত্ব এবং যুক্তিপূর্ণ চিন্তাভাবনা প্রভাবিত হয়।
অভিভাবকের সঙ্গে স্থায়ী ও আবেগঘন সম্পর্কে থাকা খুবই ভালো। যদি আপনার IQ লেভেল ভালো হয় বা সকলে যদি আপনাকে বুদ্ধিমান করে থাকেন, তা হলে এবার আপনি জানেন তো কাকে ধন্যবাদ জানানো উচিত?
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-06-07 16:12:06
Source link
Leave a Reply