হাইলাইটস
- মোটামুটির চল্লিশের পর থেকেই মহিলাদের মেনোপোজ শুরু হওয়ার সম্ভাব বাড়তে থাকে।
- মেনোপোজ অর্থাৎ ঋতুস্রাব প্রাকৃতিকভাবেই বন্ধ হযে যাওয়া।
- এর ফলে শারীরিক নানা অস্বস্তি, মানসিক কষ্ট শুরু হয়
কিন্তু সময় বদলেছে। আজকের শিক্ষিত ছেলেরা কিন্তু অনেক বেশি স্পর্শকাতর। নিজের বাপ-ঠাকুরদার ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে তাঁরা নারাজ। আসলে সত্যি বলতে, প্রিয় মানুষগুলো যেমন মা, কাকিমা বা ঠাকুরমাদের অতীতে কষ্ট পেতে দেখেই আজকের প্রজন্মের পুরুষের মধ্যে স্পর্শকাতরতা বেড়েছে। দাবি করেন মনোবিদরা। এবং এটা সমাজের পক্ষে ইতিবাচক বটে।
আজকের মেয়েরা যেমন পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাইরের কাজ করেন, তেমনই পুরুষরাও মেয়েদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঘরের কাজেও সিদ্ধ হস্ত। শুধু তাই নয় মহিলাদের শারীরিক কষ্টকেও তাঁরা অনেকেই সমবেদনার সঙ্গে লাঘব করার চেষ্টা করে থাকেন। প্রতিমাসে ঋতুস্রাবের যন্ত্রণায় কষ্ট পাওয়া স্ত্রী, বোন, বান্ধবী বা প্রেমিকার মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখেন অনেকেই।
কিন্তু তা বলে মেয়েরা যতটা মেয়েদের সমস্যা বোঝে ছেলেরা ততটাও বুঝতে পারে না। কারণ অভিজ্ঞতার অভাব। তবে জেনে নেওয়ার আগ্রহ থাকলে সব সমস্যাই সমাধান সম্ভব। এই যেমন মহিলাদের মেনোপজের কথাই ধরা যাক।
মোটামুটির চল্লিশের পর তেকেই মহিলাদের মেনোপোজ শুরু হওয়ার সম্ভাব বাড়তে থাকে। মেনোপোজ অর্থাৎ ঋতুস্রাব প্রাকৃতিকভাবেই বন্ধ হযে যাওয়া। এর ফলে শারীরিক নানা অস্বস্তি, মানসিক কষ্ট শুরু হয়। এবং তা চলে অনেকদিন পর্যন্ত। এই সময় মহিলাদের মানসিক সমর্থনের বড্ড প্রয়োজন হযে পড়ে। বাড়িতে ‘মা-কাকিমা-পিসিমণিদের বয়স হচ্ছে বলে খ্যাঁচ খ্যাঁচ বাড়ছে’- এই অভিযোগ যাঁরা প্রায়ই করে থাকেন, তাঁদের উদ্দেশ্যেই বলি যে এই সব সমস্যা মেনোপজের ফলেই হযে থাকে” বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা চিকিৎসকের কাছে যান না বা মনোবিদের পরামর্শ নেন না। ফলে এই সমস্যা বাড়তে থাকে।
বাড়ির মহিলা সদস্যদের বয়স বাড়লে তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল হন।
দীর্ঘকালীন প্রক্রিয়া
মেনোপজ কিন্তু একদিনে হয় না। মেনোপজ শুরুর আগের অবস্থাকে বলা হয় পেরিমেনোপজ। এটি শুরু হয় অনেক বছর আগে থেকে। যেমন পিরিয়ডের সময়ের মধ্যে পার্থক্যের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। কখনও ১০দিন অন্তর আবার কখনও ১২০ দিন অন্তর পিরিয়ড হয়। কখনও ফ্লো বেসি আবার কখনও কম হয়। এগুলি মেনোপজ শুরুর আগের লক্ষ্ণণ। হরমোনের নানা পরিবর্তনও তখঘন থেকে শুরু হয়। যার প্রভাব পড়ে মানসিক স্বাস্থ্যে।
একার সমস্যা নয়
মেনোপজ বা মেরিমেনোপজের প্রতিক্রিয়া কিন্তু একার সমস্যা নয়। মহিলার শারীরিক এবং মানসিক কষ্ট সমাধানে কাছের পুরুষের সাহায্য প্রয়োজন। পেরিমেনোপজের সময় অনিয়মিত পিরিয়ড, বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া, অদ্ভূত কারণে উদ্বেগ বা মুড সুইং-এর লক্ষ্ণঁণ দেখা দেয়। সেই সময় মহিলার পাশে থাকা দরকার। মনে রাখবেন, তিনি সারাদিন যে “খ্যাঁচ খ্যাঁচ” করছেন তার জন্য কিন্তু তিনি নিজে দায়ি নন। তাঁর শারীরিক নানা পরিবর্তনের ফল এটি। শরীরের বয়সকে তো আর থামিয়ে রাখা যাবে না। তাই অল্প বয়স থেকেই সঙ্গিনী বা বাড়ির মহিলা সদস্যের শারীরিক এবং মানসিক যত্নের চেষ্টা করুন।
একেক জনের একেক সমস্যা
পিরিয়ডের যেমন একেক মহিলার একেক রকম সমস্যা দেখা দেয় তেমনই মেনোপোজের আগে বা মেনোপজের সময়ও একেক জনের শারীরিক সমস্যা একেক রকম। তাই ধৈর্য়্য ধরুন। প্রয়োজনে কাউন্সিলরের সাহায্য নিন।
পিরিয়ডের মতোই কষ্টদায়ক
স্ত্রীর চরিত্র বোঝা যেমন দায় তার থেকেও বেশি কঠিন তাঁর শরীরের কষ্ট বোঝা। যৌবনে পিরিয়ড চলার সময় বেশিরভাগ মহিলার শরীরেই ভয়ানক কষ্টের উদ্রেগ হয়। তা চলে প্রায় বহু বছর ধরে। মেনোপজ হওয়া মানে সেই পিরিয়ড থেমে যাওয়া। কিন্তু, তার মানে এই নয় যে মহিলার শরীরের কষ্ট রাতারাতি লাঘব হয়ে যায়। পিরিয়ড চলাকালীন যে শারীরিক এবং মানসিক কষ্ট হত হয়তো শুধু তার চরিত্র বদল হয়। কিন্তু পরিমাণের কোনও পরিবর্তন হয় না।
শারীরিক পরিবর্তন
মেনোপজের ফলে মাথা ব্যথা, শুষ্ক ভ্যাজাইনা, ওজন বৃদ্ধি, চুল পড়া বা সাদা হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। চেহারা কুৎসিত হয়ে যাওয়ার উদ্বেগ এবং অবসাদে ভুগতে থাকেন মহিলা। মুখে কিছু না বললেও ছোটোখাটো কারণে কাঁদতে শুরু করে। এই অবস্থায় তাঁকে ভালোবেসে কাছে টেনে নিন। সারাজীবন তিনি যেমন আপনার খেয়াল রেখেছেন এই বয়সে আপনি বরং তাঁর খেয়াল রাখার দায়িত্বটা নিজের হাতে তুলে নিন।
শরীরচর্চায় উৎসাহ
মেনোপজের শিকার মহিলাকে শরীর চর্চায় উৎসাহ দিন। জিম, যোগাসন, সকালে হাঁটাহাঁটি কিংবা অন্য কোনও শারীরিক ক্রিয়ায় তাঁর সঙ্গী হন। মন খারাপ হলে তাঁকে বোঝার চেষ্টা করুন। তাঁর মনকে ভালো করার চেষ্টা করুন। দেখবেন কাউকে সমস্যা থেকে মুক্তি বা মুক্তির চেষ্টা করলে আপনার মনও ভালো হয়ে যাবে।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-06-07 21:05:03
Source link
Leave a Reply