হাইলাইটস
- কচুরিপানা দিয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরিতে সফলতা আসার পর দেশের অন্যতম তন্তু পাট দিয়ে ন্যাপকিন তৈরির গবেষণা শুরু হয় বাংলাদেশে।
- এই গবেষণাও সফলতার পথে।
- তবে এর উৎপাদন খরচ ৮ টাকা।
গত এক দশকে আফ্রিকার কেনিয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে এমনকি ভারতেও কচুরিপানা ও পাট, কলা গাছের তন্তু দিয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির গবেষণা শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবরও হয়েছে। বাংলাদেশে তো প্রচলিত দেশি-বিদেশি তুলা ও শোষক জেলের বিকল্প স্যানিটারি ন্যাপকিন বানানোর গবেষণাও রয়েছে পরীক্ষামূলক ধাপে। তবে কচুরিপানা দিয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন বানানোর ধারণা ভারত ও বাংলাদেশে প্রথম দেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর পড়ুয়া নাজিবা নায়লা ওয়াফা ও তাঁর তিন সহপাঠী।
সালটা ছিল ২০১৬। নাজিবা মূলত ঢাকার মহম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে পড়তে গিয়ে সেখানকার মহিলাদের পিরিয়দের সময় অস্বাস্থ্যকরভাবে কাপড় ব্যবহার করতে দেখেন। তখনই স্বল্পমূল্যে বিকল্প স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির কথা ভাবেন। নাজিবা জানান, কেনিয়ায় কচুরিপানা দিয়ে জানিপ্যাড তৈরি করা হয়। সেটা জানতেন। তাঁর দেশেও কচুরিপানা সহজলভ্য। তাই দেরি না করে কেনিয়ার গবেষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রস্তুতি প্রক্রিয়া জেনে তাঁরাও কচুরিপানা দিয়ে প্যাড তৈরির কাজ শুরু করে দেন। নাজিবার কথায়, ‘শুরুটা পরীক্ষামূলকভাবে হয়েছিল। কচুরিপানা শুকিয়ে ব্লেন্ডারে গুঁড়ো করে এর সাথে তুলা দিয়ে বানানো হল প্যাড।’ সফলতা আসায় পরে ব্লেন্ডারের মত কাজ করবে, সেরকম মেশিন বানিয়ে কয়েকজন নারীকে প্যাড বানানোর প্রশিক্ষণ দেন তাঁরা। প্রথমে ৭ জন ও পরে ১০ জন জেনেভা ক্যাম্পের মহিলাদের দিয়েই বানানো হয় এই বিকল্প স্যানিটারি ন্যাপকিন।
তারপর এই বিকল্প স্যানিটারি ন্যাপকিন ২০১৭ সালে জেনেভা ক্যাম্পে তিন মাস ও ২০১৮ সালে হাজারিবাগ বস্তিতে সাড়ে চার মাস আড়াই হাজার মহিলাকে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। সেটা সফলও হয়। যার জন্য বাংলাদেশে পুরস্কৃতও হন নাজিবা। তিনি জানান, কচুরিপানা দিয়ে একটি ন্যাপকিন তৈরিতে খরচ পড়ে মাত্র ৩ টাকা। তাই স্বল্পমূল্যের এই ন্যাপকিন মহিলাদের হাতে তুলে দিতে উদ্যোগী তিনি। তবে এখন এটার মানোন্নয়নের কাজ চলছে।
কচুরিপানা দিয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরিতে সফলতা আসার পর দেশের অন্যতম তন্তু পাট দিয়ে ন্যাপকিন তৈরির গবেষণা শুরু হয় বাংলাদেশে। এই গবেষণাও সফলতার পথে। তবে এর উৎপাদন খরচ ৮ টাকা। তাই উৎপাদন খরচ কমিয়ে মানোন্নয়ন করার জন্য পাটের ন্যাপকিন তৈরির গবেষণা এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। পাশাপাশি কলা গাছের বাকল দিয়েও স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির গবেষণাও শেষ পর্যায়ে। সরকারি সাহায্য মিললেই এটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন এই গবেষণার উদ্ভাবক তথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মোহন রবিদাস।বাংলাদেশের মতো বর্তমানে ভারতেও এই বিকল্প স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির কাজ জোরকদমে শুরু হয়েছে।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-05-26 13:26:36
Source link
Leave a Reply