হাইলাইটস
- ১৭ বছরের পিউ স্কুলে খেলতে গিয়ে বুকে হালকা ধাক্কা খেতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অসহ্য যন্ত্রণা।
- ব্যথার চোটে কাঁদতে শুরু করে সে। সে বান্ধবী ধাক্কা দিয়েছে সে তো দিশেহারা।
- স্পোর্টস্ টিচার এসে পিউকে সিকরুমে নিয়ে যান।
পিউয়ের মা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। এসব সমস্যার কথা সে মা-কে জানানোর সুযোগ পায় না। শিক্ষিকা বুঝতে পারেন। ছাত্রীদের নিয়ে একদিন মিটিং ডাকেন। কথায় কথায় জানা যায় যে পিউ একা নয়। পিরিয়ড শুরুর আগে ব্রেস্টে ব্যথার সমস্যায় অনেকেই ভোগে।
শিক্ষিকা তখন ছাত্রীদের নিয়ে একটি সার্ভে করেন। তাতে জানা যায় যে ৭০ শতাংশ ছাত্রীরই এই সমস্যা রয়েছে। তবে সেটা সাময়িক। নিজে থেকেই ব্যথা সেরে যাওয়ায় ওরাও আর মাথা ঘামায় না।
সার্ভে করা হয় গোটা স্কুলের ছাত্রী এবং শিক্ষিকাদের মধ্যেও। কয়েকজন শিক্ষিকাও এই সমস্যার কথা জানান। এবং তার মধ্যে সদ্য বিবাহিতা একজন শিক্ষিকা জানান যে ব্যথা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ব্রেস্ট থেকে তরল পদার্থ নিঃসৃতও হয়। স্পোর্টস্ শিক্ষিকার উদ্যোগে স্কুলে একজন বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে নিয়ে আসা হয়। তিনি সমস্যা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন।
ব্যথার কারণ
পিরিয়ড চলাকালীন বা তার আগে বা পরে শতাধিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যেটা হয় তা হল কোমর এবং পেটে ব্যথা। সেই মারাত্মক ব্যথা সারা শরীরের ছড়িয়ে পড়ে। কারও ব্রেস্টে ব্যথা হয়। কারও গা বমি করে। কেউ খাবার খেতে পারেন না। মুখে অরুচি দেখা দেয়। মুড সুইং হয়। এগুলি প্রায় সবই স্বাভাবিক ঘটনা।
আসলে পিরিয়ড চলাকালীন বা তার আগে বা পরে শরীরের হরমোনের কিছু পরিবর্তন হয়। সেক্ষেত্রে এধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়।
তবে যাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চা বা খেলাধুলো করেন তাঁদের ক্ষেত্রে শারীরিক কষ্ট হয় না বললেই চলে। এধরনের সমস্যা অনেক সময় সন্তান ধারনের পর আপনা থেকেই ঠিক হয়ে যায়। তাই অযথা ভয় পাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।
ঘরোয়া সমাধান
ব্রেস্টে বেশি ব্যথা হলে সাপোর্ট দেওয়া স্পোর্টস্ ব্রা পরুন। চা-কফি, মদ্যপান, ধূমপান, চর্বি, তেল, মশলাযুক্ত খাবার বর্জন করুন। পিরিয়ড শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগে থেকে এই নিয়ম মানলে ব্রেস্টের ব্যথা অনেক সময়ই বন্ধ হয়ে যায়।
ভিটামিন ই এবং ম্যাগনেশিয়ামে পরিপূর্ণ খাবার খান। খাবারের তালিকায় রাখুন চিনে বাদাম, পালংশাক, ভুট্টা, অলিভ অয়েল, সূর্যমুখী তেল, গাজর, কলা, ওটস্, ব্রাউন সাইস।
নিয়মিত শরীরচর্চা একান্ত প্রয়োজন।
চিন্তার কারণ
তবে হ্যাঁ, তা বলে সব কিছুতে গা ছাড়া ভাবও অনুচিত। এই যেমন, পিরিয়ডের আগে ব্রেস্টে ব্যথা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা থেকে তরল পদার্থ নিঃসৃত হয়।
ব্রেস্টে ছোটো মাংস পিন্ডর মতো দেখা দেয়। কাজ করতে গিয়ে এমনকি ঘুমোবার সময়ও ব্রেস্টে মারাত্মক ব্যথা হয়। শুধুমাত্র একটিমাত্র ব্রেস্টই ফুলে যায় বা ব্যথা করে।
এছাড়াও পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে যাওয়া, অত্যাধিক মাত্রায় ক্লড, রক্তের অতিরিক্ত ফ্লো ইত্যাদি, ইন্টারকোর্সের সময় ভয়ানক ব্যথা বা রক্তপাত হওয়া ইত্যাদি কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার উপসর্গ। এগুলি ব্রেস্ট বা ওভারি ক্যান্সার, ওভারিতে সিস্ট ইত্যাদি হওয়ার লক্ষণ। এক্ষেত্রে দেরি না করে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জরুরি।
কোনও ঘরোয়া টোটকা একেবারেই প্রয়োগ করবেন না। সুস্থ থাকতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনাও প্রয়োজন। নেশা বর্জন, অপুষ্টিকর খাবার না খাওয়া, ফাস্ট ফুড খাওয়া বন্ধ বা নিয়্ন্ত্রনে আনা, স্যানিটারি ন্যাপকিন চার-পাঁচ ঘণ্টা পর পর পরিবর্তন করা, যৌনতার সময় পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গর্ভনিরোধক ওষুধ না খাওয়া, অন্তর্বাস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে সুরক্ষা ছাড়াই যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হওয়ার মতো অভ্যাসগুলি ছাড়তে না পারলে শরীর পুরোপুরি সুস্থ হবে না। নিজেকে সুস্থ রাখার দায়িত্ব আপনার। এক্ষেত্রে কেউ আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-05-17 12:37:19
Source link
Leave a Reply