সারা পৃথিবীতে করোনাভাইরাসের মহামারিতে আক্রান্ত। ডায়াবিটিস (diabetes) রোগীরা শুধু যে করোনায় (Covid) বেশি জটিলতায় ভোগে তা নয়, তারা যে কোনও ভাইরাল ইনফেকশনেও বেশি ভোগেন। চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবিটিস রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে কম থাকে। কিছু দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা, যেমন- হার্টের অসুখ, কিডনির অসুখ আছে। এসব জটিলতার ভেতর করোনা আক্রান্ত হলে জটিলতা আরও বেশি বৃদ্ধি করে।
ডায়াবিটিসের দোসর করোনা

বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের অনেকেরই ডায়াবেটিস আছে। তার ওপর আমাদের ডায়াবিটিসের রোগীদের একটি বিরাট অংশের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ডায়াবিটিসের কারণে রোগীদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। যেকোনো জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার সক্ষমতা হ্রাস পায়। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে সুগার রোগীদের একটু বেশি সচেতন হওয়া জরুরি।
আয়ুর্বেদ বহু শতাব্দী ধরে ভারতে বহু রোগ নিরাময় করে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে আপনার যদি ডায়াবিটিস বা হাইপারটেনশন হয় তবে কেবল আপনাকে কয়েকটি গাছের পাতা খালি পেটে সেবন করতে হবে। এটি কেবলমাত্র ডায়েবিটিসের সমস্যাই নিয়ন্ত্রণে রাখবে না, আপনার শরীরে সম্পর্কিত অনেকগুলি সমস্যা থেকেও রক্ষা পাবেন। আসুন জেনে নিন এই তিনটি পাতা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে-
তুলসি পাতা

তুলসির ভেষজ গুণ নিয়ে প্রাচীন কাল থেকেই বহু আলোচনা করে এসেছেন মুনি-ঋষিরা। এমনকী আর্য়ুবেদ শাস্ত্রেও রয়েছে সেই উল্লেখ। এখন বাজারে তুলসির গুণ সমৃদ্ধ বিভিন্ন ওষুধ-টনিক পাওয়া যায়। কিন্তু কাঁচা পাতায় যে গুণ থাকে তা কখনই টনিকের মধ্যে থাকে না। তবে এই করোনাকালে বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়েছেন তুলসি পাতার উপর। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আদা-গোলমরিচ-লেবু-দারচিনির জলে দুএকটা তুলসি পাতা ফেলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। গলা ব্যাথা বা ঠান্ডা লাগার মতো উপসর্গ থাকলেও তা দূর হবে তুলসির গুণে। এছাড়াও শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা, হার্টের সমস্যা থাকলেও তুলসি পাতা খাওয়ার কথা বলা হয়। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে টাইপ ২ ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণেও খুব ভালো কাজ করে তুলসী পাতা। রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখতে তুলসী পাতার অনেক রকম ভূমিকা রয়েছে।
রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে তুলসি পাতা। যার ফলে কমে ডায়াবিটিসের ঝুঁকিও। পাঁচটা তুলসি পাতা আগের রাতে এক গ্লাস জলে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে তা ছেঁকে খেয়ে নিন।
কারি পাতা

কারি পাতা ভারতীয় রান্নার একটি অন্তর্নিহিত অংশ। ঝোল থেকে শুরু করে কারি, স্ট্যু সবেতেই এর ব্যবহার আছে। এর অন্যতম কারণ হল কারি পাতার বিশেষ সুবাস ও স্বাদ। গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কারি পাতা খেলে মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত শরীরের প্রতি অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়ে। সেই সঙ্গে একাধিক মারণ রোগকে দূরে রাখতে ও আয়ু বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে কারি পাতা। কারি পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা তো কমায়, সেই সঙ্গে ভাল কোলেস্টরলের পরিমাণও বাড়য়। আর একবার খারপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে চলে এলে হার্টের ক্ষতি হওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না। তিন দিন কারি পাতা খেলে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক লেভেলের উপরে যাওয়ার সুযোগ পায় না।
নিম পাতা

নিম পাতায় ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে। এমনকি সুগারের প্রভাব শরীরে কম পড়তে পারে নিমপাতার নিয়মিত ব্যবহারে। যদিও এই নিমপাতার ব্যবহার খুব একটা নতুন নয়। আদি কাল থেকেই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে নিমপাতার ব্যবহার করা হয়। বাঙালির পাতে নিমপাতা অনেক সময়েই নিয়মিত পড়ে।
ভারতীয় আয়ুর্বেদের ইতিহাসের দিকে নজর ঘোরালে দেখা যাবে, সেখানে আদি কালের সমস্ত চিকিৎসকরা নানাভাবে নিমপাতার ব্যবহার করেছেন। তাঁরা একদিকে যেমন অ্যান্টিসেপ্টিক হিসাবে নিমপাতার ব্যবহার করতেন, তেমনই খাওয়ার হিসাবে নিমের ব্যবহার হত। রক্তে শর্করার হার উল্লেখযোগ্য ভাবে ছ’মাস বাদে কমে গিয়েছে। যাঁরা নিয়মিত নিমপাতা খেয়েছেন, তাঁদের রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রথম দু’মাসে একটু করে ফল দেখা গেলেও, ছ’মাস সম্পূর্ণ ফল দেখে অবাক হয়েছেন গবেষকরা। এর পাশাপাশি, চিকিৎসকরা দেখেছেন, সুগারের জন্য যে ইনিসুলিন ব্যবহার করা হয়, তাও ছ’মাস পরে অনেকটা কমে গিয়েছে।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-05-17 10:36:41
Source link
Leave a Reply