আলু-কাঁচকলার ঝোল
আলু-কাঁচকলার ঝোল যেমনই সুস্বাদু তেমনই পুষ্টিকর। হজমও হয় সহজে। আলু এবং কাঁচকলা ছোটো ছোট লম্বা করে টুকরো কেটে নিন। কাঁচকলা কিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রাখুন তাতে কস চলে যাবে। এবার তেল গরম করে নুন-হলুদ দিয়ে আলু এবং কাঁচকলা আলাদা আলাদা করে ভেজে নিন। ভাজা তেল যতটুকু পড়ে থাকবে তাতে তেজপাতা, রাঁধুনী এবং কালোজিরে ফোঁড়ন দিন। তাতে ভাজা আলুগুলি দিয়ে হালকা করে নেড়ে পরিমাণমতো জল দিয়ে দিন। ফুটতে থাকলে তাতে দিন লম্বালম্বি করে চেরা কাঁচালঙ্কা এবং নুন। এই রান্নার জন্য স্পেশাল ভাজামশলা আগে থেকেই তৈরি করে রাখতে হবে। ধনে, জিরে, শুকনোলঙ্কা এবং তেজপাতা শুকনো খোলায় ভেজে মিক্সিতে মিহি করে গুঁড়ো করে রেখে দিন। এই মশলা যে কোনও রান্নাতেই দিতে পারেন। বাঙালি সাবেকি রান্নায় এই মশলার প্রচল আজও হয়ে থাকে। উনোনে আলুর ঝোল ফুটতে শুরু করলে তাতে কাঁচকলা ভাজাগুলিও দিয়ে দিন। নাড়তে থাকুন। সব শেষে ভাজা মশলা দিয়ে আরেকটু ফুটিয়ে নামিয়ে নিন। এই গরমে আলু-কাঁচকলার ঝোল দিয়ে ভাত কেতে অসাধারণ লাগবে।
আম ডাল
গরমে সবচেয়ে সহজ এবং সুস্বাদু খাবার। তেল গরম করে তাতে সর্ষে এবং শুকনোলঙ্কা ফোঁড়ন দিন। তাতে দিন লম্বা করে কাটা কাঁচা আম। হালকা নাড়াচাড়া করে ভালো করে পরিষ্কার করা মুসুরির ডাল দিয়ে জল ঢেলে দিন। তাতে মেশান নুন, অল্প চিনি এবং হলুদ। ভালো করে ফোটান। মাঝে মাঝে নেড়ে দিন। ডাল সিদ্ধ করে গেলে ওভেন বন্ধ করে দিন। আপনার টক-ঝাল-মিষ্টি আম ডাল তৈরি।
কার্ড রাইস
দই ভাত তো প্রায় রোজই খাওয়া হয়। কিন্তু দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় কার্ড রাইস কোনোদিন টেস্ট করে দেখেছেন কি? একবার খেয়ে দেখুন। বারবার খেতে ইচ্ছে করবে।কার্ড রাইস বানানোও খুব সহজ। টকদই ফেটিয়ে রেখে দিন। সাদা ভাত তৈরি করে নিন। কড়াইয়ে সাদা তেল দিয়ে তাতে হিং, গোটাজিরে, গোটা সর্ষে এবং নুন দিন। এতে দিন পেঁয়াজ কুচি, কাঁচালঙ্কা কুচি, টোম্যাটো কুচি, ক্যাপসিকাম কুচি এবং কারিপাতা। ভালো করে সঁতে করে ঠান্ডা করতে দিন। ভাজাটি ফেটানো দইয়ে দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার পেঁয়াজ কারিপাতার মশলা মেশানো দইয়ে ভাত দিয়ে ভালো করে মেখে নিন। সার্ভিং বাটিতে দই মাখা ভাত দিন। এবার পাত্রে ফের সাদা তেল গরম করে তাতে সর্ষে এবং কারিপাতা ফোঁড়ন দিন। যেই বাটিগুলিতে দই-ভাত বেড়েছেন তার উপর চামচ দিয়ে সর্ষে কারিপাতার ফোঁড়ন ছড়িয়ে দিন। কার্ড রাইস গরম গরম ভালো লাগে না। তাই ঠান্ডা হওয়ার পর এটি খান। গরমে খুবই স্বাস্থ্যকর।
টোম্যাটো সার
গরমের সময় মহারাষ্ট্র কিংবা ওড়িশাতে টোম্যাটো সার খুব জনপ্রিয়। রান্না করাও সহজ। কয়েকটি গোটা টোম্যাটো ভালো করে পরিষ্কার করে সিদ্ধ দিয়ে দিন। সিদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে নিয়ে ঠান্ডা করে টোম্যাটোর খোসা ছাড়িয়ে নিন। এবার শুকনো খোলায় জিরে, ধরে শুকনো লঙ্কা ভেজে নিন। টোম্যাটো ঠান্ডা হলে মিক্সিতে সেগুলি দিন। সঙ্গে দিন শুকনো খোলায় ভেজে রাখা গোটা জিরে, ধনে এবং শুকনো লঙ্কা। একসঙ্গে ব্লেন্ড করে পিউরি বানিয়ে নিন। এবার কড়াই গরম করে তাতে টোম্যাটো-মশা পিউরি, নুন এবং চিনি দিয়ে অল্প আঁচে ফোটাতে থাকুন। প্রয়জনমতো জল দিন। অন্য একটি পাত্রে সাদা তেল গরম করে তাতে রসুন, শুকনো লঙ্কা, কারিপাতা, সর্ষে এবং হিং ফোঁড়ন দিন। মশলার গন্ধ উঠলে টোম্যাটোর ঝোলে সেটি দিয়ে দিন। তৈরি হয়ে গেল টোম্যাটো সার। দক্ষিণ ভারতে এরমধ্যে আবার নারকেলের দুধ দেওয়ার রীতি আছে। ভাত, টোম্যাটো সার এবং পাঁপড় দিয়ে লাঞ্চ ভালো জমবে।
লাউ বড়ির শুক্তো
শুধু বাংলাতেই নয় বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাতেও লাউ বড়ির শুক্তো বেশ জনপ্রিয়। যদিও একেক প্রদেশে এর একেক নাম। লাউ বড়ির শুক্তো করতে গেলে ঝিরি ঝিরি করে লাউ কেটে নিন। বড়ি আলাদা করে ভেজে নেবেন। একটি পাত্রে লাউগুলি দিয়ে তাতে হালকা জলের ছিটে এবং নুন দিয়ে ভাপিয়ে দিন। অতিরিক্ত জল ফেলে দিতে পারেন। এবার কড়াইতে সাদা তেল গরম করে তাতে তেজপাতা , শুকনো লঙ্কা এবং গোটা সর্ষে ফোড়ন দিন। তাতে মেশান আদাবাটা। রান্নাটির রং সাদা হবে। তাই খেয়াল রাখবেন আদাবাটা যেন পুড়ে না যায়। এবং এতে ভাপানো লাউ দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন। পরিমাণ মতো নুন এবং চিনি মিশিয়ে নিন। এবার এতে লাউ ভালো মতো মিশে গেলে তাতে দিন পোস্ত বাটা। ফের নাড়াচাড়া করুন। এবার একটি পাত্রে অল্প দুধ নিয়ে তাতে সামান্য ময়দা বা কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে নিন। মিশ্রনটি লাউয়ের পদে ঢেলে দিয়ে ফের নাড়াচাড়া করতে থাকুন। সবশেষে এতে দিন বড়ি। ছোটো সাইজের বড়ি হলেই ভালো। বড় সাইজের বড়ি হতে তা ভেঙে দিন। খুব ভালো করে নাড়া চাড়া করে তাতে এক চামচ ঘি দিয়ে কড়াইয়ে ঢাকনা আটকে দিন। অল্প আঁচে তিন-চার মিনিট রেখে নামিয়ে ফেলুন। ভাত তো বটেই রুটি দিয়েও এই লাউয়ের শুক্তো খেতে দারুণ লাগবে।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-05-11 18:07:36
Source link
Leave a Reply