হাইলাইটস
- খেলাধুলোর সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক সেই প্রাচীন কাল থেকেই।
- তাই খেলার অভ্যাস সে আজও ছাড়তে পারেনি।
- তা সে রাজনীতির খেলা হোক কিংবা প্রেমের
বলছে ডেকে, ‘গাঁয়ের রাখাল একটু খেলে যা!’
সেদিন আর নেই। মাঠে ঘাটে ছুটে বেড়িয়ে খেলাধুলো করার সময় আজকাল কারও হাতে নেই। ছোটোরা ব্যস্ত অনলাইন ক্লাসে আর বড় ব্যস্ত কাজ নিয়ে। তাছাড়া করোনার জ্বালায় মাঠে গিয়ে খেলার উপায়ও নেই।
আর মাঠই বা কোথায়। প্রোমোটারেরা সব মাঠকেই বহুতল বানিয়ে ফেলেছেন। বহুতলের প্রয়োজনও আছে। না হলে এত মানুষ থাকবে কোথায়?
বহুতল কিনতে গেলে লাগবে অর্থ। কাজ না করলে অর্থ উপার্জন হবে না। আবার অর্থ উপার্জনের জন্য চাই পড়াশোনা। মানে একটি গোটা সাইকেল।
কিন্তু খেলাধুলোর সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক সেই প্রাচীন কাল থেকেই। তাই খেলার অভ্যাস সে আজও ছাড়তে পারেনি। তা সে রাজনীতির খেলা হোক কিংবা প্রেমের। কিংবা অনলাইন গেম।
আর অনলাইন গেমের কথাই যদি ধরা যায় তাহলে এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে বিনোদনের অন্যতম উপায় এই অনলাইন গেম।
এই খেলার খারাপ দিক অনেক আছে। কিন্তু তার কিছু ভালো দিকও আছে বটে। হতে পারে এর জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সরাসরি যোগস্থাপন হয় না। কিন্তু এই খেলার মাধ্যমে অনেক অজানা অচেনা মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয় অনায়াসে।
শুধু তাই নয়, মনোবিদরা বলছেন যে গঠনমূলক খেলার মাধ্যমে মানুষের মনের বিকাশও হয়। অনেকে অনলাইন গেমের মাধ্যমে উপার্জন করে থাকেন। অনেকে এই গেমের মাধ্যমে নিজের স্বপ্নকে ভার্চুয়ালি পূরণ করার চেষ্টা করেন। অনেকে আবার এই অনলাইন গেমের সাহায্যেই শুরু করেন নতুন সম্পর্ক। নতুন সংসার।
অবাক হওয়ার কিছু নেই। বেশ কয়েক বছরের গবেষণা বলছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যেমন অনেক সময়ই ভার্চুয়াল সম্পর্ক বাস্তবে পরিণত হয়। তেমনই অনলাইন গেম খেলতে খেলতেও দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে বন্ধুত্ব বা সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের বাসিন্দা স্যান্ড্রার অনলাইন গেমের নেশা বহুদিনের। একটা সময় একাকীত্ব এবং অবসাদ কাটানোর জন্য অনলাইন গেমে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সেই গেমের মাধ্যমেই আরেক সহ খেলোয়াড়ের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। ধীরে ধীরে আলাপ পরিণত হয় বন্ধুত্বে। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। দুজনে কেউ কারও ভাষা বুঝতেন না। স্যান্ড্রা ছিলেন মার্কিনি। আর তাঁর সঙ্গী জার্মানের বাসিন্দা। অবস্থা এমন হয় যে মার্কিন মুলুক থেকে স্যান্ড্রা সোজা উড়ে যান জার্মানীতে। অনলাইনে আলাপ হওয়া সঙ্গীর সঙ্গে সামনাসামনি দেখা করেন। যেমনি দেখা তেমনই প্রেম। শেষ পর্যন্ত বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
কিন্তু জার্মানীতে গিয়ে ভাষার সমস্যা হতে থাকে মার্কিনি স্যান্ড্রার। সেখানে ইংরেজি ভাষার চল নেই। আবার তিনিও জার্মান ভাষা জানেন না। ফের একাকীত্বের শিকার হন তিনি। শেষে ফের গেম খেলতে শুরু করেন। গেমের মাধ্যমে প্রচুর জার্মান বন্ধু তৈরি হয় তাঁর। ভাষা না বুঝলেও অনলাইন গেমের পাকা খেলোয়াড় স্যান্ড্রাকে পছন্দ করতে থাকেন সকলে। এখন তিনি জার্মান ভাষা অনেকটাই রপ্ত করে ফেলেছেন।স্বামী তো বটেই বন্ধুরাও তাঁকে সাহায্যে করেছে। আর সবটাই হয়েছে অনলাইন গেমের কারণে।
জার্মান স্বামীর সঙ্গে ইতিমধ্যেই ১৭ বছরের বিবাহিত জীবন কাটিয়ে ফেলেছেন স্যান্ড্রা। তাঁর সন্তানও অনলাইন গেমের পোকা। সংসারের চাপে পড়ে অনলাইন গেম খেলা স্যান্ড্রা ছাড়েননি। সেই খেলা থেকে ভালো উপার্জন করেন তিনি।
অনলাইন গেম খেলার পাশাপাশি তিনি একজন ব্লগ লেখকও। প্রায়ই নিজের নানা অভিজ্ঞতা ব্লগে শেয়ার করেন। সেই ব্লগেই অনলাইন গেমের প্রতি তাঁর আসক্তি এবং প্রেমের কথা তিনি লিখেছেন। প্রায় দুই যুগের অভিজ্ঞ অনলাইন খেলোয়াড় স্যান্ড্রা খেলা নিয়ে রিসার্চও করেন। তাঁর গবেষণা বলছে যে, বিশ্বজুড়ে অনলাইনে গেমের সুবাদে প্রেম বা বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার উদাহরণ দিন দিন বাড়ছে।
আজকাল ডেটিং সাইট বা সোশ্যাল মিডিয়ার রমরমার যুগ। সেখানে অনলাইন গেম কিন্তু চুপিসাড়েই ঘটকের কাজ সেরে ফেলছে। কেউ জানতেও পারছে না।
মনোবিদদের মতে অনলাইন গেমের সাহায্য়ে জীবনসঙ্গী খুঁজে পাওয়াকেও অনেকে অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে দেখছেন। ফলে সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্যধরনের সংজ্ঞা তৈরি হচ্ছে। তবে এর কুপ্রভাব এখনও পর্যন্ত কম দেখা গেলেও তা একেবারে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-05-05 16:05:07
Source link
Leave a Reply