হাইলাইটস
- করোনা মহামারী মানুষকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে,
- বন্ধুত্ব মানে শুধুই আনন্দ, আড্ডা, পার্টি আর ঘুরতে যাওয়া নয়।
- বন্ধুত্ব মানে একে অপরের বিপদে সাহায্য করা
বন্ধুর ব্যাপারে অত্রি খুব ভাগ্যবতী। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুধু একবার নিজের অসহায়তার কথা জানিয়ে দেয় সে। ব্যস্, চারদিক থেকে বন্ধুরা ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে সাহায্য করতে। খাবার, ওষুধের সমস্যার সমাধান হয়।
এই সময়ই অত্রি একটি অদ্ভুদ জিনিস লক্ষ্য করে। যে সব বন্ধুরা তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে ওর সম্পর্ক খারাপ হয়ে গিয়েছিল। অত্রির মিষ্টি ব্যবহার, অনেক বন্ধু আর সুখি জীবনকে যে দু-এক জন বন্ধু হিংসা করত তারাও সেসব ভুলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সত্যি বলতে কী ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে সাহায্য সে আশাই করেছিল। কিন্তু হিংসুটে বন্ধুরা যে তাকে এভাবে বিপদের সময় কাছে টেনে নেবে তা সে স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। ফলে ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই সব বন্ধুদের সঙ্গে তার ফের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। এমনকি সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর একসঙ্গে পার্টি করার প্ল্যানও হয়ে যায়।
অত্রি একা নয়, এরকম ঘটনা অনেকের সঙ্গেই হয়েছে। আর একেই করোনা মহামারীর সুফল বলে মনে করছেন মনোবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা। আসলে এই রোগের সঙ্গে যুঝতে একে অপরের সাহায্য দরকার। সেটা আজ অনেকেই বুঝেছেন। তাই পুরোনো রাগ, বিদ্বেষ, হিংসা ভুলে ফের দৃঢ় হয়েছে ভেঙে যাওয়া বন্ধুত্ব।
করোনা মহামারী মানুষকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, বন্ধুত্ব মানে শুধুই আনন্দ, আড্ডা, পার্টি আর ঘুরতে যাওয়া নয়। বন্ধুত্ব মানে একে অপরের বিপদে সাহায্য করা। আজ বন্ধু (কিংবা শত্রু)র বিপদে সাহায্য করলে কাল আমার বিপদেও অন্য কেউ সাহায্য করবে। এই মানসিকতা তৈরি করতে সাহায্য করেছে করোনা মহামারী।
অনেকেই আজকের প্রজন্মকে স্বার্থপর বলে দোষারোপ করেন। হয়তো তা কিছুটা সত্যিও বটে। কিন্তু সব দোষ তো আর বর্তমান প্রজন্মের নয়। অতীত থেকেই বর্তমান শিক্ষা নেয়। কিন্তু অতীত যখন বর্তমানকে শিক্ষা দিয়ে উঠতে পারে না তখনই হয়তো মহামারী বা তার মতো কোনও মারণ বিপদ সেই সব শিক্ষা দিয়ে দেয়। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। বিশ্বের নামী দামি বিশেষজ্ঞরা প্রকৃতির এই নিয়মে বিশ্বাস করেন।
তাছাড়া শুধু রোগে আক্রান্ত বলেই যে বন্ধুত্বের হাত এগিয়ে আসবে তা নয়, এই কঠিন সময় মানুষ একাকীত্বে ভুগতে শুরু করেছে। সঙ্গে দোসর প্রাণ সংশয়। তাই রাগ, ঘৃণা, দ্বেষ, হিংসাকে ভুলে সকলের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার প্রবণতা শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। তা সে পুরোনো বন্ধু হোক বা আত্মীয় কিংবা কোনও হিংসুটে শত্রু।
সমীক্ষা বলছে করোনা সংকটের সময় স্কুল-কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগের প্রবণতা অনেক বেড়েছে। আনফ্রেন্ড করে দেওয়া অনেককে ফের নিজের বন্ধুত্বর তালিকায় জায়গা দিতে শুরু করেছেন অনেকে। বেড়েছে ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সংখ্যাও। নিজেদের রোজনামচা নিয়ে হয়তো প্রতিদিন আলোচনা চলছে সেখানে।
“সুস্থ হয়ে গেলে আবার দেখা হবে,” এই মিমটি সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন বেশ জনপ্রিয়।
করোনা যেমন সকলের সবকিছু কেড়ে নিচ্ছে তেমনই অনেক পুরোনো সম্পর্কও ফিরিয়ে দিচ্ছে। বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করে তুলছে। হিংসাকে দূর করতে সাহায্য করছে। এত সব নেতিবাচক ঘটনার মধ্যে এটাই হয়তো একটা ছোট্টো আশার আলো।
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-04-30 16:43:37
Source link
Leave a Reply