হাইলাইটস
- সিঙ্গাপুর। আধুনিকযুগের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র।
- সিঙ্গাপুর নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটি কসমোপলিটন শহর।
- শহরের চারদিক ঝাঁ চকচকে। উঁচু উঁচু বিল্ডিং, নামী দামি শপিং মল, অত্যাধুনিক জীবনযাত্রার এক অসাধারণ উদাহরণ।
শহরের কৃত্রিম জীবনের আকর্ষণে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক ছুটে যান দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে। প্রায় চারদিক জলে ঘেরা এই দেশে ছুটি কাটাতে যাওয়া মানে কটা দিন বিন্দাসভাবে ঘুরে বেড়ানো। সেদেশের চিড়িয়াখানা, পার্ক, বোটানিক্যাল গার্ডেন হোক কিংবা নৌবিহার সবেতেই রয়েছে পারফেকশনের ছোঁয়া। আর রাতের সিঙ্গাপুর তো যেন মায়াবী নগরী। আনন্দ-ফূর্তি-উচ্চ্বাস-উত্তেজনার জন্য এই শহর যেন রাতের অপেক্ষাতেই দিন কাটায়। এক কথায় ইঁট-কাঠ-পাথরকে শিল্পের ছোঁয়া দিয়ে নিজের আকর্ষণ বাড়িয়েছে এই নামজাদা পর্যটককেন্দ্র। অনেকটা ঠিক পারফেক্ট মেক আপ করা আকর্ষণীয়া নায়িকার মতো।নাগরিক জীবন যাঁরা উপভোগ করেন তাঁরা সিঙ্গাপুরে ঘুরতে যেতে ভালোবাসেন বারবার। কিন্তু এই সিঙ্গাপুরই এবার নিজের রূপের টানে খানিকটা পরিবর্তন আনতে চলেছে। এবার আর ইঁট-কাঠ-পাথর-কাঁচের ঝাঁ চকলকচকে শহর নয়, সিঙ্গাপুর এবার তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়ে নাকি আকর্ষণ করতে চলেছে প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের।
অরণ্য নগরী
প্রকৃতি ধ্বংস করে যে নাগরিক জীবন স্থাপন করেছে মানুষ তাতেই হয়তো কিছুটা প্রলেপের চেষ্টা করঃস এই দেশ। দেশের একাংশকে ইকো-স্মার্ট সিটি তৈরি করার লক্ষ্য নিয়েছে সেদেশের সরকার। ইকো-স্মার্ট সিটির পোশাকী নাম হতে পারে ফরেস্ট টাউন বা অরণ্য নগরী।
প্রকৃতির নন্দনকানন
সিঙ্গাপুরের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত তেঙ্গাহ প্রদেশকেই আপাতত অরণ্য নগরী করার লক্ষ্য নেওয়া হযেছে। এটি মূলত সামরিক এলাকা। এখানে আগে কারখানা এবং সামরিক ঘাঁটির প্রয়োজনীয় হাব তৈরির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নিজেদের জীবনে প্রকৃতির প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত বদল হয়। সেই সিদ্ধান্তের ফলেই আর কিছুদিন এলাকাটি প্রকৃতির নন্দনকাননে পরিণত হবে।
শহরের মধ্যেই বন্যজীবন
তেঙ্গাহ প্রদেশকে একটি নির্দিষ্ট জেলা তৈরি করে সেখানে স্থাপন করা হবে ৪২ হাজার বাড়ি। বসানো হবে তার কয়েক গুণ গাছ। তৈরি হবে কৃত্রিম পাহাড়, ঝর্ণা, বন্যজীবন। পরিস্থিতি এতটাই স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলবে যে সেগুলিকে আর কৃত্রিম বলে মনে হবে না। এমনই আশা সেদেশের সরকারের।
গাড়িহীন শহর
অরণ্য নগরীতে কোনও গাড়ি চলাচল করবে না। ব্যক্তিগত যাতায়াত মাধ্যম হিসেবে সাইকেল ব্যবহার করা যাবে। আর গণমাধ্যম হিসেবে নির্দিষ্টি পরিবেশ বান্ধব বাসের ব্যবস্থা থাকবে। থাকবে না কোনও ট্র্যাফিক জ্যাম। মোট কথা শহরের কার্বনের প্রবেশ একরকম নিষেধ। প্রত্যেক মানুষের নিঃশ্বাসে প্রবেশ করবে তাজা অক্সিজেন। আধুনিকতার দিক দিয়ে গোটা বিশ্বের কাছে যেমন নজির সৃষ্টি করেছে সিঙ্গাপুর, তেমনই অরণ্য নগরী গড়ে আরণ্যক জীবনের প্রথিকৃত হতে চায় এই দেশ। শুধু নাগরিকদের জন্যি নয়, বিশুদ্ধ এবং দূষণমুক্ত পরিবেশ উপভোগ করবেন পর্যটকরাও। যদিও শহরের নিয়ম কানুন মানতে হবে তাঁদেরও।
প্রাকৃতিক এসি
রাস্তাঘাট হবে দূষণমুক্ত। গোটা শহরটিকেই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর সেটি রাখা হবে প্রাকৃতিক উপায়ে। কীভাবে? প্রচুর গাছ লাগিয়ে। শহরে গাছের সংখ্যা এতটাই বেশি হবে যে গরম কিংবা আর্দ্রতা কোনোটিই ছুঁতে পারবে না নাগরিক বা পর্যটকদের। পরিবেশ হবে ১০০ শতাংশ মনোরম। থাকবে সৌরবিদ্যুৎ।
সিঙ্গাপুর সরকারের দাবি অরণ্য নগরী তেঙ্গাহ হবে একবিংশ শতাব্দীর সেরা আবিষ্কার। ২০৩০ থেকে ২০৫০এর মধ্যে অরণ্য নগরী তৈরির কাজ শেষ হওয়ার কথা। আর তা যদি হয় তাহলে গোটা বিশ্বের পর্যটকরা যে এখানে ভিড় জমাতে পারেন সে আশা বা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তবে হ্যাঁ, পর্যটক টানতে নতুন শহর তৈরি করা হলেও শহরের পরিবেশকে একেবারেই নষ্ট হতে দেবে না সিঙ্গাপুর সরকার। প্রাকৃতিক পরিবেশকে এতটুকু আঘাত না করে যতটা জীবন যাপন করা সম্ভব ঠিক ততটাই করা হবে। তাই শহরের মধ্যেই আরণ্যক জীবন কাটাতে আপাতত অপেক্ষা করে রয়েছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-04-27 12:38:30
Source link
Leave a Reply