হাইলাইটস
- অতিমারীর কালে ওয়ার্ক ফ্রম হোম শব্দটির সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত।
- গত বছর করোনার প্রকোপ বাড়ায় অফিসগামী চাকরিজীবী, বিশেষত প্রাইভেট সেক্টরে কর্মরতদের জন্য ওয়ার্ক ফ্রম হোমই ছিল রুজি-রোজগারের শেষ উপায়।
- চলতি বছর ফের লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, কোনও কোনও রাজ্যে চলছে লকডাউন।
তাই বাড়িতে বসে কাজ করলেও, নিজের বাড়ির এক কোণকেই দিতে পারেন অফিসের লুক। ওই স্থানটিকেই বানিয়ে নিন নিজের ওয়ার্ক স্পেস। পুরনো আসবাব বা ফার্নিচার থাকলে সেগুলিকে নয়া মোড়কে মুড়িয়ে ব্যবহার করুন। ইমিউনিটি বুস্ট করার পাশাপাশি নিজের ক্রিয়েটিভিটি ও প্রোডাক্টিভিটিকেও বুস্ট করে নিন। এখানে এমন কিছু হোম অফিস আইডিয়া সম্পর্কে জানানো রইল, যা জানার পর আপনিও নিজেকে আটকে রাখতে পারবেন না।
শয়নকক্ষে রাখুন ছোট ডেস্ক
শয়নকক্ষ হোম অফিস বানানোর উপযুক্ত স্থান না-হলেও ছোট বাড়ি হলে এ ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। সে ক্ষেত্রে শয়নকক্ষে ছোটখাটো ডেস্ক রাখুন। ল্যাপটপ ও অন্যান্য অতিপ্রয়োজনীয় সামগ্রী যাতে সেই ডেস্কে রাখা যায় সে বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে ভুলবেন না। এর পাশে কোনও লম্বা ল্যাম্পশেড বা প্লান্ট রাখতে পারেন। সবুজ রঙ মনকে সতেজ করবে। দেওয়ালে টাঙাতে পারেন সাদা বোর্ড। ওই বোর্ডেই লিখে রাখুন নিজের টু-ডু লিস্ট।
অব্যবহৃত ক্লোসেটকে বানান নিজের ওয়ার্ক স্পেস
শয়নকক্ষে কোনও অব্যবহৃত ক্লোসেট বা দেওয়াল আলমারি থাকলে সেটিকেও নিজের অফিস স্পেস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। দেওয়াল আলমারির একটি র্যাকে রাখুন ল্যাপটপ। অপ্রয়োজনীয় র্যাকগুলি সরিয়ে দিন। বিশেষত পায়ের কাছের র্যাকগুলি। আবার ওপরের তাকে রাখতে পারেন নিজের প্রয়োজনীয় ফাইল। আপনার শয়নকক্ষ সাদা রঙের হলে হোম অফিসের রঙ করুন গাঢ় নীল।
দুটি ডেস্ক কী ভাবে রাখবেন
কর্মরত স্বামী-স্ত্রীকে ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে হলে দুটি ডেস্ক রাখাই বাঞ্ছনীয়। এতে কারও কাজে বাধা সৃষ্টি হবে না। এক্ষেত্রে আয়তাকার ডেস্ক রাখুন। চেয়ার রাখুন মুখোমুখি। তবে কাজে মনোনিবেশের বিষয়টি ভুলে গেলে চলবে না। এর জন্য ডেস্কের মাঝখানে লাগিয়ে দিতে পারেন নিজের পছন্দের রঙের পর্দা বা স্ক্রিন। এ ছাড়া ডেস্ক সামান্য বড় হলে মাঝখানে আধুনিক ধাচের ছোট একটি বুকশেল্ফও রাখতে পারে। নানান আকৃতির খোপ কাটা শেল্ফ আজকাল সহজেই কিনতে পাবেন। এর কোনও খোপে সাজিয়ে রাখুন নিজের পছন্দের বই, কোনও খোপে রাখুন ছোটখাটো আসল বা নকল গাছ। আবার কোথাও রাখতে পারেন নিজের ফ্যামিলি ফটো। কোনও একটি খোপ খালি ছেড়ে দিন। প্রয়োজনে সেখানে নিজের অসম্পূর্ণ কাজের ফাইল রাখতে পারবেন।
যতটা সম্ভব ব্যবহার করুন ভার্টিকাল স্পেস
ছোট বাড়ি হলে, সেখানে নিজের হোম অফিস গড়ে তোলা কিছুটা অসুবিধার, কিন্তু এক্কেবারেই অসম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে দেওয়ালের সঙ্গে লাগিয়ে ছোট্ট একটি ডেস্ক রাখুন। ২-৩টি ড্রয়ারওয়ালা ডেস্ক রাখলে সবচেয়ে ভালো। নিজের প্রয়োজনীয় ফাইল ও কাগজপত্র রাখতে পারবেন তাতে। এবার দেওয়ালে ওপর-নীচ করে রাখুন দুটি র্যাক। এর কোনও টিকে নিজের পছন্দের শোপিস দিয়ে সুন্দর করে সাজান। আবার কোনও টিতে রাখুন নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস বা পছন্দের বই। দেওয়ালে রাখুন হুক দেওয়া রড। এতেই টাঙিয়ে দিন ছোট্ট একটি কালো বা সাদা বোর্ড। অন্যান্য হুকে ঝুলিয়ে দিতে পারেন প্রয়োজনীয় অফিস অ্যাকসেসরিস। ডেস্কের এক কোণে রাখুন স্টাডি ল্যাম্প।
নিজের ওয়ার্ক স্টেশনকে করে তুলুন আরামদায়ক
বাড়িতে থেকেই দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে হলে নিজের হোম অফিসকে একটু কোজি লুক দিতেই পারেন। ওই স্থানটিকে এমন ভাবে সাজান যাতে সেখানে বসে কাজ করার ইচ্ছা ত্যাগই করতে না-পারেন। ডেস্কের ওপর রাখুন সুন্দর একটি ল্যাম্প। হালফিলের ফটোফ্রেম বা শোপিস তো রাখাই যায়। এ ছাড়াও মোমবাতি সাজিয়ে রাখুন এক কোণে। সঙ্গে রাখুন ছোট্ট গাছ বা ফুলের টব। বসার চেয়ারও হোক আরামদায়ক।
দাঁড়িয়ে কাজ করার সুযোগকেও কাজে লাগান
অনেকক্ষণ ধরে একটানা বসে কাজ করলে নানান স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে কাজ করার সুযোগকেই বা কেন হাত ছাড়া করবেন। এখন এমন অনেক পোর্টেবল স্টাডি ডেস্ক পাওয়া যায়, যার সাহায্যে বাড়ির যে কোনও অংশে বসে কাজ করতে পারবেন। নিজের হোম অফিস এরিয়ায় রাখতে পারেন এই ডেস্ক। বসে বসে কাজ করে ক্লান্ত হয়ে গেলে এগুলিকে পরিণত করে ফেলুন স্ট্যান্ডিং ডেস্কে। নিজের দৈর্ঘ্যের সঙ্গে মানানসই উচ্চতায় দাঁড় করিয়ে এই ডেস্কে কাজ করতে পারবেন। এর ফলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন এবং রক্তচাপও স্বাভাবিক থাকবে।
প্রকৃতির মনোরম দৃশ্যে সতেজ হবে মন
বাড়ির সামনে বাগান থাকলে, সেটিকেও কাজে লাগাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বাড়ির যে ঘর থেকে বাগান দেখা যায় সেখানে কাঁচের জানালার সামনে নিজের ডেস্ক রাখুন। ভোরের মনোরম আলো পড়তে দিন ডেস্কে। এমন ভাবে ডেস্কটি রাখুন, যাতে মুখ ঘোরালে বা চোখ তুললেই দেখতে পান বাইরের সবুজের সমাহার। এ ক্ষেত্রে জানালায় কোনও ভারি পর্দা রাখবেন না।
আবার বাগান না-থাকলেও, নো টেনশন। সবুজের মাঝে কাজ করার আরও উপায় আছে। এ ক্ষেত্রে বাড়ির একটি ঘর বা দেওয়ালে রট আয়রনের খোপ কাটা শেল্ফ রাখুন। এই শেল্ফে রাখতে পারেন নিজের পছন্দের ফুলের গাছ। আবার সবুজ রঙের পাতা যুক্ত গাছও রাখা যায়। রট আয়রনের রডের সঙ্গে জড়িয়ে দিতে পারেন লাতা পাতা। এই শেল্ফের সামনে রাখুন নিজের অফিস ডেস্ক। আবার শেল্ফটিকে ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। তবে ঠাঁসাঠাঁসি করে গাছের টব বা লতাপাতা রাখবেন না। কিছু কিছু স্থানে ফাঁকা রাখুন। কয়েকটি সবুজ টবের ধারে বা মাঝে রাখুন সাদা বা অন্য কোনও হাল্কা রঙের শোপিস। সাদা মলাটের বইও রাখা যায় এখানে।
হোম অফিসের একটি অংশে ব্যবহার করুন বোল্ড রঙ
আপনার হোম অফিসে বসে কাজ করতে করতে যাতে ঝিমুনি না-ধরে যায় সে বিষয়ও লক্ষ্য রাখুন। এর জন্য ডেস্ক সংলগ্ন দেওয়ালের একটি অংশে বোল্ড কালার করুন। বাকি অংশ নিউট্রাল ছেড়ে দিন। বাড়ির অকেজো খালি পড়ে থাকা অংশেও নিজের অফিস স্পেস বানিয়ে একটি জল্ট লুক দিতে পারেন। আবার কলাপ্রেমী হলে লাগাতে পারেন একটি স্টেটমেন্ট পেন্টিং।
কালারফুল অ্যাকসেসরিজ ব্যবহার করুন
চনমনে মনের মানুষ হলে গম্ভীর পরিবেশ আপনার পছন্দ হবে না। তাই নিজের হোম অফিস স্পেসকে মুড়িয়ে দিন নানান রঙে। অ্যাকসেসরিজও রাখুন রঙীন। নীল, গোলাপী, হলুদ রঙ খেলা করুক আপনার মনে। এ ধরণের রঙে মন হাল্কা তো হবেই, পাশাপাশি বাড়বে আপনার ক্রিয়েটিভিটিও।
কর্ক দেওয়াল বানাতে পারেন
নিজের হোম অফিস ডেস্কের পাশের দেওয়ালটিকে কর্ক দেওয়ালে পরিণত করতে পারেন। এই দেওয়ালেই পিন করে রাখতে পারেন নিজের টু-ডু লিস্ট, ক্যালেন্ডার ইত্যাদি।
দেওয়ালে বানান গ্যালারি
নিজের ডেস্কের পিছনের দেওয়ালটিতে পছন্দের ছবি দিয়ে গ্যালারি তৈরি করতে পারেন। সাদা দেওয়ালের ওপর এই গ্যালারি তৈরি করা যেতে পারে। আবার দেওয়ালটিকে চেক প্রিন্টের ওয়াল পেপারে মুড়িয়ে সেখানেও বানাতে পারেন গ্যালারি।
গতে বাধা আয়তাকৃতি ডেস্ককে বলুন বিগ নো
আয়তাকৃতি ডেস্কের পরিবর্তে নয়া ধরনের ডেস্ক রাখুন নিজের কাজের জন্য। এ ক্ষেত্রে দেওয়ালের সঙ্গে লাগিয়ে রাখুন অর্ধবৃত্তাকার ডেস্ক। তার সামনে একটি ফ্রেম করা বুলেটিন বোর্ড লাগান।
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-04-22 15:32:06
Source link
Leave a Reply