হাইলাইটস
- কিছু সময় অন্তর অন্তর ডায়পার চেঞ্জ করুন।
- ময়শ্চারের মধ্যে শিশুদের বেশিক্ষণ যাতে থাকতে না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করুন।
- ত্বকের সুস্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত হাইজিন মেনে চলা জরুরি।
ডায়পার র্যাশ কেন হয়
অতিরিক্ত ময়শ্চার, দীর্ঘ সময় ধরে ইউরিনের সংস্পর্শে থাকার কারণে র্যাশ দেখা যায়। ফলে ডায়পার পরিহিত স্থানে জ্বালা শুরু হয়।
ডায়পার র্যাশের ধরণ
১. ইরিটেন্ট কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস সবচেয়ে সাধারণ ডায়পার র্যাশ। ডায়পারে কোনও উপাদান বা কোনও কোনও ক্ষেত্রে ডায়পারের কারণে ত্বক জ্বালা করে।
২. ইস্ট ইনফেকশানের কারণেও ডায়পার র্যাশ দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে ত্বক ও ডায়পার পরিহিত স্থানে ফাঙ্গাসের উপস্থিতি থেকে এমনটি হয়। তবে এই ফাঙ্গির পরিমাণ অত্যধিক হারে বেড়ে গেলে কষ্টকর ডায়পার র্যাশ দেখা দেয়, একে বলা হয় ক্যান্ডিডিয়াসিস অথবা ইস্ট ইনফেকশান।
৩. আবার ব্যক্টিরিয়ার কারণেও ত্বকে ইনফেকশান হতে পারে। অত্যন্ত সংবেদনশীল শিশুর ত্বকের কারণে অথবা অধিক সময় ধরে প্রস্রাব বা মলের সংস্পর্শে থাকলে, সংশ্লিষ্ট স্থানে ঘা হয়ে যায় এবং লাল হয়ে যেতে পারে। নবজাতক বা শিশুদের ত্বকের অপরিপক্বতা এই ইনফেকশানের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়। নয় থেকে বারো মাস বয়সে এই ধরণের সংক্রমণের আশঙ্কা সর্বাধিক।
৫০ শতাংশ শিশুদের মধ্যে ডায়পার ডার্মাটাইটিস দেখা দেয়। জন্মের প্রথম বছরে ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে র্যাশের কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হয়। এই সমস্যার লক্ষণ হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে শিশু বার বার মল ত্যাগ করে, এমনকি স্টুলে পরিবর্তনও পরিলক্ষিত হয়। দুদিন পর থেকে ডায়পার পরে থাকা অংশের ত্বক লাল হয়ে উঠতে শুরু করে।
কী ভাবে সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন?
কিছু সময় অন্তর অন্তর ডায়পার চেঞ্জ করুন। ময়শ্চারের মধ্যে শিশুদের বেশিক্ষণ যাতে থাকতে না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করুন। ত্বকের সুস্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত হাইজিন মেনে চলা জরুরি। প্রস্রাব বা অন্য কোনও কারণে সৃষ্ট র্যাশের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে বার বার ডায়পার পাল্টে ফেলা একটি ভালো উপায়। এমনকি প্রয়োজন না-পড়লে শিশুকে ডায়পার ছাড়াই রাখুন। এই ডায়পার ফ্রি সময় র্যাশের সম্ভাবনাকে অনেকাংশে কমিয়ে দেবে। জঙ্ঘার ভাঁজ, নিতম্ব নিয়মিত পরিষ্কার করা উচিত। তবে কখনওই ঘষে পরিষ্কার করবেন না। কারণ এর ফলে ত্বক আরও বেশি জ্বালা করবে। পরিষ্কারের পর ত্বককে খোলা হাওয়ায় থাকতে দিন। সম্ভব হলে বেশ কয়েক ঘণ্টা ডায়পার পরাবেন না।
নন-ইরিটেন্ট ক্লিনজিং সাবান ও জল দিয়ে জঙ্ঘা, নিতম্ব ভালো করে ধুয়ে নিন। এ ক্ষেত্রে ওযেট ওয়াইপস ব্যবহার সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন সামনে এসেছে। সাম্প্রতিক কালে প্রাপ্ত নানা তথ্য প্রমাণ ইঙ্গিত করছে যে, ওয়েট ওয়াইপসের ব্যবহারের কারণে র্যাশের সমস্যা দেখা দেয় না। হালফিলের ওয়েট ওয়াইপসে পিএইচ বাফার থাকে। এটি ইউরিনের অ্যালকালাইন পিএইচের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি করে ত্বক ক্ষতি হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। শিশুদের ডায়পার র্যাশের সমস্যা দেখা গেলে প্রভাবিত অংশটিকে সুগন্ধী বিহীন সাবান ও জল দিয়ে ধোয়া উচিত। একটি ওয়াইপ বা তুলো দিয়ে এক স্ট্রোকে প্রভাবিত অংশ পরিষ্কার করুন। প্রতিবার পরিষ্কার করার জন্য নতুন ওয়াইপ বা তুলোর বল ব্যবহার করতে হবে।
আবার নতুন ডায়পার পরানোর সময় লক্ষ্য রাখবেন, এটি যাতে খুব বেশি টাইট বা ঢিলে না-থাকে। হাওয়া যাতায়াতের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে ভুলবেন না।
র্যাশ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা করার জন্য প্রাসঙ্গিক মলম বা প্রলেপ ব্যবহার করুন। এটি ত্বক ও ডায়পারের মধ্যে এটি সুরক্ষাকবচ গড়ে তোলে। যার ফলে ত্বকের জ্বালা তো কমবেই, পাশাপাশি ত্বকের ওভার হাইড্রেশনের সমস্যার ক্ষেত্রেও প্রতিরোধ গড়ে উঠবে। শিশুর ত্বক পরিষ্কার করার জন্য সর্বদা সুগন্ধী বিহীন সাবান ব্যবহার করুন। প্রতি বার ডায়পার পরানোর সময় পুরু করে মলম লাগাতে ভুলবেন না।
ক্যানডিডা ডায়পার ডার্মাটাইটিসের চিকিৎসা করার জন্য অ্যান্টিফাঙ্গাল ব্যবহার করা উচিত। ডায়পার পাল্টানোর সময় অ্যান্টি ফাঙ্গাল ক্রিম লাগিয়ে দিন।
র্যাশে ব্লিস্টার অথবা বয়েল, পাস বা ডিসচার্জ দেখা গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
নারকেল তেল, ইপসম সল্ট বাথ, অ্যালোভেরার মতো ঘরোয়া উপায়েও র্যাশের চিকিৎসা করা যায়।
ডায়পার র্যাশের চিকিৎসায় যে বিষয়গুলি লক্ষ্য রাখবেন
১. বায়ুর যাতায়াত স্বাভাবিক রাখতে কিছুক্ষণ ডায়পার ছাড়া রাখুন।
২. ত্বকের সুরক্ষার জন্য মলম ব্যবহার করুন।
৩. ত্বক পরিষ্কার রাখুন।
৪. র্যাশ দেখা গেলে কাপড়ের ডায়পারের পরিবর্তে ডিসপোজেবল ডায়পার ব্যবহার করুন।
৫. ডায়পার র্যাশ কী ভাবে আটকাবেন সে বিষয় জ্ঞান অর্জন করুন।
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-04-19 15:49:32
Source link
Leave a Reply