পরামর্শ দিয়েছেন
ডা· মাহবুব মোতানাব্বি
নবজাতক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
সহকারী অধ্যাপক,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
সমস্যাঃ আমার ছেলের বয়স ১৩ মাস। এ বছর এপ্রিল মাস থেকে ওর একটি সমস্যা শুরু হয়েছে। আর তা হলো ঠান্ডা লাগা। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও ওর নাকে সর্দি লেগে আছে প্রায় এক মাস ধরে। মাঝেমধ্যে সর্দি গলে পড়ে আবার কখনো শক্ত হয়ে নাকের মধ্যেই আটকে থাকে। এমনিতে খাওয়াদাওয়ায় ওর কোনো অরুচি নেই। বুকের দুধের পাশাপাশি স্বাভাবিক খাবার, অর্থাৎ খিচুড়ি, ভাত প্রভৃতি খাচ্ছে ছয় মাস বয়সের পর থেকে। কিন্তু ঠান্ডা লাগার সমস্যাটা কমছে না। মাঝেমধ্যে কিছুটা শ্বাসকষ্টের মতো হয়। তখন ও বেশ কান্নাকাটি করে। সে সময় খাওয়াদাওয়া করতে চায় না। জোর করে খাওয়াতে গেলে অল্প একটু খেয়ে বাকিটা ফেলে দেয়। আমরা এ বিষয়ে অন্য কারও পরামর্শ নিইনি।
রিনি সরকার
ভালুকা, ময়মনসিংহ।
পরামর্শঃ আপনার ছেলের সম্ভবত অ্যালার্জিজনিত সমস্যা হয়েছে। পরিবার বা বংশের অন্য কারও এ রকম প্রবণতা আছে কি না তা আপনি উল্লেখ করেননি। কোনো বিশেষ খাবার বা আবহাওয়া পরিবর্তন অথবা অনেক সময় ধুলাবালি বা ফুলের রেণু নাকে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সমস্যা দেখা দেয়। আপনি খুঁজে দেখুন তার সর্দি বা শ্বাসকষ্টের সঙ্গে এ রকম কোনো বিষয়ে সম্পর্ক আছে কি না। তাহলে সেটি বর্জন করতে হবে। পশুপাখি (বিশেষ করে এদের পশম) এবং ছাইয়ের গাদার সংস্পর্শে যাতে শিশু না যায়। সব সময় সর্দি থাকলে ন্যাক্রোমিন সোডিয়াম ক্রোমোগ্লাইস্টে ন্যাক্রোমিন নাকের ড্রপ একটানা ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে শক্ত সর্দি আটকে থাকলে কটনবাড দিয়ে পরিষ্কার করে নরমাল স্যালাইন নাকে দিতে হবে। সাধারণ শ্বাসকষ্টে সালবুটামল-জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যায়। তবে বেশি শ্বাসকষ্ট হলে ওষুধ নেবুলাইজারের মাধ্যমে দিতে হবে। সাধারণ অবস্থায় স্পেসার-সহকারে ইনহেলার ব্যবহার করা যায়। তবে পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থাপনার জন্য আরও কিছু বিষয় জানা দরকার। যেমন-শ্বাসকষ্ট কত দিন পর পর হয়, কতক্ষণ থাকে, রাতে না দিনে বেশি, এতে রাতের ঘুমের ব্যাঘাত হয় কি না, সঙ্গে জ্বর বা হলুদ রঙের কফ থাকে কি না।
টিপস
— ঠান্ডা, ধুলাবালি, পশুপাখির পশম ও সংবেদনশীল খাবার থেকে বাচ্চাদের সাবধানে রাখবেন।
— বিশেষত ঠান্ডা ও গরমের পরিবর্তনের সময় সতর্ক থাকতে হবে।
— সব খাবার সবার বাছাই করার দরকার নেই। কোনো খাবারে সমস্যা ধরা পড়লে সেটা বাদ দিতে হবে।
— শ্বাসকষ্ট বা অ্যালার্জিজনিত সর্দির জন্য চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি। তবে ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নিলে শিশুরা বড় হতে হতে এসব সমস্যা প্রায় পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ১৬, ২০০৮
Leave a Reply