ঈদের খুশি সবচেয়ে বেশি ছোট ছেলেমেয়েদের। নতুন জামাকাপড় ও জুতার সঙ্গে চুলের নতুন সাজও দিতে চায় তারা। বাচ্চাদের চুলের স্টাইলে তাকে সবার মাঝে আরও সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে —বললেন হেয়ারোবিক্স হেড অব অপারেশনস তানজিমা শারমীন। তিনি বলেন, অনেকেই মনে করতে পারেন, ছোট ছেলেমেয়েদের আবার হেয়ারস্টাইল থাকতে হবে কেন। আসলে বাচ্চাদের হেয়ারস্টাইল বলতে সহজ ও সুন্দর হেয়ার কাটকে বোঝায়, যা তাদের আরও সুন্দর করে তোলে। ছেলে বা মেয়ে যে-ই হোক, একটা বয়স পর্যন্ত তাদের মধ্যে শিশুসুলভ দুরন্তপনা কাজ করে। সারা দিন দুরন্তপনার পরও তাদের চুলগুলো যেন স্বাভাবিক দেখায়, সেই হেয়ারস্টাইল তাকে নিতে হবে।
ছোট ছেলেমেয়েদের অনেক রকম হেয়ারস্টাইল করা যায়।
তানজিমা শারমীন বলেন, ছোট ছেলেমেয়েদের বয়স ১২ বছর না হওয়া পর্যন্ত তার সঙ্গে মানায়—এ রকম হেয়ারস্টাইল দেওয়া উচিত। এরপর বাচ্চা একটু বড় হলে নিজেরাই পছন্দের কোনো স্টাইল নিতে চাইবে। সে ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের উৎকণ্ঠিত হওয়ার কিছু নেই। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, তাঁদের বাচ্চার নেওয়া হেয়ারস্টাইলটি যেন উগ্র না দেখায়।
ঈদের সময় বেশির ভাগ ছোট ছেলেমেয়ে কোনো অনুষ্ঠানে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকার চেয়ে সমবয়সীদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে ভালোবাসে। খেলাধুলা করতে গেলে চুল পরিপাটি রাখা সম্ভব নয়। তাই ঈদের সময় কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে বাচ্চাদের চুলের পেছনে কিছুটা সময় দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে বাচ্চার চুল লম্বায় ছোট হলে অভিভাবকদের ঝামেলায় কম পড়তে হয়।
এ ছাড়া ঈদের সময় কোনো পার্টি বা অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে ছেলে-বাচ্চাদের চুল সহজেই তৈরি করে দেওয়া যায়। কিন্তু মেয়ে হলে তার চুল আঁচড়াতে বা বাঁধতে একটু সময় বেশি নিতে হয়।
যদি বাচ্চা-ছেলেটি বা মেয়েটি খুব দুরন্ত হয়, তাহলে ছোট চুল রাখাই ভালো। যেমন—ছোটদের ক্রু কাট, বাজ কাট, স্পাইক আর মেয়েদের জন্য ববকাট, ডায়না কাট, পিক্সি। আবার বাচ্চা-মেয়েটি যদি শান্ত বা পড়ুয়া টাইপের হয়, তাহলে ট্যাপার কাট। স্লাইট সুইপ কাট অথবা কানের দুই পাশে ও কপালের চুলগুলো অপেক্ষাকৃত বড় রেখে সামনের দিকে আঁচড়িয়ে রাখলে ভালো মানাবে। বাচ্চা-মেয়েটি শান্ত হলে তার জন্য বড় চুলের অসংখ্য স্টাইল রয়েছে। যেমন—আন্ডার কাট ফ্রিঞ্জ উইথ লেয়ারস, লেয়ার ইন শট লেংথ, শ্যাগি, ওয়েজ ও বব মিক্সড, চায়নিজ লেয়ার, ইনভার্টেড ক্লান্ট, ইতালিয়ান ওয়েজ, ইমো। তবে হেয়ারস্টাইলটি অবশ্যই পছন্দ করার আগে বাচ্চা-মেয়েটির চেহারার গঠন, চুলের ধরন, ব্যক্তিত্ব—সবকিছুর ওপর নির্ভর করে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, কোন স্টাইলটি বাচ্চা ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বেশি মানায়, তা দেখতে হবে।
বাবা-মায়ের জন্য কিছু পরামর্শ
বাচ্চা মেয়েদের চুল খুব সাধারণভাবে বেঁধে অথবা ছেড়ে রাখুন।
বাচ্চাদের চুল প্রতিদিন ভালো করে ধুয়ে রাখতে হবে এবং শুকানোর পর আঁচড়াতে হবে।
বাচ্চাদের শেখাতে হবে, কীভাবে চুলের যত্ন নিতে হবে।
বাচ্চাদের চেহারা সব সময় কোমল থাকে, তাই যেকোনো হেয়ারস্টাইল তাদের সুন্দর দেখাবে। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, স্টাইল তার জন্য আরামদায়ক হচ্ছে কি না।
স্কুলে কোনো সমস্যা না হয়, সেটি খেয়াল রাখতে হবে।
বাদল খান
মডেল: সুদীপ্ত ও কঙ্কাবতী
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ১৭, ২০১০
Leave a Reply