কনকনে ঠান্ডার দিনে শুধু গরম পোশাকে শীত মানে না। যদি একটু বাড়তি উষ্ণতা পাওয়া যায় তবে তো ভালোই। আর শীতকালে পানির ব্যবহার আরেক দুশ্চিন্তার বিষয়। একে তো শীত, তার ওপর বরফশীতল পানি। যাদের ঠান্ডা পানি ব্যবহারে সমস্যা, তাদের জন্য শীতকাল এক ভোগান্তির নাম। তবে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। এখন বাজারে খুব সহজেই নানা রকম যন্ত্রপাতি। এসব যন্ত্রের ব্যবহারে অনেকটাই সামাল দেওয়া যাবে শীত। এ প্রতিবেদনে থাকছে তারই কিছুর খোঁজখবর।
বৈদ্যুতিক কেটলি
এই তীব্র শীতে পানি ছোঁয়ার কথা মনে হলেই যেন গা কাঁটা দিয়ে ওঠে। তা ছাড়া এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের ঠান্ডা পানিতে সমস্যা হয়। এ ছাড়া বসতবাড়িতে দৈনন্দিন নানা কাজে সারাক্ষণ পানি ব্যবহার করতে হয়। ঠান্ডা পানির অধিক ব্যবহার কাশিসহ নানা রোগের কারণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সমাধান হতে পারে বৈদ্যুতিক কেটলি। এই বৈদ্যুতিক কেটলিগুলোর সাহায্যে খুব অল্প সময়ে পানি গরম করা যায়। শীতকালে চায়ের আড্ডাটাও খুব সহজে জমিয়ে তোলা যায় এ যন্ত্রের সাহায্যে। কারওয়ান বাজারের ট্রান্সকম ডিজিটালের ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান বলেন, ঠান্ডা পানি যাদের জন্য ক্ষতিকর, তাদের জন্য এসব বৈদ্যুতিক কেটলি দারুণ সহায়ক। এ ছাড়া সুস্থ মানুষও এ যন্ত্র ব্যবহার করে নিজেকে ঠান্ডা লাগানো থেকে রক্ষা করতে পারে। এসব বৈদ্যুতিক কেটলির দাম নির্ভর করে ধারণক্ষমতা কত, এর ওপর। এর মধ্যে ফিলিপাইনের এক লিটারের বৈদ্যুতিক কেটলির দাম দুই হাজার ৫০০ টাকা। এক দশমিক পাঁচ লিটারের দাম দুই হাজার ৮৫০ টাকা, আরও একটু ভালো মানের এক দশমিক পাঁচ লিটারের দাম পড়বে সাত হাজার ৪০০ টাকা। সিঙ্গারের এক লিটার কেটলি পাওয়া যাবে ৬৫০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া মিয়াকো বৈদ্যুতিক কেটলি চার দশমিক এক লিটার তিন হাজার ৫০০ টাকা, এক দশমিক পাঁচ লিটার দুই হাজার ৭০০ টাকা দাম পড়বে।
কক্ষ উষ্ণ রাখার যন্ত্র
কনকনে ঠান্ডা যেন শীতের পোশাককেও হার মানায়। কক্ষের ভেতর থাকার পরও ঠান্ডা লাগে। এসব ক্ষেত্রে কক্ষ উষ্ণ রাখার যন্ত্র রয়েছে। এসব যন্ত্রের মধ্যে সিমেন্স এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার ২০০, এয়ারমেট দুই হাজার থেকে তিন হাজার, নোভা এক হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। তবে বাজারভেদে দামের কিছুটা হেরফের হতে পারে।
পানি গরম করার যন্ত্র
শীতে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার কথা মনে হলে গায়ে কাঁটা দেয়। একটু গরমপানি দিয়ে গোসলটা সারতে পারলেই ভালো হতো, এমনটা মনে হয়। কিন্তু আলাদাভাবে পানি গরম করার ঝক্কিঝামেলা অনেকেই পোহাতে চায় না। এটি সহজ করে দেয় বৈদ্যুতিক গিজার। পানি গরম করার কাজে এটি দারুণ সহায়ক—বললেন স্টেডিয়াম-মার্কেটের গিজার বিক্রেতা আল আমিন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য আমদানি করে থাকে। সিঙ্গারের ১০ গ্যালন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এসব যন্ত্রের দাম পড়বে পাঁচ হাজার ৮০০ থেকে ছয় হাজার টাকা। ১৫ গ্যালনের দাম পড়বে ছয় হাজার ৮০০ থেকে সাত হাজার টাকা। ২০ গ্যালনের দাম পড়বে আট হাজার থেকে আট হাজার ২০০ টাকা। এসব যন্ত্র স্থাপন করার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হবে। তবে বাড়ি নির্মাণের সময় এমন যন্ত্র স্থাপন করে নেওয়াই ভালো। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনমতো ফরমায়েশ দিয়ে গিজার তৈরি করে নেওয়া যাবে।
যেখানে মিলবে
ফিলিপস, সিঙ্গারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রদর্শনী ও বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে এসব পণ্য পাওয়া যাবে। এ ছাড়া রাজধানীর স্টেডিয়াম মার্কেট, নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটিতেও খুব সহজেই মিলবে এসব যন্ত্র। এসব পণ্যের ব্যবহার যেমন আপনাকে শীত থেকে দূরে রাখবে, তেমনি শীত উপভোগ্য করে তুলতে সহায়তা করবে।
মোছাব্বের হোসেন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১২, ২০১০
Leave a Reply