ধানমন্ডির দৃক গ্যালারির তৃতীয় তলার পরিবেশটা যেন অন্য রকম। সেখানে মাঠের দিকে যত দূর দৃষ্টি যায়, শুধু কাশফুল আর কাশফুল। কোথাও বা জলের মধ্যে কচুরিপানা হেলেদুলে বেড়াচ্ছে, আর ঠিক তার পাশেই আধডোবা কাশের বনে ফুটে আছে অজস্র ফুল। পুরো দৃক গ্যালারির দেয়ালজুড়ে এ রকম নানা রঙের কাশফুলের ছবি সাঁটানো। আলোকচিত্রী এ এস এম বুলবুলের ‘অন্য কাশ’ শীর্ষক এই একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয় ৯ অক্টোবর। উদ্বোধন করেন সমকাল পত্রিকার সম্পাদক গোলাম সারওয়ার। প্রদর্শনী চলে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত।
প্রদর্শনীকক্ষে ঢুকতেই চোখে পড়ে সত্যিকারের কাশফুলের পাপড়ি উড়ে উড়ে খেলা করে বেড়াচ্ছে হল রুম জুড়ে। কখনো বা পাপড়িগুলো পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে দর্শকদের গায়ে। একটু পরেই চোখ পড়ে রং-বেরঙের নানা জাতের কাশফুলের দিকে। কোনোটা দেখতে একদম লাল রঙের, কোনোটা সোনালি, কোনোটার আবার বাতাসে ফুল উড়ে গিয়ে শুধু শীষটাই পড়ে আছে। আরেকটু এগোতেই চোখে পড়বে কাশফুলের সঙ্গে কী নিবিড় মায়ায় জড়িয়ে আছে কুমড়োফুলের লতানো গাছটা। এই প্রদর্শনী কক্ষের ছবিগুলো না দেখলে হয়তো বোঝাই যেত না যে কাশফুলের এত রং আর এত জাত থাকতে পারে। আলোকচিত্রী এ এস এম বুলবুল বলেন, ‘কাশফুল হচ্ছে শরতের আগমনের প্রতীক। এর যে একটা নান্দনিক দিক আছে তা এই ছবিগুলোর মাধ্যমেই আমি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। কাশফুল যে শুধু সাদা রঙের নয় তা বিভিন্ন রঙের ও বিভিন্ন জাতের—সে বিষয়টিও আমি এখানে দেখাতে চেয়েছি। প্রদর্শনীতে মোট ৩৭টি ছবি স্থান পেয়েছে; যার পুরো টাকাটাই আমি ক্যানসারে আক্রান্ত নয় বছরের এক শিশুর চিকিত্সায় ব্যয় করতে চাই।’
প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া ছবির মধ্যে ছোটগুলো ছয় হাজার টাকা আর বড় ছবিগুলো ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, অক্টোবর ২০, ২০০৯
Leave a Reply