ঘন সবুজ সুন্দরবন। তেড়ে আসছে বাঘ। সামনে এগোতেই দেখি পাহাড়ের বুক চিরে নামছে পাহাড়ি ঝরনা, দূরে পাখিদের আনাগোনা। এসব আসলে ক্যামেরায় ধারণ করা একটি পর্যটনমেলার ছবি। পর্যটক ও প্রকৃতিপ্রেমীদের অপূর্ব এক মিলনক্ষেত্র যেন পর্যটন মেলা। ভ্রমণ সম্পর্কিত নানা তথ্যে ভরপুর এ মেলায় তাই ভ্রমণপিপাসুদের ভিড় লেগেই থাকে। আসছে শীত মৌসুম সামনে রেখে ১২ থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত শিল্পকলা একাডেমী প্লাজা সেন্টারে হয়ে গেল তৃতীয় ঢাকা ট্যুরিজম ফেয়ার-২০০৯। এ মেলাটি আয়োজন করেছে মাসিক পত্রিকা পর্যটন বিচিত্রা। এবারের এ মেলার ্লোগান ছিল ‘দেশের মানুষকে দেশ দেখানো’। এর উদ্বোধন করেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জি এম কাদের। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প উন্নয়নে দেশীয় পর্যটন মেলা অত্যন্ত টেকসই ভূমিকা রাখে, তাই আমি এর আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।
শুরুর প্রথম দিন থেকেই ভ্রমণপ্রেমী মানুষের পদচারণে মুখরিত ছিল পুরো মেলাপ্রাঙ্গণ। মেলাটিতে মোট ৭৫টি স্টলে এয়ার লাইনস, হোটেল, রিসোর্ট, ইয়ুথ অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব, ট্যুর অপারেটরসহ ভ্রমণ ও বিনোদনের আরও অনেক প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বাংলাদেশের নানা আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় স্থানের বিভিন্ন পর্যটন সেবার নানা দিক নিয়ে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই ছিল বিশেষ তথ্যসেবা। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দর্শনীয় জায়গার নানা খোঁজ-খবরেও ভরপুর ছিল এ মেলায়। মেলায় বিভিন্ন হোটেল বা প্যাকেজ বুকিংয়ের ক্ষেত্রেও ছিল বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা। মেলার একপ্রান্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা সুন্দরবনের পক্ষে ভোট গ্রহণ ও প্রচারণা চালিয়েছেন। মেলা দেখতে এসেছেন দেলওয়ার রমিচ। পেশায় আইনজীবী হলেও ভ্রমণের নেশা তাঁর। তিনি জানালেন, এ ধরনের পর্যটন মেলায় এলে বিভিন্ন স্থান সম্পর্কে অনেক তথ্য ও ধারণা পাওয়া যায়। অনেক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ থাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্যাকেজ সুবিধামতো বেছে নেওয়া যায়, তাই কখনোই এসব মেলায় আসা বাদ পড়ে না। এ মেলার প্রধান সমন্বয়ক ও পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক মহিউদ্দিন হেলাল জানালেন, দেশের মানুষকে দেশ দেখানোর লক্ষ্যে আমরা তৃতীয়বারের মতো দেশীয় পর্যটন মেলার আয়োজন করেছি। আশা করি এমন মেলার মধ্য দিয়ে মানুষ আরও ভ্রমণপ্রিয় হয়ে উঠবে, দেশকে ভালোভাবে দেখার ও জানার সুযোগ পাবে, দেশের পর্যটনশিল্প আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। মেলার আয়োজকেরা জানান, প্রতিবছরই তাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
একে একে সব স্টল ঘুরে বেরিয়ে আসি মেলা থেকে। আর দেশের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো ঘুরে দেখার নেশায় যেন বিভোর হয়ে যাই।
মোছাব্বের রিবন
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ১৮, ২০০৯
Leave a Reply