টবে গাছ লাগানো শখ কমবেশী সবারই আছে। কিন্তু ভাড়া বাড়িতে থেকে এই শহরের ব্যস্ততায় এমন শখ অনেকেই পুরোপুরি মিটিয়ে উঠতে পারেন না। তবে যাদের সুযোগ আছে তারা কিন্তু হরহামেশাই টবে দুএকটা ফুল গাছে চারা বুনে থাকেন। কিন্তু এই বর্ষাকালে কেমন হয় যদি আপনার আঙ্গিনাতেই সাজে পদ্ম কিংবা শাপলা? একটু ছোট জলাধার হলেই সহজেই পারেন এই স্বপ্ন পূরণ করতে।
পদ্ম
আষাঢ়ে পদ্ম দেখতে কার না ভাল লাগে। বিশাল দীঘি জুড়ে পদ্মের শোভা চোখ জুড়িয়ে দেয়। এমন পদ্ম চাইলে আপনি আপনার বাড়ির আঙ্গিনায়ও ফোটাতে পারেন। বড় গামলাতে এই পদ্মের চারা লাগানো যেতে পারে। কিন্তু এর জন্য ১ বর্গমিটার আয়তনের ও ৬০ থেকে ৯০ সেমি গভীর সিমেন্টের চৌবাচ্চা করলে ভাল হয়। বাগানো, বাড়ির ছাদে এমনকি বারান্দাতেও এই আয়োজন করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন যেখানেই করুন, সেখানে যেন রোদ পড়ে। ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত গভীর সার যুক্ত মাটি দিয়ে তারপর গাছের মূল বসাতে হবে। তবে এই চারা রোপন প্রক্রিয়া কিন্তু বর্ষায় করলে চলবে না। বর্ষায় কেবল ফুলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর মূল রোপন করতে হবে বসন্ত কিংবা গ্রীষ্মে। মাটিতে গোড়া ভিজিয়ে রাখুন ৪ সপ্তাহ। পাতা গজাতে শুরু করলে সার সহ মাটিতে আস্তে আস্তে পানি ঢেলে চৌবাচ্চা ভরে দিন। গামলা বা চৌবাচ্চায় বসন্তে শেকড়ে ভরে গেলে কেটে অর্ধেক করে দিন। ফুলের পাপড়ি ঝড়ে গেলে বোটাটি কেটে ফেলুন।
শাপলা
আমাদের জাতীয় ফুল শাপলাও আপনার বাড়ির বারান্দায় রাখা ছোট্ট জলাধারে ফোটানো সম্ভব। যেহেতু দুটি ফুলই এক গোত্রের তাই এটার চাষ পদ্ধতিও একই রকম। শাপলা চারা লাগানো সময় খেয়াল রাখুন ঠিক কোন ধরনের শাপলার জন্য আপনি বীজ বুনছেন। এখান বাংলাদেশে নানান ধরনের শাপলা ফোটে। কোনটা গোলাপি রাঙ্গা আবার কোনটা সাদা। অনেক সময় নীল রঙের শাপলারও দেখা মেলে আমাদের দেশে। পদ্মর মতো শাপলারও গোড়া বা কন্দ থেকেই এর জন্ম হয়। ৬০ থেকে ৮০ সেমি যেকোনো ছড়ানো পাত্রে শাপলা চারা রোপন করা সম্ভব। চাইলে পদ্মর মতো সিমেন্টের জলাধার তৈরি করে সেখানেও রোপন করা যায়।
সার পরিচর্যা
বাড়তি সার প্রয়োগে পদ্ম বা শালুকে ফুলের পরিমাণ বেড়ে যায় আর আকারেও বড় হয়। গুড়া করা সরিষা খৈল, সুপার ফসফেট ও কাঠের ছাই পুকুরের কাঁদামাটির সাথে মিশিয়ে এক একটি ২৫০ গ্রাম ওজনের গোল বল বানিয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। এবার ওই বল ২-৩টা গামলা বা চৌবাচ্চার মধ্যে পুঁতে দিন। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর এর মধ্যে প্রতি মাসে ১বার করে সার দিন। জলাধারের জল খারাপ হয়ে গেলে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট অল্প পরিমান দিয়ে পানি শোধন করে নিন। মাঝে মাঝে জল পাল্টে ফেলুন।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জুলাই ১৪, ২০০৯
Leave a Reply