‘সাধারণত শীতকালের চেয়ে গরমকালে মশার প্রকোপটা অনেকটাই বেড়ে যায়। কেননা শীতের চেয়ে গরমের সময়ে মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায়। মশার মাধ্যমে ছড়াতে পারে নানা ব্যাধি। তাই এ থেকে সব সময় সতর্কতা প্রয়োজন। মশার মাধ্যমে সাধারণত দুটি রোগ বেশি ছড়ায়-ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া।’ বলেছিলেন বারডেম হাসপাতালের শিশুবিভাগের বিভাগীয় প্রধান তাহমিনা। তিনি আরও বলেন, সব সময়ই মশা থেকে সুরক্ষিত থাকলে এসব রোগ এড়ানো সম্ভব।
মশা সাধারণত জমানো পানিতে অর্থাৎ খাবার বা গোসলের জন্য সংরক্ষিত পানি, বৃষ্টির পানি যেখানে জমে থাকে, যেমন টায়ার, নারকেলের ভাঙা অংশ, পড়ে থাকা হাঁড়ি-পাতিল, ফুলের টব, ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনারে জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে এবং ছয়-সাত দিনের মধ্যে বংশবিস্তার করে।
প্রতিরোধ
মশা থেকে রক্ষা পেতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। মশা ধ্বংসকারী ওষুধ ‘স্প্রে’ ব্যবহার করা যেতে পারে। শরীর খোলা অবস্থায় না রেখে জামাকাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা দরকার। ঘরের জানালায় নেট অথবা পর্দা ব্যবহার করা যেতে পারে। মশার যেসব উৎপত্তিস্থল রয়েছে তা ধ্বংস করতে হবে। বৃষ্টির পানি পড়ে এমন পাত্র নষ্ট করে ফেলতে হবে। জমে থাকা পানি দু-তিন দিন পরপর বদলে ফেলা ও সার্বিক পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। এভাবেই রক্ষা পাওয়া যাবে মশার উপদ্রব থেকে।
প্রতিরোধের উপকরণ
মশা প্রতিরোধের প্রধান উপকরণ হলো মশারি। এসব মশারি বিভিন্ন দামে বিক্রি হয়। তৈরি হিসেবে বিক্রি তো হয়ই, এ ছাড়া আপনি ইচ্ছে করলে সঠিক মাপ দিয়ে নিজের মতো তৈরি করতে পারবেন। মশারির গজপ্রতি দাম পড়বে ২৫-৩০ টাকা। আর এর সবচেয়ে বড় বাজার গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়ায়। এ ছাড়া নিউমার্কেট, নীলক্ষেত এবং রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় মশারি পাওয়া যাবে। জানালায় নেট স্থাপন করেও মশা থেকে বেশ রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এতে বাইরের বাতাস কিছুটা কম থাকলেও মশা থেকে সুরক্ষিত থাকবে ঘর। এসব নেট সাধারণত বিক্রি হয় ফুট হিসেবে। প্রতি ফুটের দাম পড়বে ৩৫-৪০ টাকা। আর এসব নেট পেতে পারেন নয়াবাজার, কাপ্তানবাজার, কারওয়ান বাজার, ইমামগঞ্জ, চকবাজার, সূত্রাপুর প্রভৃতি স্থানে।
মশা মারার জন্য বৈদ্যুতিক র্যাকেট পাওয়া যায়। দাম পড়বে ২০০-২৫০ টাকা। বিভিন্ন মার্কেট ছাড়াও এসব র্যাকেট ভ্রাম্যমাণ দোকানে পাওয়া যাবে। মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণই যথেষ্ট। একটু সচেতন আর প্রতিরোধই পারে আপনাকে মশা-সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে।
মোছাব্বের রিবন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ৩০, ২০০৯
Leave a Reply