শামীম আহমেদ, তরুণ ব্যবসায়ী। অনেক দিন থেকে গাড়ি কেনার কথা ভাবছেন, সে জন্য অনেক চেষ্টা করে গাড়ি চালানো শিখেছেন। কিন্তু গাড়ি কেনার পরও নিজের গাড়ি নিজে ড্রাইভ করতে পারছেন না। তার নিজের নামে কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে যেতে হয় বিআরটিএ অফিসে। কিন্তু সেখানে লাইসেন্স করার সঠিক নিয়ম না জানার কারণে অনেকেই দালালের হাতে পড়ে নানা সমস্যা সম্মুখীন হন এবং বিনা কারণে অনেক টাকার ও সময়ের অপচয় হয়। তাই আসুন জেনে নিই কীভাবে গাড়ি লাইসেন্স করা যায়।
শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স-সংক্রান্ত
১· নির্দিষ্ট কক্ষের কাউন্টার থেকে শিক্ষানবিশ আবেদন ফরম (মেডিকেল ফরমসহ) ও ফি জমার ফয়েল সংগ্রহ।
২· আবেদনকারীর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবিসহ মেডিকেল ফরম রেজিস্টার ডাক্তার কর্তৃক পূরণ করে জমা প্রদান (ডাক্তারের স্বাক্ষর, সিল ও রেজি· নং থাকতে হবে)।
৩· আবেদনের তারিখে প্রার্থীর বয়স পেশাদার লাইসেন্সের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২০ বছর এবং অপেশাদার লাইসেন্সের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১৮ বছর।
৪· নির্ধারিত ডাকঘরে (পে-অর্ডারের মাধ্যমে) শিক্ষানবিশ লাইসেন্স ফি ১০০, ড্রাইভিং, পরীক্ষা ফি ১০০ মোট ২০০ টাকা (প্রত্যেক শ্রেণীর মোটরযানের জন্য পৃথক পরীক্ষা ফি) জমা।
৫· আবেদন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে ডাক্তারি সনদ, ফি জমার রসিদ, সদ্য তোলা তিন কপি স্ট্যাম্প সাইজের ছবি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ শিক্ষানবিশ লাইসেন্স শাখায় দাখিল।
৬· আবেদনপত্র জমা ও ফি জমা রসিদের গ্রাহক কপি প্রদর্শন করে প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ গ্রহণ ও নির্ধারিত তারিখে প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ প্রদর্শন করে শিক্ষানবিশ লাইসেন্স গ্রহণ।
ড্রাইভিং পরীক্ষাসংক্রান্ত
১· নির্ধারিত তারিখে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার জন্য উপস্থিতি রেকর্ডভুক্তকরণ।
২· লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পর কৃতকার্য হলে মৌখিক পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হলে ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ।
হাই সিকিউরিটি ড্রাইভিং লাইসেন্স-সংক্রান্ত
** ড্রাইভিং পরীক্ষায় সব বিষয়ে উত্তীর্ণের (দুই থেকে তিন সপ্তাহ) পর-
১· মূল আবেদনপত্র সংগ্রহ ও যথাযথ পূরণ।
২· সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জন্ম তারিখের সত্যতার প্রমাণপত্র ও নাগরিকত্বের সত্যতার প্রমাণপত্র (আবেদনকারীর পাসপোর্ট থাকলে তার সত্যায়িত ফটোকপি) দাখিল।
৩· প্লাস্টিক কার্ড (হাইসিকিউরিটি) আবেদনপত্র সংগ্রহ দুই কপি, দুই কপি স্ট্যাম্প সাইজের রঙিন ছবিসহ আবেদনপত্র পূরণ।
৪· পেশাদার লাইসেন্সের ক্ষেত্রে পুলিশ তদন্ত রিপোর্ট দাখিল।
৫· ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রযোজ্য ফি এর জমা ফয়েল সংগ্রহ এবং বিআরটিএর অনুমোদিত ডাকঘরে পে-অর্ডারের মাধ্যমে ফি জমাকরণ।
৬· আবেদনপত্রগুলো সঠিকভাবে পূরণ করে বর্ণিত কাগজপত্র নির্দিষ্ট কাউন্টারে দাখিল।
৭· আবেদনপত্র জমা ও ফি জমা রসিদের গ্রাহক কপি প্রদর্শন করে প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ গ্রহণ ও নির্ধারিত তারিখে প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ প্রদর্শন করে হাই সিকিউরিটি লাইসেন্স গ্রহণ।
ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার সময়সূচি (ঢাকা মহানগর)
রোববার-অপেশাদার (হালকা), সোমবার-পেশাদার (মধ্যম-ভারী) মঙ্গলবার-মোটরসাইকেল (অটোরিকশ) এমসিআর, বুধবার-পেশাদার (হালকা), বৃহস্পতিবার-কন্ডাক্টর লাইসেন্স, ইনট্রাক্টর লাইসেন্স, পিএমভির জন্য লিখিত সকাল নয়টা, মৌখিক বেলা ১১·৩০ ব্যবহারিক (কন্ডাক্টর, ইনট্রাক্টর, পিএসভি লাইসেন্স) বাদে বেলা দুইটা।
মোটরযানের নবায়ন ফি
১· ১০ বছর মেয়াদি হাই সিকিউরিটি যুক্ত অপেশাদার হালকা ও মধ্যম মোটরযানের (কার, জিপ, মাইক্রোবাস, পিকআপ ইত্যাদি) এর বার্ষিক ফিটনেস নবায়ন ফি ৬৪৫ টাকা। মেয়াদ উত্তীর্ণের ক্ষেত্রে প্রতি মাস বা এর অংশের জন্য অতিরিক্ত ফিয়ের হার ১৫০ টাকা।
২· চালকসহ পাঁচ আসনবিশিষ্ট মোটরকারের বার্ষিক কর হার (ট্যাক্স টোকেন) চার হাজার ৫৪৫ টাকা। মেয়াদ উত্তীর্ণের ক্ষেত্রে জরিমানার হার ৩, ৬, ৯, ১২ মাস বা এর অংশের জন্য যথাক্রমে- ১৬৮৮, ৩৩৭৫, ৫০৬৩, ৬৭৫০ টাকা।
সূত্রঃ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)
বাদল খান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ২৫, ২০০৮
মোঃ রাজিব হাসান রাজু
ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ব্যাপারে বিস্তারিত বলার জন্য অনেক ধন্যবাদ……।।লাইসেন্স করার জন্য কত টাকা লাগবে তা উল্লেখ করা দরকার ছিল…