টেবিলে টেবিলে টুংটাং আওয়াজ। সবাই মাথাগুঁজে খাচ্ছে। সবই দেশি। একটা শেষ হতে না হতেই আরেকটার হাতছানি। চেনা-পরিচিত খাবারগুলো এখানে রঙেঢঙে সম্পূর্ণ আলাদা। দেখে ঠিক ঠাওর করা যায় না। ভর্তার মধ্যে শুঁটকিভর্তা, টাকিভর্তা, কই মাছের ঝোল, পাপদা মাছের ভুনা, শর্ষে ইলিশের মতো পরিচিত খাবারগুলোও খেয়ে নতুন লাগল। শুধুই কি খাওয়া। ব্যাকগ্রাউন্ডে হালকা মিউজিক, ‘কেন দূরে থাকো, শুধু আড়াল রাখো···।’
কেউই আর নিজেকে দূরে রাখল না। একগাদা দেশি খাবার শেষে ডেজার্টের সামনেও লম্বা লাইন।
রেডিসন ওয়াটার গার্ডেন হোটেল ঢাকা প্রতিবারের মতো এবারও আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুড অ্যান্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যাল-২০০৮। এখানে বাংলাদেশি খাবার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে নতুনভাবে তুলে ধরা হবে। সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ডিরেক্টর সাঈদ আহমেদ বলেন, ‘এই মেলায় একেকটা স্টেশনে একেক অঞ্চলের খাবার পরিবেশিত হবে, বাংলা খাবারের এই বিশাল বৈচিত্র্যের সঙ্গে আমরা সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই।’ হোটেলের পুলসাইডে অনুষ্ঠিত এ উৎসবটি চলবে প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টা ৩০ থেকে রাত ১০টা ৩০ মিনিট ২৪ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। বুফে খাবারে পাওয়া যাবে চটপটি, বিভিন্ন ধরনের ভর্তা, দেশি প্রায় সব রকম মাছের আইটেম, পোলাও, কোর্মা, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, রসগোল্লা, রসমালাই, পাটিসাপটা, ভাঁপাপিঠাসহ আরও অনেক ঐতিহ্যবাহী খাবার। এক্সিকিউটিভ শেফ সালেহ আহমেদ বলেন, প্রায় ৭২ জন শেফের একটি বড় দল মেলার খাবারের পুরো দায়িত্বে থাকবে। দর্শনার্থীদের সামনেই তাঁরা তৈরি করবে ঐতিহ্যবাহী দেশি খাবারগুলো। ফলে গরম গরমই চেখে দেখার সুযোগ হবে সবার। পাশাপাশি একদল সাংস্কৃতিক কর্মী পরিবেশন করবেন রবীন্দ্র, নজরুল, লালন, ভাটিয়ালি ও হারানো দিনের সাড়া জাগানো সব গান।
তাই দেশি খাবারের রুচি ফেরাতে ঘুরে আসতে পারেন র্যাডিসন ওয়ার্টার গার্ডেনের ফুড অ্যান্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যালে। এখানে যেমন রথ দেখা হবে, আবার কলা বিক্রিও হবে। অর্থাৎ গরম গরম দেশি খাবারের পাশাপাশি দেশীয় সংস্কৃতিটাকেও নতুন করে চেনা হবে।
সিদ্ধার্থ মজুমদার শিবু
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ২৫, ২০০৮
Leave a Reply