ইংরেজিতে বলে স্ট্রেচিং (Stretching) – বাংলায় এর সঠিক প্রতিশব্দ কী হতে পারে, জানা নেই। বলা যেতে পারে ‘পেশির নমনীয়তা বা সম্প্রসারনের ব্যায়াম’। ভারতের বিখ্যাত ‘যোগ ব্যায়াম’-এর অনেকগুলো আসন এর মধ্যে পড়ে। আমরা যখন বসে বা শুয়ে থাকি তখন শরীরের পেশিগুলোও ‘ঠাণ্ডা’ বা ‘শক্ত’ অবস্থায় থাকে। এমত অবস্থায় হুট করে কোনো কিছু করতে গেলে পেশিতে টান লেগে পেশিতে ব্যথা বা অনেক সময় পেশি ছিঁড়েও যেতে পারে। ব্যায়াম করতে গেলে, বিশেষ করে ওয়েট-লিফটিং–এ ধরনের দুর্ঘটনা অনেক বেশি ঘটার সম্ভাবনা। তাই যে কোনো শারীরিক কাজ বা ব্যায়াম করতে গেলে শরীরের যে পেশিগুলো ওই কাজ বা ব্যায়ামে ব্যবহৃত হবে, সেটাকে নমনীয় বা সম্প্রসার করে নিতে হয়। এটাকেই ‘স্ট্রেচিং’ বলে।
স্ট্রেচিং করার আগে অবশ্য আরেকটি কাজ করে নিতে হয়–বাংলায় যাকে বলে ‘গা গরম করা’, ইংরেজিতে ‘ওয়ার্ম-আপ’। টিভিতে ফুটবল খেলার সময় দেখবেন যেসব প্লেয়ার সাইড-লাইনে থাকে, যাদের বদলি হিসাবে খেলতে নামার সম্ভাবনা, তারা মাঠের এক কোণে নানান ভঙ্গিতে হালকা দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে। এটাকেই ওয়ার্ম-আপ করা বলে। ফুটবল যেহেতু মূলত দৌড়াদৌড়ির খেলা, সেহেতু আগে এরা হালকা দৌড়ে নিচ্ছে যাতে পরে খেলতে নেমে দৌড়ানোর সময় যে পেশিগুলোতে টান লাগবে, সেগুলো হুট করে চাপটা না পড়ে। ব্যায়াম করতে গেলেও আগে ওয়ার্ম-আপ করে নিতে হয়। জিমে গিয়ে ট্রেডমিলে (দৌড়ানোর মেশিন) ৫ মিনিট দ্রুত হাঁটা, বা হালকা দৌড়, বা ৫ মিনিট মোটামুটি বেগে সাইক্লিন করে আগে ওয়ার্ম-আপ করে নিতে হয়। তারপর ওই দিন শরীরের যে অংশের ব্যায়াম করবেন, সেই অংশের পেশিগুলো স্ট্রেচিং করে নিতে হয় ৫-১০ মিনিট।
জিমে ব্যায়াম করলে, বা ওয়েট লিফটিং করলে শরীরকে মোটামুটি তিনটি ভাগে ভাগ করে নিতে হয়–বুকের ব্যায়াম, পিঠের ব্যায়াম এবং পায়ের ব্যায়াম। সপ্তাহে ৩দিন ব্যায়াম, এবং এই তিনদিনের একেকদিনে এই তিন ধরনের ব্যায়ামের একেক অংশ করতে হয়। যেমন সোমবার বুকের ব্যায়াম, মঙ্গলবার বিশ্রাম, বুধবার পিঠের ব্যায়াম, বৃহস্পতিবার বিশ্রাম, শুক্রবার পায়ের ব্যায়াম, শনি ও রবিবার বিশ্রাম।
স্ট্রেচিং করার টেকনিকে দুইটি ধাপ আছে। প্রথম ধাপে পেশি ৩-৫ সেকেন্ড স্ট্রেচিং/টান টান করে চেপে ধরে ছেড়ে দিতে হবে। তারপর বড় করে শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছেড়ে দিতে হবে। তারপর আবার স্ট্রেচিং করতে হবে। এভাবে কয়েকবার স্ট্রেচিং করতে হবে। এটা গেলো প্রথম ধাপ। পরের ধাপে আরেকটু বেশি সময় করে (১৫-২০ সেকেন্ড) করে করতে হবে–একই ভাবে চেপে ধরে, হালকা ব্যাথা হওয়া পর্যন্ত গিয়ে ছেড়ে দিয়ে রিলাক্স করতে হবে। বড় করে শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছেড়ে দিতে হবে। তারপর আবার… এভাবে একটা অংশ হয়ে গেলে অন্য অংশের পেশি স্ট্রেচিং করতে হবে। ৫-১০ মিনিটের মধ্যে হয়ে যাবে।
এবার নিচে কিছু ছবি শরীরের বিভিন্ন অংশের স্ট্রেচিং-এর টেকনিক দেখানো হলো।
বুকের পেশির স্ট্রেচিং–
কাধের পেশির স্ট্রেচিং–
বাহুর পেশির স্ট্রেচিং (ট্রাইসেপ)–
পিঠের পেশির স্ট্রেচিং–
বাহুর পেশির স্ট্রেচিং (বাইসেপ)–
পায়ের পেশির স্ট্রেচিং–
ঊরু (হ্যামস্ট্রিং)–
ঊরু (কোয়াড্রিসেপস)–
কোমর–
[জিমে যাদের সময় কম, তাদের জন্য সংক্ষেপে এটুকুই যথেষ্ট। যারা শরীরের নমনীয়তা (flexibility) বাড়াতে চান, তাদের জন্য পরবর্তীতে শরীরের একেকটি অংশের স্ট্রেচিং নিয়ে আরো বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করে যেতে পারে। আপাতত আপনারা যোগ ব্যায়ামের পোস্টগুলো দেখতে পারেন।]
(Photo Credit : Anthony Ellis)
multiple myeloma
i understand your language 🙁