জীবনের এক-তৃতীয়াংশের বেশি সময় আমরা ঘুমাই। বয়স অনুযায়ী অবশ্য ঘুমের একটা স্বাভাবিক ছন্দ আছে। শিশুরা অনেক ঘুমায়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ঘুমের সময় কমে যায়। বৃদ্ধরা স্বাভাবিকভাবেই কম ঘুমান। আসলে শারীরবৃত্তীয় প্রয়োজনের ওপরই নির্ভর করে ঘুমের এই সময়। তবে খুব কম ঘুম বা খুব বেশি ঘুম—কোনোটাই স্বাভাবিক নয়।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে চার থেকে নয় ঘণ্টা ঘুম স্বাভাবিক এবং ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুম হলো আদর্শ। দেখা গেছে, যাঁরা নয় ঘণ্টা বা এর চেয়ে বেশি ঘুমান, তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন রোগের প্রবণতা বেশি।
ভালো ঘুমের জন্য করণীয়:
বিছানা শুধু ঘুমের জন্যই নির্দিষ্ট করে রাখুন। বিছানায় বসে টিভি দেখা, আড্ডা দেওয়া, খাবার খাওয়া বন্ধ করুন।
খালি পেটে কখনো শুতে যাবেন না। আবার রাতে গুরুপাকও খাবেন না। ভরা পেটে শুতে যাওয়া ঠিক নয়। খাওয়া ও শোয়ার মধ্যে সময়ের তফাত রাখুন।
শোয়ার আগে এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। দুধে থাকে ট্রিপটোফ্যান যা আপনাকে ঘুমাতে সাহায্য করবে।
গোসল সেরে নিতে পারেন বা শুতে যাওয়ার আগে ঘাড়, মুখ ও পা পানি দিয়ে মুছে নিতে পারেন।
ঘুমাতে যাওয়ার সময় সারা দিনের ক্লান্তি, বিরক্তি, বিপর্যয় বা উত্তেজনার কারণগুলো নিয়ে চিন্তা করবেন না।
খুব বেশি উত্তেজিত হয়ে বিছানায় যাবেন না।
ঘুমের আগে কোনো ভারী কাজ বা অত্যধিক মাথার কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করুন
দুপুরের ঘুম আপনার শুধু কর্মক্ষমতাই কমায় না, আপনার রাতের ঘুমও নষ্ট করে। অতএব এটি বাদ দিন।
ঘুমাতে যাওয়ার আগে সিগারেট, তামাক, চা, কফি না খাওয়াই ভালো।
দুই-এক দিনের ঘুম না হওয়াতেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবেন না। তবে নির্ঘুম নিয়মিত হলে নিজে নিজে ঘুমের ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডা. মো. মঞ্জুরুল হাসান
ঢাকা মেডিকাল কলেজ ও হাসপাতাল।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, অক্টোবর ২৮, ২০১৩
Leave a Reply