শিশুদের কান থেকে পুঁজ বা পানি পড়াকে প্রচলিত কথায় বলা হয় কানপাকা। কান থেকে পুঁজ পড়ার প্রধান কারণ হলো মধ্যকর্ণের প্রদাহ। কানের পর্দা যার অন্য নাম টিমপানিক মেমব্রেন, তার পেছনে পুঁজ জড়ো হয়। এরপর তা চোখের জল নামার মতো ফেটে বেরিয়ে আসে। এতে তীব্র ব্যথা হয়। অস্থায়ী বধিরতাও সৃষ্টি হতে পারে। ওষুধ বা সার্জারির মাধ্যমে ভালো করে তোলা হলে কয়েক সপ্তাহ পর আপনা-আপনি এই ছেঁড়া পর্দা ভরাট হয়ে ওঠে।
কীভাবে কর্ণপর্দা ছিঁড়ে যায়
l কানের সংক্রমণ।
l বিমানে বা উঁচু পাহাড়ে ওঠার সময় হঠাৎ করে বায়ুর চাপ পরিবর্তন।
l বিকট জোরে শব্দ হলে, যেমন বোমা বিস্ফোরণের ভয়ংকর শব্দ।
l মাথায় আঘাত, যাতে মাথার অস্থি বা সরাসরি কর্ণযন্ত্র আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
কানের পর্দা ফেটে গেছে?
l প্রথমে কানে ব্যথা হবে।
l কান থেকে পুঁজ বা রক্তমাখা পানি বেরিয়ে আসতে পারে।
l কানে না শোনা।
l কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ।
l মাথা ঘোরানো।
l কখনো মুখমণ্ডলের মাংসপেশিতে অসাড়তা।
চিকিৎসা
l চিকিৎসক কান পরীক্ষা করে বা কানের পুঁজ পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন।
l অ্যান্টিবায়োটিকস খেতে দিতে পারেন।
l ভবিষ্যতে আর এমনটা না হওয়ার জন্য পরামর্শ দেবেন।
প্রতিরোধ
l কখনো শিশুদের কানের ভেতরে কিছু ঢোকানো যাবে না, এমনকি কটন বাডও নয়।
l ছোট শিশুরা প্রচণ্ড কান্নাকাটি করলে কান দুটো ভালো করে পরীক্ষা করুন। ভিজে মনে হলে গন্ধ শুঁকে দেখুন। শিশুরা অনেক সময় সমস্যা নির্দিষ্ট করে নাও বলতে পারে।
l জোরে নাক বন্ধ রেখে মুখ দিয়ে বাতাস বের করার চেষ্টা করলে কান আর শুকাবে না।
l পেট্রোলিয়াম জেলিমিশ্রিত কটন উলের প্লাগ কানে বসানো হয়।
l কান পাকার সময়ে সুইমিংপুল ব্যবহার বা পুকুরে সাঁতার দেওয়া যাবে না, দিলেও কানের প্লাগ ব্যবহার করতে হবে, শিশুদের গোসলের আগে শাওয়ার ক্যাপ পরানো ভালো।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিভাগ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
Leave a Reply