খেলাধুলা, সাইকেল চালানো বা কোনো দুর্ঘটনায় দাঁত ও মুখে আঘাত লেগে দাঁত ভেতরে ঢুকে যেতে পারে। কখনো দাঁত আংশিক ভেঙে যায় কিংবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দাঁত চোয়াল থেকে বের হয়ে আসে। অনেকে এ সময় যথাযথ ব্যবস্থা নেন না। ফলে নানা ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে।
আঘাতজনিত দাঁতের চিকিৎসা
আঘাতজনিত কারণে দাঁত যদি শুধু নড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে দুধদাঁত হলে কোনো চিকিৎসার দরকার নেই। আঘাতজনিত কারণে মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে পরিষ্কার তুলা অথবা কাপড় দিয়ে পাঁচ-সাত মিনিট চেপে ধরে রাখতে হবে। সামান্য ব্যথা থাকলে সে ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল-জাতীয় টেবলেট বা সিরাপ খাওয়ানো যেতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খাওয়ানো উচিত। সংক্রমিত যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। খাবার খাওয়ার পর কুসুম গরম লবণপানি কিংবা মাউথওয়াশ দিয়ে কুলকুচা করানো যেতে পারে। স্থায়ী দাঁত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। বিশেষ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ও অন্যান্য ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। দাঁত মাঝেমধ্যে এক্স-রে করিয়ে চিকিৎসককে দেখাতে হবে। কোনো কারণে দাঁত ভেঙে গেলে, সে ক্ষেত্রে দাঁতের ভাঙা অংশ আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে আগের জায়গায় বিশেষ পদ্ধতিতে লাগিয়ে দেওয়া সম্ভব। দাঁত ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এর ভাঙা অংশসহ দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। দেরি হলে দাঁত পরিষ্কার ভেজা তুলা অথবা কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে রেখে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
যদি কোনো কারণে স্থায়ী দাঁত পুরোপুরি বের হয়ে আসে, সে ক্ষেত্রে খুব সাবধানতার সঙ্গে তা পরিষ্কার করে দুধ ও মুখের লালা কিংবা সাধারণ স্যালাইনের পানির মধ্যে ভিজিয়ে রেখে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে গিয়ে দাঁত আগের জায়গায় পুনঃস্থাপন করিয়ে নিতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা করিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিতে হবে। চিকিৎসকের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না হলে প্রথমে উপড়ে যাওয়া দাঁতটি ঠান্ডা পানি (যেমন টিউবওয়েলের পানি) দিয়ে ৩০ সেকেন্ড ধুয়ে নিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই দাঁতের শিকড় স্পর্শ বা শিকড়ের কোনো আবরণ তোলা যাবে না। এরপর দাঁতের ছকেটে (যেখানে দাঁত ছিল) দাঁতটিকে বসিয়ে আঙুল দিয়ে চেপে কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হবে অথবা পাশের দাঁতের সঙ্গে সুতা দিয়ে বেঁধে রেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কোনো ডেন্টাল সার্জনের কাছে যেতে হবে। তবেই দাঁত রক্ষা পাবে।
সিদ্ধার্থ মজুমদার
মুখ ও দন্তচিকিৎসক
Leave a Reply