দুর্ঘটনাসহ নানান কারণেই অনেকেই দাঁত হারাতে পারেন। কিন্তু দাঁত পড়ে গেলে শূন্য স্থানটিতে কৃত্রিম দাঁত না লাগালে কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমন:
১. শূন্য স্থানটিতে পরবর্তী দাঁতগুলো হেলে পড়তে পারে। এ ছাড়া ওপরের পাটির একটি দাঁত অনুপস্থিত থাকলে নিচের পাটির দাঁত বেড়ে ওপরের দিকে চলে আসতে পারে। একইভাবে নিচের দাঁত না থাকলে ওপরের দাঁতও নেমে আসতে পারে।
২. খেতে অসুবিধা হতে পারে। এতে অপুষ্টিজনিত সমস্যা হতে পারে।
৩. চোয়ালের সন্ধির সমস্যা হতে পারে।
৪. সম্পূর্ণ দাঁতের গঠন বিন্যাস নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৫. শব্দ উচ্চারণে বা কথা বলতে অসুবিধা হতে পারে।
কৃত্রিম দাঁত প্রাথমিক অবস্থায় সাময়িক অসুবিধা সৃষ্টি করলেও ধীরে ধীরে তা দূর হয়ে যায়। নানা পদ্ধতিতে আজকাল কৃত্রিম দাঁত প্রতিস্থাপন করা হয়।
খোলার যোগ্য কৃত্রিম দাঁত বা রিমোভেবল ডেনচার রাতে ঘুমানোর আগে খুলে রাখতে হয়। সকালে আবার ধুয়ে ব্রাশ করে তা মুখে লাগানো হয়। ইদানীং এতে ফ্লেক্সিবল ডেনচার ব্যবহার করা হয়, যাতে কৃত্রিম তার ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না বা তার দেখাও যায় না।
ফিক্সড পোরসেলিন ক্রাউন পদ্ধতিও ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। এটি একটি বা দুটি দাঁতের সাহায্য নিয়ে স্থায়ীভাবে বসানো হয়। যেমন একটি প্রথম মলার দাঁত অনুপস্থিত থাকলে তার এক পাশের প্রিমলারের এবং অপর পাশের দ্বিতীয় মলারের সাহায্য নিতে হয়। অর্থাৎ একটি অনুপস্থিত দাঁতের জন্য দুটি ক্রাউন বা মুকুট তৈরি করা হয় এবং মাঝখানে কৃত্রিম স্থায়ী দাঁত তা ধরে রাখে।
স্থায়ী দাঁত প্রতিস্থাপনের পদ্ধতিও রয়েছে। এই পদ্ধতিতে অনুপস্থিত দাঁতের স্থানের মাড়ি সরিয়ে হাড়ের ভেতরে অস্ত্রোপচার করে ইমপ্ল্যান্টের ওপর একটি কৃত্রিম দাঁত স্থায়ীভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এটি অনুপস্থিত দাঁতের জন্য সর্বাধুনিক বিজ্ঞাসম্মত পদ্ধতি।
অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরী
দন্ত বিভাগ, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ ও বারডেম হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ১৮, ২০১৩
Leave a Reply