জ্বরাক্রান্ত যেকোনো শিশুর শরীরে লাল দানা দেখা দিলে তার হাম হয়েছে কি না, তা নির্ণয় করাটা জরুরি। হাম একটি ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ, যা সাধারণত এমনিই সেরে যায়। কিন্তু তা শিশুর মারাত্মক অপুষ্টি, দুর্বলতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। হাম-পরবর্তী নিউমোনিয়া, নানা ধরনের সংক্রমণ মৃত্যুর কারণ হতে পারে। অপুষ্টি ও ভিটামিন এ-এর অভাবে দেখা দিতে পারে অন্ধত্ব। তাই হাম হয়েছে বা সেরে গেছে, এমন শিশুদের কোনো জটিলতা দেখা দিচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা খুবই জরুরি।
হাম থেকে জটিলতা
খিঁচুনি, প্রচণ্ড দুর্বলতা, খেতে না পারা, সবকিছু বমি করে দেওয়া, এমনকি বুকের দুধ পান করতে না পারা থেকে শিশু সংজ্ঞা হারাতে পারে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর জ্বর, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। অপুষ্টিজনিত জটিলতা, চোখের কর্নিয়ায় ঘোলাটে ভাব ও মুখের ভেতরে ঘা দেখা দিতে পারে।
এসব ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কর্নিয়া ঘোলাটে হয়ে এলে বা চোখ থেকে পুঁজ ঝরলে টেট্রাসাইক্লিন অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করা হয়।
মুখে ঘায়ের জন্য ০.৫ শতাংশ জেনসেন ভায়োলেট মলম দেওয়া হয়। বাজারে ২ শতাংশ জেনসেন ভায়োলেট পাওয়া যায়। তাতে সমান পরিমাণ জল মিশিয়ে ০.৫ শতাংশ হিসেবে তৈরি করা যায়। শিশুর মারাত্মক অপুষ্টি রোধে প্রয়োজনে হাসপাতালে রেখে আমিষ নিশ্চিত করা হয়।
তিন মাসের মধ্যে হাম হওয়ার ইতিহাস আছে, সেরে গেছে এবং কোনো রকম জটিলতা হয়নি, এমন শিশুদের ক্ষেত্রে পুষ্টিকর খাদ্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা এবং বাড়তি এক ডোজ ভিটামিন-এ প্রয়োজন।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
Leave a Reply