ব্রণ বা অ্যাকনি ত্বকের তেলগ্রন্থি বা সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ডের একটি প্রদাহজনিত রোগ। ব্রণকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে একটি রোগ হিসেবেই দেখা হয়। এর সুনির্দিষ্ট কারণ ও নিরাময়যোগ্য চিকিৎসাও আছে।
সাধারণত ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সে দেহে নানা হরমোনের ওঠানামার কারণে এ সময় ব্রণের প্রকোপ বেশি হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক সময় এমনিতেই সেরে যায়। তবে প্রাপ্তবয়স্করাও যে ব্রণের ঝামেলায় ভোগেন না, তা নয়। ব্রণের আক্রমণের পেছনে বংশগত বা জেনেটিক কারণ যেমন দায়ী তেমনি হরমোনজনিত জটিলতা যেমন অ্যান্ড্রোজেনের প্রভাব, প্রসাধনসামগ্রীর ব্যবহার, জীবাণুর আক্রমণ, মানসিক চাপ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদিরও হাত আছে।
ব্রণ হলে সাধারণত চুলকানি থাকে না। তবে ব্যথা হতে পারে। কিশোরী ও তরুণীদের মধ্যে ৫ থেকে ১০ শতাংশ মেয়ে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম নামের একধরনের হরমোনজনিত জটিলতায় ভোগে। এদের ব্রণ বেশি হয়। এদের ওজন কমালে এবং চিকিৎসা করলে ব্রণ সেরে যায়। কারণভেদে চিকিৎসকেরা নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন থেরাপি, অ্যান্টি অ্যান্ড্রোজেন, স্পাইরোনোল্যাকটন ইত্যাদি ওষুধ ব্যবহার করেন ব্রণের চিকিৎসায়।
তবে গর্ভবতী নারী বা সন্তানধারণে চেষ্টা করছেন এমন নারীদের ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা দরকার। প্রথম তিন মাস কোনো ধরনের ওষুধ না খাওয়াই ভালো।
ব্রণ হলে মুখের ত্বক খোঁটা উচিত নয়, এতে ত্বকে দাগ পড়ে যাবে। সব সময় ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। অতিরিক্ত তেলজাতীয় খাবার বা ভাজা পোড়া এড়িয়ে চলতে হবে। যেকোনো প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহারের আগে সাবধান হওয়া উচিত। ব্রণের কারণে অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তা না করে সঠিক কারণ চিহ্নিত করুন। কোনো শারীরিক জটিলতা থাকলে তার চিকিৎসা নিন।
এম মনিরুজ্জামান খান, ত্বক বিশেষজ্ঞ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৩
Leave a Reply