আমরা প্রায় অভিযোগ পাই যে অনেকেই নিয়মিত মুখ পরিষ্কারের চেষ্টা করে। তার পরও দাঁতে গর্ত বা মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে। আপাতদৃষ্টিতে এমনটা হওয়া উচিত নয়। প্রত্যেককে স্পষ্টভাবে জানতে হবে, প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ আর সঠিক নিয়ম অনুযায়ী দাঁত ব্রাশ এক কথা নয়। দাঁতের গঠন ও অবস্থান অনুযায়ী দাঁত ও মুখ পরিষ্কারের নিয়ম শিখতে হবে এবং তা নিয়মিত মেনে চলতে হবে।
সঠিকভাবে ব্রাশ করলেও দুটি দাঁতের মধ্যবর্তী স্থানে ব্রাশ পৌঁছে না, সে ক্ষেত্রে সেখানে খাদ্যকণা ও জীবাণু লুকিয়ে থাকতে পারে। তাই মধ্যবর্তী স্থান পরিষ্কারের জন্য ডেন্টাল ফ্লস নামক বিশেষ সুতা ব্যবহার শিখতে হবে। মাঝেমধ্যে ‘এন্টি প্ল্যাক’ মাউথওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে। সবকিছু ঠিক থাকার পরও বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে দাঁত ও মাড়িতে সমস্যা হয়।
দাঁতের অস্বাভাবিক গঠন
জন্মগত কারণে অনেকের দাঁত ভঙ্গুর হয়। আবার কারও কারও দাঁতের বর্ধনের পৃষ্ঠে অস্বাভাবিক সূক্ষ্ম গভীর ফাটল থাকে, যেখানে ব্রাশ পৌঁছে না। এ ধরনের জন্মগত ও গঠনে ত্রুটিপূর্ণ দাঁতের ক্ষেত্রে ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শের আগে থেকেই প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা নেওয়া যায়।
দাঁতের অস্বাভাবিক অবস্থান
উঁচু, নিচু, ফাঁকা, এলোমেলো দাঁত পরিষ্কার রাখা তুলনামূলক কষ্টসাধ্য, এই জাতীয় দাঁতে দ্রুত প্ল্যাক জমে ও মাড়িতে প্রদাহের সৃষ্টি করে। অর্থোডন্টিক ও কসমেটিক ডেন্টাল চিকিৎসার মাধ্যমে অবস্থানগত একটিকে স্বাভাবিক অবস্থানে ফেরানো সম্ভব।
নিঃসৃত লালার ধরন
যাদের মুখে লালার ধরন ঘন, আঠালো বা তুলনামূলক কম, তাদের দাঁত ও মাড়িতে রোগ হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। শারীরিক ও মানসিক নানা কারণে লালা নিঃসরণে তারতম্য হতে পারে। যে ক্ষেত্রে কারণ চিহ্নিত করে ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শে দিনে ১১ বা ১২ গ্লাস পানি পান, চিনিমুক্ত চুইংগাম চিবানোসহ কৃত্রিম লালা ব্যবহার করা যেতে পারে।
খাদ্যাভ্যাস
যারা আঁশযুক্ত খাবার, দেশীয় ফলমূল, দুধ, ডিম, শাকসবজি ছোট মাছ প্রভৃতির পরিবর্তে মিষ্টি, চকলেট, কেক, আইসক্রিম, ফাস্টফুড, কোমলপানীয় বেশি খায় এবং যারা ধূমপান, জর্দা ও গুল ব্যবহার করে, তাদের ডেন্টাল রোগের আশঙ্কা থাকে।
শারীরিক অসুস্থতা
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিক এসিডিটি, অপুষ্টি ইত্যাদি নানা অসুস্থতায় যেমন ডেন্টাল সমস্যা তৈরি হয়, তেমনি নানা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রভাবও দাঁত ও মাড়ির ওপর পড়ে।
আমাদের মুখে অসংখ্য প্রজাতীয় জীবাণুর অভয়ারণ্য। অনুকূল পরিবেশ পেলেই এরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাই সুস্থ মুখ ও সুন্দর হাসি ধরে রাখতে নিয়মিত এবং সঠিক নিয়মে দাঁত ও মুখ পরিষ্কার রাখার বিকল্প নেই। পাশাপাশি উল্লিখিত কারণগুলোর দিকেও বিশেষ নজর রাখতে হবে।
মো. আসাফুজ্জোহা, দন্ত বিশেষজ্ঞ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১২
monir,k.s.a
amar sob dat akto akto nora o datar kalar nosto hossa. a jonno ami ke korta pari.
Bangla Health
ভিটামিন সি সম্বৃদ্ধ খাবার খান। কমলা খান নিয়মিয়। আয়রণ আছে, এমন পানি মুখ দেবেন না।