হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রীর হতাশা ও উদ্বেগে ভোগার ঝুঁকি অনেক বেশি। এমনকি সঙ্গী বেঁচে গেলেও এই ঝুঁকি থেকে মুক্তি নেই। ডেনমার্কের একটি গবেষণায় এ রকমই তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যে বছর স্বামী বা স্ত্রী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, সেই বছর তাঁদের সঙ্গী হতাশা দূর করতে কম করে হলেও তিনবার ওষুধ গ্রহণ করেন। এমনকি তাঁদের সঙ্গী বেঁচে গেলেও আগের বছরের তুলনায় হতাশা নিরোধক এই ওষুধ গ্রহণের হার ১৭ শতাংশ বেড়ে যায়।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তির সঙ্গীর অবস্থা কী দাঁড়ায়—এ ধরনের বিষয় নিয়ে এটিই প্রথম গবেষণা। এতে দেখা যায়, নারীদের চেয়ে পুরুষেরাই বেশি সংবেদনশীল। গবেষণার ফল ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নাল-এ প্রকাশ করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে প্রতিদিন প্রায় ৩৪০ জন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। এদের মধ্যে ১৩ শতাংশের অবস্থা বেশ গুরুতর।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের হৃদরোগবিষয়ক জ্যেষ্ঠ সেবিকা মরিন টালবট বলেন, ‘হৃদরোগে আক্রান্তের একটি ঘটনা পুরো পরিবারকে প্রভাবিত করতে পারে। এ গবেষণার ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গীরও যত্ন নেওয়ার গুরুত্বের বিষয়টি ফুটে উঠেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, প্রিয় কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে লোকজনের মধ্যে হতাশা ও অসহায়ত্ব কাজ করে। এ সময় তাঁদের সব দিক থেকে সমর্থন খুবই জরুরি।’
গবেষক দলের সদস্য ডিউক ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের ইমিল ফসবল বলেন, এটি জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বড় ইস্যু হলেও চিকিৎসক ও নীতিনির্ধারকেরা এটি নিয়ে কম সচেতন। এ গবেষণার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ভুক্তভোগী ব্যক্তির সঙ্গীর প্রতিও যত্ন নিতে হবে। এটা এমন নয়, কেবল রোগী মারা গেলেই তাঁর সঙ্গীর প্রতি যত্ন নিতে হবে। রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর এবং তিনি বেঁচে গেলেও তাঁর সঙ্গীর যত্ন নিতে হবে।
১৯৯৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে, এমন ব্যক্তিদের ১৬ হাজার ৫০৬ জন এবং বেঁচে গেছে এমন ব্যক্তিদের ৪৪ হাজার ৫৬৬ জন সঙ্গীর ওপর এ গবেষণা চালানো হয়েছে। বিবিসি।
Leave a Reply