কিছু কথা: শিশুর বিছানা ভেজানো অসুখ। এ ইস্যুতে লাখ লাখ পরিবার প্রতি রাতে সমস্যায় পড়ে। শিশুবয়সে এটা সচরাচর ঘটে। সমস্যাটি টিনএজ পর্যন্ত গড়াতে পারে। ছয় বছরের নিচে প্রায় ১৩ শতাংশ এবং এর বেশি বয়সের শিশুর প্রায় ৫ শতাংশের মধ্যে এটা দেখা যায়। কখনো বা পারিবারিকভাবে এটা বেশি মেলে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকও বুঝতে পারেন না, কখন এ শিশুর উপসর্গটা থেমে যাবে। বেশির ভাগ সময় বাচ্চার বিছানা ভেজানো রোগে কোনো গভীর মেডিকেল অসুখ বা মানসিক ব্যাপারঘটিত যোগসূত্র থাকে না। তবু এটা ফ্যামিলির জন্য দুঃসহ হয়ে ওঠে। শিশু নিজেকে নিয়ে অস্বস্তিতে থাকে, দোষী মনে করে। বন্ধুর বাসায় বেড়াতে যাওয়ার সময় ভয়ে থাকে। মা-বাবা অসুখ সামলাতে না পেরে হতাশায় ভুগতে থাকেন। তবু এটা আপনাআপনি সেরে যায়। দরকার শিশুকে মানসিক চাপমুক্ত রাখা, তার আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দেওয়া যে অবশ্যই সে সুস্থ হয়ে উঠবে।
কীভাবে সামলাবেন
এটা যতক্ষণ পর্যন্ত সেরে না যায়, তত দিন শিশুকে ইতিবাচকভাবে সমর্থন দিন।
বিষয়টি শিশুর বেড়ে ওঠার একটা অংশ হিসেবে বিবেচনায় রাখুন।
বিছানায় শুতে যাওয়ার আগে শিশু যাতে বাথরুম সেরে নেয় তা সুনির্দিষ্ট করে দিন।
শিশু যেন দিনের বেলায় বেশি তরল বা পানীয় পান করে, রাতের বেলা কম। কেফিনযুক্ত পানীয় দিনের শেষভাগে না খাওয়ানো উচিত।
শিশু যেদিন বিছানায় প্রস্রাব করবে না সেদিন তাকে পুরস্কৃত করুন (বই উপহার দিন)।
এতে সে উৎসাহিত হবে।
বেড ওয়েটিং অ্যালার্মও কার্যকর।
বিছানার ভেজা চাদর সরিয়ে ফেলতে ওকেও যুক্ত করুন। তবে সে যেন মনে না করে ওকে আপনি শাস্তি দিচ্ছেন।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ চাইবেন
শিশু গত ছয় মাস ধরে কখনো বিছানায় প্রস্রাব করেনি, হঠাৎ করে বিছানা ভেজানো উপসর্গ দেখা দিলে।
দিনে তার প্যান্ট প্রস্রাবে ভিজে থাকে।
স্কুলে বা বাসায় আবোলতাবোল আচরণ করতে থাকলে।
ঘন ঘন প্রস্রাব।
স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি খিদে বা তৃষ্ণা দেখা যাচ্ছে।
পায়ে বা গোড়ালিতে ফোলা।
সাত বছর বয়স শিশুর, এখনো বিছানায় প্রস্রাব করে।
প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, সহকারী অধ্যাপক, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ১৮, ২০১২
Leave a Reply