এক-একজনের চুল এক-এক ধরনের। চুলের ধরন বুঝে যত্ন নিতে হয়।
তৈলাক্ত চুলের যত্নঃ
- তৈলাক্ত চুল নানা কারণে হতে পারে।
- জন্মগত বা বংশগত কারণে। ঢ় অতিমাত্রায় হরমোনের কারণে।
- খুব বেশি চুল আঁচড়ানোর ফলে সেবাশিয়াস গ্রন্থি সক্রিয় হয়ে উঠলে।
- চুল খুব কম পরিষ্কার করলে।
যত্ন
- ব্রাশের বদলে চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াবেন। ঢ় তৈলাক্ত চুলের জন্য উপযোগী শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোবেন ও কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন।
- চুল ধোয়ার সময় শেষবার লেবুর রস মিশ্রিত পানি দিয়ে চুল ধোবেন।
- মাথায় স্কার্ফ ব্যবহার প্রয়োজন না হলে করবেন না।
- সুষম খাদ্য গ্রহণে সচেষ্ট হবেন।
মিশ্র চুলের যত্ন
- কিছু চুল আছে যার গোড়ায় তেলতেলে কিন্তু চুলের আগা রুক্ষ।
- রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে চুলের স্টাইল যেমন পার্মিং ইত্যাদি করতে গিয়ে এমনটা হতে পারে।
যত্নঃ
- তৈলাক্ত চুলের মত ব্রাশের বদলে চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ান।
- শুষ্ক ও তৈলাক্ত দুই ধরনের শ্যাম্পু এক দিন অন্তর অন্তর ব্যবহার করবেন। ঢ় শুধু চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন।
- রাসায়নিকদ্রব্য চুলে ব্যবহার করবেন না।
স্বাভাবিক চুলের যত্ন
- স্বাভাবিক চুল খুবই ভাগ্যের ব্যাপার।
- বংশগত কারণে চুল স্বাভাবিক সুন্দর হতে পারে।
- চুলের সঠিক যত্নের কারণেও চুল স্বাভাবিক থাকে।
- নির্দিষ্ট সময় পরপর চুলের আগা কাটতে হবে।
- সঠিক কন্ডিশনার ও শ্যাম্পু ব্যবহার প্রয়োজন।
- রাসায়নিক উপাদান পরিহার করতে হবে।
- সপ্তাহে এক দিন ম্যাসাজ করা ভালো।
- চুল খুব টেনে বাঁধবেন না, দিনে দু থেকে তিনবার চুল আঁচড়াবেন।
- ভেজা চুল কখনো বাঁধবেন না।
চুলে শ্যাম্পু করাঃ
- চুলের যত্নে চুল পরিষ্কার রাখার জন্য শ্যাম্পু অপরিহার্য উপাদান। হিন্দি শব্দ চ্যাম্পু থেকে শ্যাম্পু এসেছে। এর অর্থ মালিশ বা ম্যাসাজ। এর মানে বোঝা যায় শ্যাম্পু করার সময় আপনার মাথা ম্যাসাজ বা ঘষতে হবে।
- চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু বেছে নিতে হবে। তৈলাক্ত চুলে যেমন প্রায় প্রতিদিন শ্যাম্পু করা প্রয়োজন আবার শুষ্ক চুলে তা নয়। হেয়ার স্টাইল, জীবনযাত্রার মান, পরিবেশ দূষণ, আবহাওয়া এগুলোর ওপরে নির্ভর করে আপনি সপ্তাহে কতবার শ্যাম্পু করবেন।
- তৈলাক্ত চুল, প্রচুর শারীরিক পরিশ্রম, দূষণ, প্রতিদিন বাইরে যাওয়া এমনটা যদি হয় আপনার জীবনযাত্রা তবে প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে হবে। কিন্তু অন্যদের ক্ষেত্রে সপ্তাহে দু’দিন শ্যাম্পু ব্যবহার যথেষ্ট। চুলে ময়লা ভাব, মাথা চুলকাচ্ছে এমন হলে সাথে সাথে শ্যাম্পু করবেন। প্রতিদিন প্রয়োজনে শ্যাম্পু করলে চুল পড়ে এটা ভুল ধারণা। তবে অপ্রয়োজনে শ্যাম্পু করলে চুল শুষ্ক হয়ে ওঠে ও চুল ভেঙে যায়।
- এছাড়া সূর্যতাপ, লবণ পানি, ক্লোরিনযুক্ত পানি চুলের ক্ষতি করে। এরকম হলে যথাযথ শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুলের লবণ ভাব, ক্লোরিন ইত্যাদি দূর করতে হবে।
শ্যাম্পু করার পদ্ধতিঃ
- হালকা গরম পানিতে সম্পূর্ণ চুল ভিজিয়ে নিন।
- হাতে শ্যাম্পু ঢেলে নিন এবং দু’হাতে ঘষে নিয়ে তারপর পুরো মাথায় লাগান।
- আঙুলের ডগা দিয়ে ম্যাসাজ করে শ্যাম্পু লাগান।
- প্রয়োজনে চুল লম্বা হলে আবার শ্যাম্পু নিয়ে হাতে ঘষে তারপর চুলে লাগান।
- এভাবে কিছুক্ষণ হালকাভাবে ঘষার পরে চুল প্রচুর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- প্রয়োজনে পুনরায় শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন।
- চুল পরিষ্কার হয়েছে কি না, তৈলাক্ত ভাব কেটেছে কি না, আপনি হাত দিয়েই তা বুঝবেন।
- শ্যাম্পু পরিষ্কার করার জন্য প্রচুর পানি দিয়ে ধোবেন যাতে শ্যাম্পুর অবশিষ্ট অংশ চুলে লেগে না থাকে।
- শ্যাম্পু করার পর চুল খুব বেশি ঘষাঘষি না করে নরম তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে রাখবেন।
- মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে হালকাভবে চুল আঁচড়ে রাখবেন।
- ব্রাশ ব্যবহার করবেন না।
————————
ডা. ওয়ানাইজা
চেম্বারঃ যুবক মেডিক্যাল সার্ভিসেস , বাড়িঃ ১৬, রোডঃ ২৮ (পুরাতন), ১৫ (নতুন), ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা।
দৈনিক নয়া দিগন্ত, ২৩ মার্চ ২০০৮
Leave a Reply