বাচ্চাদের অ্যালার্জি একটা কমন সমস্যা। দেখা যায় চিংড়িমাছ বা গরুর মাংস খেলেই বাচ্চার গায়ে চুলকানি হচ্ছে। এছাড়া ধুলা বা ফুলের রেণুর স্পর্শেও আপনার সন্তানের একনাগাড়ে হাঁচি হচ্ছে। এ অবস্থায় কী করবেন, কিছুই বুঝতে পারছেন না। অ্যালার্জি নানা ধরনের। এর আছে নানা এজেন্ট। জেনে নিন অ্যালার্জি এবং তার চিকিৎসা সম্পর্কে। বাচ্চাকে অ্যালার্জি থেকে মুক্তি দিতে প্রথমত জানতে হয়ণ্ড অ্যালার্জি কাকে বলে। অ্যালার্জি আসলে শরীরের এক ধরনের পরিবর্তিত প্রতিক্রিয়া। শরীরে কোনো কিছু প্রবেশ করলে শরীর যদি তা গ্রহণ করতে না পারে তাহলে বিভিন্ন ধরনের অল্টারড রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে তা জানান দেয়। তবে অ্যালার্জি যে শুধু বাচ্চাদেরই হয় তা নয়, এর কোনো বয়সসীমা নেই। এমনকি মায়ের গর্ভে থাকাকালীনও শিশুর অ্যালার্জি হতে পারে। লিখেছেন তামান্না শারমিন
স্কিন অ্যালার্জি
অ্যালার্জেনের সঙ্গে স্কিন কন্ট্যাক্ট হওয়ার ফলে র্যাশ বা ডার্মাটাইটিস হতে পারে।
লক্ষণ
চুলকানি, ত্বক লাল হয়ে যায়। ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
পেটে অ্যালার্জি
বেশির ভাগ বাচ্চার ক্ষেত্রে অ্যালার্জির প্রকাশ পেট ব্যথার মাধ্যমে হয়।
চোখে অ্যালার্জি
চোখের মণির ওপর যে টিসু লেয়ার থাকে। বিভিন্ন অ্যালার্জেন থেকে তার ইনফ্লামেশন হয়ে অ্যালার্জি হতে পারে।
লক্ষণ
চোখ লাল হয়ে যায়। পানি বের হয়। চোখ ফুলে যায়। চুলকানির সমস্যা হয়।
অ্যালার্জি কেন হয়
স্বাভাবিকভাবেই মনে হতে পারে যে, সবার তো অ্যালার্জি হয় না। আসলে যাদের শরীরে অ্যালার্জেন প্রবেশ করলে ইমিউনোগ্লবিউলিন-ই বেশি নিঃসৃত হয়, তাদের ক্ষেত্রেই অ্যালার্জি দেখা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে হেরেডিটরি কারণে ইমিউনোগ্লবিউলিনের পরিমাণে হেরফের ঘটে। যদি বাবা-মায়ের কোনোও অ্যালার্জি হিস্ট্রি থেকে থাকে তাহলে বাচ্চার অ্যালার্জি ডেভেলপ করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
কমন অ্যালার্জি এজেন্ট
০০ ধুলোবালি, ফুলের রেণু
০০ খাবার-দাবার, যেমন: চিংড়িমাছ, গরুর মাংস
০০ সাবান, ডিটারজেন্ট, প্লাস্টিক
০০ বিড়াল, কুকুর বা অন্য প্রাণীর লোম
০০ আরশোলা, মাইট
০০ অ্যানিমেল স্টুল
প্রিভেনশন
অ্যালার্জির প্রিভেনশনে আগে জানতে হয় কী থেকে অ্যালার্জি হচ্ছে। এর জন্য অ্যালার্জির টেস্ট অবশ্যই প্রয়োজন।
সাধারণত ২ ধরনের অ্যালার্জি টেস্ট হয়ে থাকে। প্যাচ টেস্ট ও ব্লাড সিরাম টেস্ট।
প্যাচ টেস্ট
এ টেস্টে পিঠের ওপর বিভিন্ন অ্যালার্জেন দিয়ে দেখা হয়, কোনো প্রতিক্রিয়া হয় কিনা। পিঠের যে জায়গাটুকুতে এ পরীক্ষা করা হয় সেখানে পানি না লাগানোই ভালো। এ পরীক্ষার জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন।
ব্লাড সিরাম টেস্ট
০০ এ টেস্টে সিরাম থেকে অ্যালার্জেন আলাদা করা হয়।
০০ এ টেস্টগুলোর মাধ্যমে আপনি অ্যালার্জেন সম্বন্ধে জানতে পারবেন এবং আপনার বাচ্চাকে সেসব জিনিস থেকে দূরে রাখতে পারবেন।
কিছু বিশেষ তথ্য
০০ আবহাওয়া পরিবর্তন হলে অ্যালার্জি সিভিয়ার হতে পারে।
০০ কোনো কোনো অসুখের ক্ষেত্রে ডাক্তাররা কিছু জিন আলাদা পয়েন্ট করে থাকেন। একইভাবে বিশেষজ্ঞদের মতে অ্যালার্জির পেছনে ‘অ্যালার্জি জিন’-এর হাত থাকতে পারে। যদিও এখনও সঠিকভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।
০০ ডাক্তাররা মনে করেন, শরীরে ফলিক এসিড কম থাকলে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ট্রিটমেন্ট
প্রিভেনশন হচ্ছে ট্রিটমেন্টের একটা বড় অংশ। এছাড়া অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ওষুধ যেমন হাইড্রক্সিজিন অ্যালার্জি কমাতে সাহায্য করে। অ্যালার্জি থেকে যদি শ্বাসকষ্ট হয় সে ক্ষেত্রে স্টেরয়েড দেয়া বাধ্যতামূলক।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জুন ০৮, ২০১০
Leave a Reply