মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন ব্যবহার করে শ্বসতন্ত্রের বৈকল্য বা রেসপিরেটরি ফেইল্যুর রোগীকে বাঁচানো হয়। মারাত্মক জটিল হাঁপানী, ক্রনিক ব্রংকাইটিস সহ ভয়ংকর ধরনের আঘাতজনিত কারণে এই শ্বাসতন্ত্রের বৈকল্য ঘটতে পারে। তখন জীবন বাঁচানোর সর্বশেষ প্রচেষ্টা নেয়া হয় মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনের সাহায্য নিয়ে। ভেন্টিলেটর কাজ করে দু’ভাবে; যেমন গ্যাসকে ফুসফুসের ভেতরে পাম্প নিয়ে (যাকে পজেটিভ প্রেসার মেশিন বলে) অথবা বুকের চারদিকে একটি ঋণাত্বক চাপ সৃষ্টিও করে যাতে শ্বাস নেয়া যায়। বেশীর ভাগ পজেটিভ প্রেসার মেশিনে গ্যাসকে প্রদান করা হয় রোগীর কাছে একটি নন কিং টিউব দিয়ে যাকে ইন্সপিরেটরি লিম্ব বলে। গ্যাসগুলোকে তাপ দেয়া এবং আর্দ্র করা হয় একটি পানির আধারের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত করা মাধ্যমে। একটি জীবাণুর জন্য ছাকটি এবং একটি অক্সিজেন বিশ্লেষক এ এনালাইজার এই যন্ত্রে থাকে। গ্যাস যখন চালিত হয় তখন ইন্সপিরেটরি লিম্বে এর চাপের বৃদ্ধি ঘটে এবং এই শ্বাস পথের চাপকে মাপা হয় একটি ম্যানোমিটার দিয়ে। শ্বাস ছাড়ার সময় গ্যাস গুলো ফিরে যায় এক্সপিরেটরির লিম্ব দিয়ে। যেখানে প্রতিটি প্রশ্বাসের আয়তনকে মাপা হয় এবং দেখানো হয়। বিপদ সংকেত পদ্ধতিও জড়িত করা হয় যা উত্তর দেয় যখন শ্বাস পথের চাপ অথবা প্রশ্বাসের আয়তনে কোন ব্যতিক্রম ঘটে। যে কোন ধরনের রেসপিরেটরি ফেইল্যুর বা শ্বাসতন্ত্রের বৈকল্যে আক্রান- রোগীর চিকিৎসায় মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন পড়তে পারে। এটা সাধারণত করা হয় একটি কাফড এনডোট্রোকিয়াল টিউব রোগীর মুকগহব্বর অথবা নাকের ভিতর দিয়ে সাধারণ অজ্ঞান করার মাধ্যমে। ইন্টারমিটেন্ট পজেটিভ প্রেসার ভেন্টিলেশনকে এখন পর্যন- সবচেয়ে প্রচলিত ধরনের মেকানিক্যাল ভেন্টিলেসন হিসাবে গণ্য করা হয়। শ্বাসতন্ত্রের বৈকল্যের এক নম্বর ধরনের কিছু কিছু ক্ষেত্রে পিইইএফ (পজেটিভ এ্যান্ড এক্সপিরেটরি প্রেসার) কে একটি কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হয় বায়ু চলাচল বা ভেন্টিলেশন এবং রক্ত প্রবাহের মাঝে বিতরণের তারতম্য ঠিক রাখার জন্য। শক্তিশালী ভেন্টিলেটর যে গুলো নির্ধারিত আয়তনের গ্যাস প্রদান করে সেগুলো দুই নম্বর ধরনের শ্বাসতন্ত্রের বৈকলে ব্যবহার করা হয়, যেখানে শ্বাসনালীতে বাধাজনিত শ্বাসকষ্ট থাকে। বাতাসের আয়তন এবং অক্সিজেনের ঘনত্ব যেটাকে ভেন্টিলেটর দিয়ে প্রবাহিত করা হয় সেটাকে সুবিন্যস- করা হয় রক্তের অক্সিজেনের চাপ এবং কাবর্ন-ডাই-অক্সাইডের চাপকে স্বাভাবিক মাত্রায় নেবার জন্য এবং যদি সম্ভব হয় বায়ু চলাচলের সাহায্যকে কমাতে হবে যেই মাত্র শ্বাসতন্ত্রের চিকিৎসাকে সার্থকভাবে করা যায়।
মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনের জটিলতা:
০ উচ্চ মাত্রায় পিইইএফ-এর ফলে ফুসফুসের পর্দায় অথবা বক্ষের অভ্যন-রে বাতাস জমতে পারে। ক্স জীবাণু সংক্রমণের আশংকা বেশী থাকে। ক্স অনেকক্ষণ এই যন্ত্র থাকার ফলে শ্বাসনালীর উপরের অংশ অর্থাৎ ট্রেকিয়াতে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। ক্স শ্বাসতন্ত্রের বৈকল্যের দুই নম্বর ধরনের রোগীদের বেলায় এই পদ্ধতি থেকে সরে আসতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
০ শিশুদের ক্ষেত্রে ব্রংকোপালমোনা ডিসপ্লাসিয়া দেখা দিতে পারে। এতসব জটিলতার কথা ভাববার অবকাশ থাকে না যখন একজন মৃত্যুপথযাত্রী রোগী চিকিৎসকের কাছে আসে। শ্বাসতন্ত্রের বৈকল্য বা রেসপেটরি ফেউল্যুর এর আক্রান- মুমূর্ষ রোগীদের চিকিৎসা মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন খুবই প্রয়োজনীয় একটি জীবন বাঁচানো পদক্ষেপ।
অধ্যাপক ডা: ইকবাল হাসান মাহমুদ
বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ
ইকবাল চেষ্ট সেন্টার, ৮৫, মগবাজার, ওয়ারলেছ মোড়, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ফেব্রুয়ারী ২০, ২০১০
inamul
sir ki korle hapni niyontron kora jay
Bangla Health
“নিজেই নিয়ন্ত্রণ করুন হাঁপানি” – এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।