প্রায়শই বলতে শোনা যায় আমার মুড ভালো নেই। কাজে মন বসছেনা। পড়াশোনাতে অমনযোগী, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও এমন উক্তি শোনা যায়। এই মুড ভালো মন্দ নির্ভর করে শরীরে সেরোটিনিন নামে এক ধরনের হরমোনের ওপর। এই বিশেষ হরমোনটি আমাদের সুখ এবং সুন্দর অনুভূতিকে উজ্জীবীত করে। রক্তে যদি সেরোটিনিনের মাত্রা কমে যায় তখন মুড খারাপ হতে থাকে। আর শরীরের মধ্যে সেরোটিনিন তৈরীতে সহায়াতা করে ট্রিপটোফেন নামক এক ধরনের উপাদান। আর এই ট্রিপটোফেন থাকে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায়। শুধু মুড খারাপ নয়, শরীরে সেরোটিনিনের অভাব হলে উদ্বেগ বাড়ে. হজমে সমস্যা হয়, বিষন্ন হয়ে উঠতে পারে মন। মেজাজ হতে পারে খিটখিটে। লন্ডন এবং প্যারিসের বিভিন্ন শিশু হাসপাতালে কাজ করেছেন ড: ক্যারোলাইন লংমোর। তার মতে সঠিক খাদ্য তালিকা নির্বাচন করেই শরীরে সেরোটিনিন এর স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখা যায়। তিনি ১০টি খাদ্যের কথা বলেছেন, যাতে সর্বাধিক পরিমাণে ট্রিপটোফেন রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কলা।
টপটেন গুড ফুডস: মুগের ডাল, লবষ্টার, তার্কি, অ্যাসপ্যারাগাস, সূর্যমুখীর বীজ, কটেজ সিড, আনারস, টপু বাধাকপিসহ সবুজ পাতাযুক্ত সবজি এবং কলা। অন্যান্য আরও যেসব মুড ফুড রয়েছে তা হচ্ছে, মুরগীর মাংস, সালমন ফিস, টোনা ফিস, বাদাম, গাজর ইত্যাদি। এছাড়া খাদ্যের ফলেট বা ফলিক এসিড রক্তের স্যাডিনোর্সেল মেথোনিন মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। আর এই উপাদানটি রক্তের সেরোটিনিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই ফলেট সমৃদ্ধ খাবার সবুজ শাক-সবজি, বিটরুট বেকড বিনস, স্ট্রবেরি, কমলার জুস, ছোট গরুর কলিজা, ডাল খেতে হবে। সিডনিতে অবস্থিত ব্লাক ডগ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা: গর্ডন পার্কার এর মতে, শরীরের সেরোটিনিনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে খাদ্যের পাশাপাশি ফুড সাপ্লিমেন্টও কাজে আসতে পারে। তবে অবশ্যই কোয়ালিটি কন্ট্রোল এর ওপর স্ববিশেষ জোর দিতে হবে। অপর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, মুড ভালো না থাকলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ভুলবুঝাবুঝি হতে পারে। চির ধরতে পারে দাম্পত্য সম্পর্কেও। তাই শরীরে সেরোটিনিনের মাত্রা অবশ্যই স্বাভাবিক রাখা দরকার এবং যা কিনা আমরা সঠিক খাদ্য তালিকা নির্বাচন করেও সমাধান করতে পারি। বাড়াতে পারেন শারীরিক ক্ষমতা ও মনোবল।
ডা: মোড়ল নজরুল ইসলাম
চর্ম, এলার্জি ও শারীরিক মিলনসমস্যা বিশেষজ্ঞ
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০১০
Leave a Reply