এখন পুলি, পিঠা খাবার সময়। তাই উৎসবে আনন্দে মেতে উঠবে সবাই। শর্করা কম বেশি খাওয়া হবে সবারই। অনুরোধ, উপরোধেও কিছু খাওয়া হবে। তাই যাঁদের ডায়াবেটিস অথবা রক্তে সুগার চড়াই উৎরাই যাদের হয় ভোজনের পর, এঁদের জন্য সমস্যা আসছে।
কিছুটা সমাধানের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। শর্করা শ্বেতসার খাদ্য খেলেও এর প্রভাবকে কিছুটা হলেও লাঘব করার একটি উপায় পেয়েছেন তাঁরা। কয়েকটি গবেষণায় এর প্রমাণ মিলেছে। শর্করা খাবার খাবেন তবে এবার কিছু ভিনেগার যোগ করুন। তাহলে খাদ্যের শর্করার রক্তে প্রবেশ কিছুটা ধীর হয়, সম্ভবত: ভিনেগার পরিপাকের এমন সব এনযাইমকে রোধ করে যেসব এনযাইমের কাজ হলো শ্বেতসারকে শর্করার ক্ষুদ্র কণায় রূপান-রিত করা।
ইটালিয়ান গবেষকদের একটি গবেষণা থেকে দেখা যায় যখন সুস্থ লোকেরা কোনও বেলার খাবারের সঙ্গে স্যালাড ড্রেসিং হিসেবে ৪ চা চামচ (২০ মিলি লিটার) সাদা ভিনেগার গ্রহণ করলেন তখন রক্তে শর্করার মানের উন্নতি কমে গেলো ৩০ শতাংশ, অন্য স্যালাড ড্রেসিং যারা গ্রহণ করলেন, এদের তুলনায় ভিনেগার ড্রেসিং যারা গ্রহণ করলেন, এদের রক্তে শর্করার উন্নতি হ্রাস পেলো ৩০%।
২০০৪ সালে আমেরিকান ডায়াবেটিস এসোসিয়েশনের জার্নাল ডায়াবেটিস কেয়ারে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেলো, ডায়াবেটিস রয়েছে বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স রয়েছে এমন লোক শ্বেতসার পূর্ণ খাবার আগে যারা ভিনেগার সুলশন খেয়েছিলেন এদের মধ্যে রক্ত সুগার মান সুমিত মানে থেকেছিলো, এর বদলে যারা অন্য কিছু যেমন প্লাসিবো নিয়েছিলেন এদের রক্তের সুগার উন্নতি হয়েছিলো বেশ। তবে ডায়াবেটিস এসোসিয়েশনের মুখপাত্র সুই ম্যাকলাফলিন বলেন, আমরা রক্তের সুগার ঠিকরাখা, সুস্থ সবল থাকার জন্য যাই করিনা কেন, ব্যায়াম করা এবং খাদ্যের পরিমাণ এদুটোর বিকল্প কিছু নেই। তবে তিনি এও বলেন, যাদের ডায়াবেটিস এরা চেষ্টা করে দেখতে পারেন, দুটো একই রকম খাবার খেলেন, একবেলার খাবার ভিনেগার সহ অন্যটি ভিনেগার ছাড়া, এক দুটোর ফলাফলের পার্থক্য দেখতে পারেন। গবেষণা থেকে জানা গেছে, আহারের সঙ্গে ভিনেগার সহ স্যালাড খেলে রক্তের সুগার এর উপর এর প্রভাব হ্রাস করে।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরী সার্ভিসেস বারডেম, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০১০
Leave a Reply