ডায়াবেটিসকে বলা হয় সারা জীবনের রোগ।এই রোগের কোনস্থায়ী চিকিৎসা নেই।কিছু নিয়ম শৃঙ্খলা মেনেচললে ডায়াবেটিসেআজীবন ভাল থাকা যায়।প্রতিদিনই যে কাজগুলো করা উচিত:
০ ডাক্তার বা ডায়াবেটিশিয়ান যে স্বাস্থ্যকর আহারের পরিকল্পনাটি দিয়েছেন তা প্রতিদিন অনুসরণ করে চলা উচিত।
০ সপ্তাহে অন-ত: ৫ দিন শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করা উচিত। কোন ধরণের শরীরর্চ্চা বা ব্যায়াম উপযোগী হবে তা ডাক্তারের কাছে জেনে নেওয়া ভালো।
০ ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দেয়া হয়ে থাকলে যথাসময়ে ওষুধ গ্রহণ করা উচিত।
০ রক্তের গ্লুকোজ মান চেক্ করে দেখা উচিত নির্দেশমত। প্রতিবার রক্তের গ্লুকোজ চেক করা হলে ফলাফলটি রেকর্ড বইয়ে লিপিবদ্ধ রাখা উচিত।
০ মাঝে মাঝেই দেখতে হবে পায়ে কোনও কাটা, ফাটা, ফোস্কা, ক্ষত, ফোলা বা লাল হয়ে যাওয়া আছে কিনা। পায়ের আঙ্গুলের নখেও ক্ষত আছে কিনা, দেখে নেয়া ভালো।
০ দাঁত ও মাড়ি ব্রাশ করা ও ফ্লস করা উচিত নিয়মিত।
০ ধূমপান অবশ্যই করবেন না।প্রতিবার চেক্ আপের সময় ডাক্তার যেসব জিনিষ দেখে নেবেন:
০ রক্তের গ্লুকোজ মানের রেকর্ডগুলো: দেখতে হবে কোনও সময় রক্তের গ্লুকোজ খুব কমে বা বেড়ে গিয়েছিলো কিনা।
০ ওজন: শরীরের যথাযথ ওজন কত হওয়া উচিত তা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নেওয়া ভালো। ওজন বেশি হলে কিভাবে স্বাভাবিক ওজনে নেমে আসা যায়, তাও জানতে হবে।
০ রক্তচাপ: বেশির ভাগ লোক যাদের ডায়াবেটিস তাদের রক্ত চাপ মান থাকা উচিত ১৩০/৮০-এর নিচে। কিভাবে এ মানে পৌঁছানো যাবে তাও জেনে নেওয়া ভালো।
০ ডায়াবেটিসের জন্য ওষুধের পরিকল্পনা: ডায়াবেটিসের ওষুধ নিয়ে কোনও সমস্যা হলে তাও ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞেস করা ও পরামর্শ নেওয়া উচিত।
০ পদযুগল: পায়ে কোনও ক্ষত আছে কিনা তাও স্বাস্থ্য পরিচর্যাকারী দেখে নেবেন।
০ ব্যায়ামের পরিকল্পনা: সক্রিয় থাকতে হলে কোন ধরণের ব্যায়াম উপযোগী তাও ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।০ আহার পরিকল্পনা: কি খাচ্ছেন, কি পরিমাণ খাচ্ছে, কখন খাচ্ছে সবই আলোচনা করে নেয়া ভালো।
০ ধূমপানের অভ্যাস: এমন বদভ্যাস থাকলে ডাক্তারের কাছে জেনে নেয়া ভালো কি ভাবে একুঅভ্যাস ছাড়া যায়।
** বছরে অন্তত: দু’বার এ পরীক্ষাগুলো বা কাজগুলো করা উচিত:
০ এআইসি টেস্ট: এই রক্ত পরীক্ষাটি বছরে অন্তত: দু’বার করাতে হবে। ফলাফল থেকে জানা যাবে গত দু’তিন মাস রক্তে গ্লুকোজের গড় মান কত ছিলো।
০ রক্তে লিপিড পরীক্ষা: উপবাসী রক্তে করানো উচিত।
০ মোট কোলেস্টেরেল : লক্ষ্য হওয়া উচিত = ২০০-এর নিচে রাখা০ এল ডি এল : লক্ষ্য হবে ১০০-এর নিচে রাখা
০ এইচ ডি এল : পুরুষের জন্য ৪০ এর উপরে। নারীদের জন্য ৫০ এর উপরে।
০ ট্রাইগ্লিসাবাইড : লক্ষ্য ১৫০ এর নিচে রাখা।
০ কিডনির কাজ কর্ম পরীক্ষা করে দেখা
০ প্রস্রাবে প্রোটিনের উপস্থিতি রয়েছে কিনা। সম্ভব হলে রক্তে ক্রিয়োটিনিন মান (০.৬-১.২)
০ চোখ বিষ্ফারিত করে পরীক্ষা : চোখের সম্পূর্ণ পরীক্ষা করানো উচিত বছরে একবার
০ দাঁত পরীক্ষা : দাঁতের পরিষ্কার ও চেক্ আপের জন্য বছরে দু’বার ডেন্টিস্টকে দেখানো উচিত।
০ ফ্লু শট্ : প্রতি বছর একবার ফ্লু শট্ নেওয়া ভালো।
০ পদদ্বয় পরীক্ষা : স্বাস্থ্য পরিচর্যাকর্মীকে পা’দুটো পরীক্ষা করে দেখতে বলুন, পায়ের স্নায়ু ও রক্ত চলাচল ঠিক আছে কিনা।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরী সার্ভিসেসবারডেম, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জানুয়ারী ২৩, ২০১০
Leave a Reply