মামুন সাহেব (ছদ্মনাম)। বয়স ৩৫ পেরিয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রম করেন। নিজেই গাড়ি চালান। মাথায় রাজ্যের টেনশন নিয়ে কাটে দিন। আয়েশের জন্য ফোমের বিছানায় ঘুমান। হঠাত্ একদিন সকালে উঠে দেখলেন, ঘাড় ঘোরাতে পারছেন না। প্রচণ্ড ব্যথা। ব্যথায় হাত ঝিঁঝি করছে। পিঠের দিকেও যাচ্ছে ব্যথা।
এ অবস্থায় অনেক ক্ষেত্রেই রোগীরা চিকিত্সকের পরামর্শ নেন না। নিজে নিজেই ব্যথার ওষুধ খান বা গরম সেঁক দিয়ে ব্যথা উপশমের চেষ্টা করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন, ঘাড়ের ব্যথা হাত বা পিঠের দিকে যাচ্ছে কি না। এ রকম হলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ঘাড়ের একটি এক্স-রে করান। এতেই আপনার ঘাড় ব্যথার প্রকৃত কারণ বের হয়ে আসবে।
চিকিত্সা
ব্যথাটি যদি স্পন্ডাইলোসিস-জনিত কারণে হয়ে থাকে, তাহলে চিকিত্সক আপনাকে ব্যথার ওষুধ দেবেন। সঙ্গে মেকোবালাসিন ও ভিটামিন বি-১২ও দেওয়া যেতে পারে। ঘাড় ব্যথার অন্যতম প্রধান চিকিত্সা হলো বিশ্রাম ও পর্যাপ্ত গভীর ঘুম। এ জন্য একটি বেনজোডায়াজেপিন-জাতীয় ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।
দরকার ফিজিওথেরাপি
এ ধরনের ব্যথার দ্রুত কার্যকর ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন চিকিত্সা হলো ফিজিওথেরাপি। ব্যথার ওষুধ বেশির ভাগ সময়ই নানা রকম উপসর্গ সৃষ্টি করে থাকে। তাই প্যারাসিটামলজাতীয় ব্যথানাশকের সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত ফিজিওথেরাপিই হতে পারে প্রধান চিকিত্সা।
অভ্যাস পরিবর্তন করুন
কম্পিউটারের সামনে দীর্ঘ সময় বসে থাকা। গাড়ি চালানো বা ফোমের বিছানা ব্যবহার ঘাড় ব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ। তাই ঘাড় ব্যথা হলে অবশ্যই এ ধরনের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। আর বিশ্রাম ও সারভাইক্যাল কলারের ব্যবহার দ্রুত ব্যথা সারাতে সাহায্য করবে।
শেষ কথা
শুধু স্পন্ডাইলোসিস নয়, বিভিন্ন কারণে ঘাড় ব্যথা হতে পারে। তাই কারণ নির্ণয় চিকিত্সার প্রথম ও প্রধান ধাপ হওয়া উচিত।
মোহাম্মদ আলী
ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ২৫, ২০০৯
Leave a Reply