অগ্নিসার (Agnisara):
পদ্ধতি:
অগ্নিসার একধরনের নৌলিক ধৌতি। এটা দাঁড়িয়ে বা যে কোন আসনে বসে দু’ভাবেই করা যেতে পারে। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত দুটো কোমরের দু’পাশে রাখুন। অথবা পদ্মাসন বা যে কোন ধ্যানাসনে বসে হাত দুটো হাঁটুর উপর রাখুন। এবার পেট ও তলপেটকে উড্ডীয়ান অবস্থায় আনুন। অর্থাৎ প্রথমে শ্বাস ত্যাগ করে উদর বায়ুশূন্য করে কুম্ভক করুন বা দম বন্ধ করে থাকুন। এ অবস্থায় পেট ও তলপেটের মাংসপেশীকে শিথিল করে পরক্ষণেই পেট ও তলপেট কুঞ্চিত করে পেশী মেরুদণ্ডের দিকে টানতে থাকুন এবং পুনরায় শিথিল করে আবার কুঞ্চিত করুন ও পরক্ষণেই শিথিল করে দিন। এভাবে এক কুম্ভকে আয়াসহীনভাবে যতবার সম্ভব প্রক্রিয়াটি অভ্যাস করুন। এরপর ধীরে ধীরে শ্বাস গ্রহণ করুন এবং পেট ও তলপেট শিথিল করে দিন। ৮/১০ বার প্রক্রিয়াটি অভ্যাস করুন।
উপকারিতা:
এই ক্রিয়া উদরের যাবতীয় পীড়া নিরাময়ে সাহায্য করে। পাকস্থলী, প্লীহা, যকৃৎ, অগ্ন্যাশয়, মূত্রাশয়, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্র, শারীরিক মিলনগ্রন্থি ইত্যাদি সবল ও সক্রিয় থাকে। মেদ কমে পেট ও তলপেটের পেশী দৃঢ় হয়। কোষ্ঠবদ্ধতা সেরে যায় এবং শারীরিক মিলনে অক্ষম ব্যক্তিদের সক্ষম হতে সাহায্য করে।
নিষেধ:
যাদের হৃদযন্ত্র দুর্বল তাদের এবং অল্পবয়সী মেযে যাদের ঋতু প্রতিষ্ঠিত হয়নি তাদের জন্য এই ক্রিয়া অভ্যাস করা নিষেধ।
সহজ অগ্নিসার (Sahaja Agnisara):
পদ্ধতি (ক):
হাত দুটো জানুর উপর রেখে কোমর থেকে দেহের উপরের অংশ সামান্য একটু সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে দাঁড়ান। এবার দম নিতে নিতে পেটের নিম্নভাগ ও নাভিদেশ আকুঞ্চন করতে করতে যতটা সম্ভব মেরুদণ্ড-সংলগ্ন করার চেষ্টা করুন। শ্বাস নেযা শেষ হলে এখন শ্বাস ত্যাগ করতে করতে আকুঞ্চন শিথিল করে দিন। এভাবে ২০/২৫ বার প্রক্রিয়াটি অভ্যাস করুন।
পদ্ধতি (খ):
সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ডান হাতের বুড়ো আঙুল ডানদিকের কোমরের খাঁজে এবং বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল একইভাবে বাঁদিকের কোমরে রাখুন। এবার উভয় কোমরে বুড়ো আঙুল দৃঢ়ভাবে রেখে দু’হাতের অন্য সব আঙুল দিয়ে নাভিদেশ চাপ দিয়ে সঙ্কুচিত করে যতটা সম্ভব মেরুদণ্ড-সংলগ্ন করুন। নাভিদেশ মেরুদণ্ডে লাগার সঙ্গে সঙ্গে নাভির উপর আঙুলগুলো আলগা করে নাভিপ্রদেশ চাপমুক্ত করে শিথিল করে দিন। এভাবে ২০/২৫ বার প্রক্রিয়াটি অভ্যাস করুন।
উপকারিতা:
প্রক্রিয়াটি অভ্যাসকালে পেট ও তলপেট রক্তে প্লাবিত হয় বলে তলপেটে জমা সমস্ত রোগজীবাণু নাশ হয়। আমাশয়, কোষ্ঠতারল্য প্রভৃতি রোগ হয না এবং থাকলেও তা নিরাময় হয়ে যায়। যতদিন অগ্নিসার ধৌতি আয়ত্তে না আসে ততদিন এই সহজ অগ্নিসার ক্রিয়া অভ্যাস করা উচিত।
নিষেধ:
যাদের হৃদযন্ত্র দুর্বল তাদের এবং অল্পবয়সী মেযে যাদের ঋতু প্রতিষ্ঠিত হয়নি তাদের জন্য এই ক্রিয়া অভ্যাস করা নিষেধ।
Leave a Reply