বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়জুড়ে গরম আবহাওয়া থাকে। এ সময়টায় বাতাসে আর্দ্রতা অনেক বেশি থাকে। তাই এই সময় চারদিকে গুমোট ভাব লক্ষ করা যায়। রোদ আর বৃষ্টি যা-ই হোক না কেন, ছেলেদের একটু বেশি বাইরে বের হতে হয়। এই মিশ্রিত আবহাওয়ায় ছেলেদের ত্বকের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে এবং বারবার ত্বক ঘামতে থাকে। এ সময় তাই দরকার ত্বকের বাড়তি যত্ন। বাইরে রোদ, ঘাম ও ধুলোবালির কারণে ত্বক অনেক সময় রুক্ষ হয়ে যায়। নিয়ম মেনে ত্বকের যত্ন নিলে বছরের এই সময়ও আপনার ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, সুন্দর ও সতেজ। এমনটিই জানালেন পারসোনা অ্যাডামসের রূপবিশেষজ্ঞ এম মিজানুর রহমান।
সারা দিন সব সময়
ঋতুভেদে ছেলেদের ত্বক কয়েক রকম হয়ে থাকে। ত্বকের ভিন্নতার ওপর যত্নেও কিছুটা পার্থক্য রাখা উচিত। এ সময় গরমের কারণে ছেলেদের সাধারণত তৈলাক্ত ত্বক বেশি লক্ষ করা যায়। এ ছাড়া দেখা যায় মিশ্র ত্বক।
তৈলাক্ত ত্বক
গরমে বেশির ভাগ ছেলেরই ত্বক তৈলাক্ত থাকে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য লেবুর রসের সঙ্গে দুধের স্বর মিশিয়ে পুরো মুখে লাগিয়ে রাখুন। বেশ কিছু সময় রাখার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে ফেলুন। এ ছাড়া মুলতানি মাটির সঙ্গে কাঁচাহলুদের রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। পুরো মুখে মাখিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। শুকিয়ে এলে পানির সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করুন। এতে যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তারা ভালো ফল পেতে পারেন। গরমের এই সময় অনেক ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত হয় না। কিন্তু একেবারে শুষ্কও থাকে না। একে বলে মিশ্র ত্বক। যাঁদের মিশ্র ত্বক, তাঁরা মসুর ডাল বেটে পেস্টের সঙ্গে ধনেপাতার রস মিশিয়ে ৩০ মিনিটের মতো রাখুন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। লেবুর রসের সঙ্গে গোলাপজল ও ডাবের পানি মিশিয়ে মুখ প্রতিদিন দুইবার পরিষ্কার করুন। এ ছাড়া মধুর সঙ্গে দুধের সরবাটা ও গোলাপের পাপড়ি মিশিয়ে ত্বকে লাগান। এতে ছেলেদের ত্বক মসৃণ ও নরম থাকে। গরমের সময় ছেলেরা ঠান্ডা দুধে গোলাপজল মিশিয়ে খেলে শরীরও ঠান্ডা থাকে, ত্বকও উজ্জ্বল হয়।
নিতে হবে বাড়তি যত্ন
বছরের এই সময়টা গরম পড়ে অনেক বেশি। গরমের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় দিনই বৃষ্টি হয়। বাইরে বেরোনোর সময় অবশ্যই সঙ্গে সানগ্লাস ও ছাতা রাখবেন। দিনে ঘুম থেকে ওঠার পর পরবর্তী ঘুমের আগ পর্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন। বাইরে থেকে ফিরে হাত-মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। বাইরে যাওয়ার আগে এবং বাইরে থেকে আসার পর পারলে গোসল করুন। প্রতিবার গোসলের পর শরীর নরম তোয়ালে দিয়ে এমনভাবে চেপে মুছুন, যেন ভেজা ভাব বজায় থাকে। দিনে প্রচুর পরিমাণ পানি খাবেন। আর গোসলের সময় পানিতে তাজা সুগন্ধি ফুলের পাপড়ি মিশিয়ে নিন। গরমে আরামদায়ক পোশাক পরুন। সিনথেটিক বা সিল্ক-ধরনের কাপড় এড়িয়ে সুতির পোশাক পরুন।
খাদ্যাভ্যাসে নজর দিন
গরমের সময় খাবারদাবারের ক্ষেত্রে এ সময়টাতে একটু বেশিই নজর দিতে হবে। এ সময় প্রচুর পানি খেতে হবে। পানির সঙ্গে সঙ্গে পানীয় খাবার বা পানিজাতীয় ফল খেলে ভালো হয়। শুধু পানি খেতে খারাপ লাগলে খানিকটা লেবু-লবণও মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালীন ফল তরমুজ, বাঙ্গি, লিচু, আম ইত্যাদি ফল বা ফলের রস খেলে শরীর অনেক ভালো থাকে। মসলাযুক্ত খাবার, বেশি পেঁয়াজ-রসুন দিয়ে রান্না করা মাংস এড়িয়ে পাতলা ঝোল করে রান্না মাছ খাওয়া উচিত। দুধ-চায়ের বদলে লাল-চা দেবে অধিক স্বস্তি।
মনে রাখুন এ সময়
রোদে বেরোনোর অন্তত আধাঘণ্টা আগে সানস্ক্রিন লাগান। পেট্রোলিয়াম জেলিজাতীয় কোনো কিছু এমন ঋতুতে ঠোঁটে লাগানো ঠিক নয়। এতে রোদে ঠোঁট কালো হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বাইরে থেকে এসে ত্বকে ডিমের কুসুম লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক সজীব হয়ে উঠবে। পেঁপেও ত্বকের পক্ষে খুব উপকারী। ব্যবহার করলে ত্বক সতেজ থাকবে।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ১৩, ২০১০
Leave a Reply