যে কোনো ওষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিদ্যমান। ঠিক তেমনি ভায়াগ্রার ক্ষেত্রেও এটি সত্য। প্রচলিত নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, মুখমন্ডল রক্তবর্ণ ধারণ করা, পরিপাকে অসুবিধা ইত্যাদি এবং শরীরের নানা স্থানে ব্যথা অনুভূত হওয়া। এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ফেডারেল ড্রাগ এ্যাসোসিয়েশন আরো বলেছে যে, ভায়াগ্রা সেবনে দৃষ্টি শক্তিতে সাময়িক পরিবর্তন হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে আলোকের অতি সংবেদনশীলতা বা সেনাসিটিভিটি পরিলক্ষিত হয়েছে এবং সেই সাথে চোখে সামান্য ঝাপসা দেখার অনুভূতি ও দেখা গেছে। গত বছরের মে মাসে আমেরিকান একাডেমি অব অপথালমোলজি সানফ্রান্সসিসকো বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছিল। বিশেষত তারা যা বলেছিলেন তা হলো এ সমস্যাটিকে জরুরি ভিত্তিতে বিবেচনা করা। ডক্টর মাইকেল এরকম বলেছেন যে, এফডিএ পরিচালিত নানা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে যারা অতিরিক্ত মাত্রায় বা ডোজে সিলডেনাফিল সাইট্রেট বেশ কিছু দিন সেবন করে তাদের বেলায় রেটিনাল ডিসফাংশন বা রেটিনাতে কতক গন্ডগোল দেখা দিতে পারে এবং এর ফলশ্র“তিতে কয়েক ঘন্টাব্যাপী আমাদের দৃষ্টি শক্তির ওপরে এর প্রভাব পড়তে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ডক্টর মাইকেল এরকম অপথালমোলজি বা চক্ষু বিষয়ক বিজ্ঞানের একজন প্রফেসর ছিলেন। রেটিনাল ফাংশন বা রেটিনাল কার্যকারিতা দেখার জন্য তিনি কতক ইলেট্রিক্যাল পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্লিনিক্যাল স্টাডি করে দেখেছেন শতকরা ৩০ থেকে ৫০ ভাগের ক্ষেত্রে এরকমটি হতে পারে। তবে তা সাধারণত উচ্চ মাত্রার বা উচ্চ ডোজের ভায়াগ্রা সেবনে ৫ ঘন্টা পর্যন্ত বিরাজ করতে পারে। ইতিমধ্যে এ ব্যাপাটি আরো গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। ফলে যাদের চোখের রেটিন্যাল কন্ডিশন বা রেটিনাল ডিসফাংশন রয়েছে যেমন চোখের ম্যাকুলার ক্ষয়জনিত রোগ বা রেটিনাল পর্দায় পদাহ যাকে বলা হয় রেটিনাইটিস পিগম্যান্টোসা তাদের ক্ষেত্রে ওষুধটি যতদূর সম্ভব কম ডোজে সেবন করা প্রয়োজন। ফেডারেল ড্রাগ এ্যাসোসিয়েশ এক্ষেত্রে একটি মাত্রা নির্দেশত করেছে সেটি হলো প্রতিদিন ২৪ ঘন্টার-ভেতরে ৫০ মিঃ গ্রাঃ-এর অতিরিক্ত ভায়াগ্রা ট্যাবলেট সেবন না করা উচিত। সিলডেনাফিল সাইট্রেট দিয়ে চিকিৎসা শুরু করার পূর্বে আরেকটি বিষয় বিবেচনায় আনা উচিত। সেটি হলো কার্ডিওভাসকুলার বা হৃদযন্ত্র ও রক্ত সংবহনতন্ত্র সম্বন্ধীয় জটিলতা। যেসকল রোগীদের আগে হার্টএ্যাটাক, হার্টফেলিওর অথবা মায়োকর্ডিয়ামে ইনফেকশন হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ভায়াগ্রা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। গবেষণায় আরো পরিলক্ষিত হয়েছে এফডিএ যে মাত্রায় ভায়াগ্রা সেবনকে নির্দেশিত করেছে সে মাত্রায় সিলডেনাফিল সাইট্রেট সেবনেও ব্লাডপ্রেসার বা রক্তচাপ স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রেও একটু কমে থাকে। তাই যেসকল রোগীদের রক্তচাপ খুব কম বা হাইপোটেনশন রয়েছে (৯০/৫০-এর চেয়ে কম) অথবা যাদের উচ্চ রক্ত চাপ বা হাইপারটেনশন রয়েছে (রক্তচাপ ১৭০/১১০-এর চেয়ে বেশি) তাদের ক্ষেত্রে ভায়াগ্রা সেবন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে বা সম্প্রতি স্ট্রোক হয়েছে এসকল ক্ষেত্রেও ভায়াগ্রা সেবন করা স্বাস্থ্যের জন্য ঝঁকিপূর্ণ। সিলডেনাফিল সাইট্রেট সেবনে আরো কতক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো নেজাল কনগেশন হওয়া বা সর্দির মত জমে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, ডায়রিয়া বা বারবার পাতলা পায়খানা হওয়া, ডিজিনেস বা মাথা ঘুরানো, মাথা হাল্কা হাল্কাবোধ হওয়া এবং ত্বকে লালচে রেশ দেখা দেয়। এটি সেবনজনিত কারণে মূত্রতন্ত্র এবং রেসপেরিটরি বা শ্বাসপ্রশ্বাস তন্ত্রের সংক্রমণ বা ইনফেকশনও কতক রোগীতে পরিলক্ষিত হয়েছে। অবশ্য এর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য কারণ থাকতে পারে। সিলডেনাফিল সাইট্রেট সেবনে খুব কম সংখ্যক লোকের ক্ষেত্রে আরেকটি মেডিকেল জটিলতা দেখা দেয়। তাদের ক্ষেত্রে চার ঘন্টা বা তার চেয়ে বেশি সময়ব্যাপী ইরেকশন বা লিঙ্গ উত্থান ঘটে থাকে। কতকের ক্ষেত্রে লিঙ্গের ব্যথাপূর্ণ ইরেকশন ৬ ঘন্টা বা তার চেয়ে বেশি সময়ব্যাপী হতে পারে। এটিকে বলা হয় প্রায়াডিজম। এ পাশ্বপ্রতিক্রিয়াটি অত্যন্ত বিরল। এজন্য কারো ইরেকশন বা লিঙ্গ উত্থান যদি ৪ ঘন্টার বেশি বিরাজমান থাকে তাহলে জরুরি ভিত্তিতে এর মেডিকেল ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, প্রয়োডিজম যদি সাথে সাথে চিকিৎসা করা না হয় পিনাইল টিস্যু বা পেনিসের কোষকলার স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। ফলশ্রুতিতে শারীরিক মিলনের অক্ষমতা আরো তীব্ররূপ নিতে পারে।
Source: blogspot.com
Tuesday, January 10, 2006
Leave a Reply