সমস্যাঃ আমার বয়স ১৯ বছর। আমি সাত-আট মাস ধরে লক্ষ করছি, একটু ধুলোবালি, গাড়ির ধোঁয়া লাগলে, বা কখনো ঘর, কাপড়, এমনকি শেলফের বই-খাতা পরিষ্কার করতে গেলে প্রথমে আমার নাক ও চোখ চুলকায়। নাক ও চোখ দিয়ে পানি আসে। এরপর শ্বাসকষ্ট ও কাশি হয়, বুক চেপে আসে এবং বুকের ভেতর বাঁশির মতো শোঁ শোঁ আওয়াজ হয়। আমার আরেকটি সমস্যা হলো, অ্যালার্জি-জাতীয় কোনো খাবার খেলে শরীরে লাল চাকা বা দাগের মতো হয়। এই সমস্যাগুলো আমার অনেক আগে থেকেই। এ জন্য বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছি কিন্তু আশানুরূপ ফল পাইনি। আসলে আমার কী হয়েছে? এর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন আছে কি? এর চিকিৎসা কী?
নাম-ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।
পরামর্শঃ সম্ভবত আপনি নাক, চোখ, ত্বক ও শ্বাসনালির অ্যালার্জিজনিত রোগ, যেমন-অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, অ্যালার্জিক কংজাংটিভাইসিস, আরটেকেরিয়া ও অ্যাজমা রোগে ভুগছেন। যদিও বেশির ভাগ অ্যালার্জিজনিত রোগকে, রোগের উপসর্গ ও সঠিক ইতিহাসকে মোটামুটিভাবে নির্ণয় করা যায়, তবে শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার জন্য বা অন্য কোনো রোগ আছে কি না, তার জন্য কখনো কখনো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। যেমন-কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট স্কিন অ্যালার্জির টেস্ট। সিরাম আইজিই এক্স-রে পিএনএস, বুকের এক্স-রে, স্পাইরোমেটি পরীক্ষা করাতে পারেন। পরীক্ষাগুলো অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে করাবেন। উপসর্গগুলো থেকে ভালো থাকতে হলে যে কাজটি প্রথমে করতে হবে তা হলো, যে যে কারণে আপনার এ সমস্যাগুলো হয় সেগুলো চিহ্নিত করা এবং যতদূর সম্ভব তা এড়িয়ে চলা। যেমন-ধুলোবালি বা ধোঁয়া থেকে দূরে থাকা। ঘর ঝাড়ামোছা না করা, কাপড় বা বইপত্র পরিষ্কার না করা, বেডরুম, ড্রয়িংরুম বা অফিসের মেঝেতে কার্পেট না রাখা। বাড়িতে বিড়াল, কুকুর, পাখি বা হাঁস-মুরগি ঢুকতে না দেওয়া বা এগুলো না পোষা।
রোগের প্রকোপ কমানোর জন্য আপনি নিয়মিত অ্যান্টিহিস্টাসিন যেমন-লরাটাডিন, ডেসলবাঢাডিন ও কিটোটিফেন খেতে পারেন। প্রয়োজন হলে নাক-চোখে স্টেরয়েড স্প্রে ও ড্রপ ব্যবহার করে দেখতে পারেন। কাশি ও শ্বাসকষ্টের এ ওষুধগুলোর পাশাপাশি নিয়মিত বেকলোমিথাসন ইনহেলার এবং প্রয়োজন হলে সালবিউটামল ইনহেলার ব্যবহার করতে পারেন। তবে অবশ্যই ওষুধগুলো একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ব্যবহার করবেন।
পরামর্শ দিয়েছেন
মো· দেলোয়ার হোসেন
বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, বারডেম হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, শাহবাগ, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০৩, ২০০৯
Leave a Reply