হাইলাইটস
- প্রতি বছর এই ৩ নভেম্বর দিনটি জাতীয় গৃহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
- গৃহিনীদের সপ্তাহে একদিন ডে অফ এবং উপযুক্ত পারিশ্রমিকের দাবি নিয়েই
- এমন একটি বিশেষ দিনের ভাবনা
আর তাই দিয়া যখন বলত, ‘মা আমি তোমার মতো একা ঘরের সব কাজ সামলাবো সেদিন মা শুনে হাসতেন ঠিকই কিন্তু বারণও করতেন না’। আমাদের সমাজের কাঠামোটাই এরকম। ছোট থেকেই কাজের লিঙ্গভেদ করে দেওয়া হয়। ছেলেরা কখনও বিছানা-বালিশ তুলতে পারে না। খাওয়ার পর এঁটো বাসন মেয়েরাই তুলবে। সেই সঙ্গে যে সব মহিলারা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে কাজে যেতেন তাঁরা মনে করতেন, তাঁরাই সর্বেসর্বা। তাঁরাই ঠিক। বাকি সবাই ভুল। গৃহবধূরা সবচেয়ে কঠিন দফতর সামলালেও সব সময় উপেক্ষিত। বাড়িতে থেকে বাড়ির কাজ- এই বিষয়ে খোঁটা দেওয়া যে কতটা অন্যায় তা অন্যদের বোঝার মানসিকতা থাকে না। আর এই ভাবনা থেকে আমাদের সবাইকেই কিন্তু বেরিয়ে আসতে হবে।
প্রতি বছর এই ৩ নভেম্বর দিনটি জাতীয় গৃহিনী দিবস (National Homemaker Day) হিসেবে পালন করা হয়। গৃহিনীদের সপ্তাহে একদিন ডে অফ এবং উপযুক্ত পারিশ্রমিকের দাবি নিয়েই এমন একটি বিশেষ দিনের ভাবনা। মার্কিন যুক্তরাষ্টে এরকম অনেক গৃহকর্মী আছেন যাঁরা একটি পরিবারের সমস্ত দেখভাল করেন। শিশু থেকে রান্না সবটাই নিজেরা সামলান। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যাপারটা ঠিক উল্টো। বাড়ির মা কিংবা স্ত্রী পুরো সংসার আগলে রাখেন। বাচ্চার দেখাশোনা থেকে বস্কদের আগলে রাখা এই সবটাই কিন্তু তাদের জিম্মায়। ১৯৮৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল প্রায় ৫০ শতাংশ এমন মহিলা আছেন যাঁরা বাড়ি-কমর্ক্ষেত্র একা হাতে সামলান। ২০ এর শতকে এই অবস্থায় খানিকটা বদল এসেছে। ছেলেরাও এখন সমান ভাবে অংশগ্রহণ করেন বাড়ির কাজে। কিন্তু আজীবন গৃহিনী হয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি এখন কেউ দেন না। এবং তা দেওয়াটাও কিন্তু উচিত না।
দিন বদলেছে। ছেলে আর মেয়েরা সমানতালে কিন্তু এখন সব কাজ করতে পারে। অনেক বেশি সংখ্যক মহিলা নিজের ইচ্ছায় নিজস্ব কর্মজগতে প্রবেশ করছেন। তাই ছেল্রা শুধুই অফিস করবে আর মেয়েরা বাসন মাজবে এই ধারণা এখন অতীত। কিছু ক্ষেত্রে মেয়েরা কিন্তু বাড়ির পুরুষটির থেকে বেশি অর্থ উপার্জন করে। যে কারণে সব মা-বাবারই উচিত সন্তানকে সব রকম কাজ শেখানো। নিজের কাজ নিজেকেই করে নিতে হবে- এই মানসিকতা একবার তৈরি হয়ে গেলে আর কিন্তু সমস্যা হয় না। লিঙ্গ ভেদ যত তাড়াতাড়ি বন্ধ করতে পারবেন ততই ভালো। তাই এই বিশেষ দিনে যা করবেন-
নিজের কাজ নিজে করুন- নিজের কাজ নিজে করে নেওয়ার মতো ভালো আর কিছু নেই। ঘর পরিষ্কার থেকে জামা কাপড় কাচা একাহাতে করে নিন। যদি বাড়িতে কোনও গৃহ সহায়ক থাকেন তাহলে তাঁকে নিয়ম করে সপ্তাহে একদিনছুটি দিন। এছাড়াও বাড়ির মা-বউদের একদিন সম্পূর্ণ ছুটি প্রাপ্য।
যথাযুক্ত পারিশ্রমিক দিন- দিনের পর দিন পরিবারের মা/বোন/দিদিরা মুখ বুজে বাড়ির সব কাজ সামলে চলেছেন। প্রতিদিন ঠিক সময়ে আপনার হাতের সামনে সবটা গুছিয়ে দেওয়া যেন তাঁদের কর্তব্য। বাড়ির যাবতীয় জিনিস সারিয়ে রাখা, আপনার পছন্দসই রান্না তাঁর সারা জীবনের কর্তব্য হতে পারে না। বিনা পারিশ্রমিকে কোনও কাজই হয় না। তাই তাঁদেরও যথাযথ পারিশ্রমিক দিন।
একদিন বিশ্রাম দিন– গৃহিনীদের অবশ্যই একদিন বিশ্রামের জন্য ধার্য করুন। এবং জোর করেই মাসে অন্তত একটা দিন তাঁদের স্পা, পছন্দের কেনাকাটা কিংবা পছন্দের রেস্তোরাঁয় নিয়ে যান। মোটকথা নিজের জন্য সময় প্রত্যেকের প্রয়োজন। প্রত্যেক মানুষের বিশ্রামের প্রয়োজন। আর যেদিন তাঁর বিশ্রামের দিন সেদিন কিন্তু তাঁর সঙ্গে সেই রকমই আচরণ করুন। ওদিনও তিনি রান্না করবেন, কাপড় কাটবেন এমনটা ভেবে নেবেন না।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-11-03 14:06:32
Source link
Leave a Reply