হাইলাইটস
- ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ডেঙ্গির প্রবল প্রকোপ দেখা দেয়। ডেঙ্গি ভাইরাস বহনকারী এডিস অ্যাজিপ্টি মশা কামড়ালে ডেঙ্গির জ্বর হয়।
- এটি সরাসরি এক ব্যক্তি থেকে অপর ব্যক্তির মধ্যে ছড়ায় না। DEN-1, DEN-2, DEN-3 ও DEN-4 ভাইরাস থেকে ডেঙ্গি ছড়ায়।
- এই চারটি ভাইরাসকেই সিরোটাইপ বলা হয়, কারণ এই চারটি ভাইরাস পৃথক পৃথক ভাবে অ্যান্টিবডিকে প্রভাবিত করে।
- এমনকি পৃথক পৃথক স্ট্রেনের দ্বারা চার বার ডেঙ্গি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে ব্যক্তি।
কখন ডেঙ্গির মশা সবচেয়ে বেশি কামড়ায়
ডেঙ্গির মশা সবচেয়ে বেশি দুপুরের বেলায় কামড়ায়। সূর্যদয়ের দু ঘণ্টা পর থেকে সূর্যাস্তের এক ঘণ্টা আগে পর্যন্ত ডেঙ্গি মশা সক্রিয় থাকে। আবার রাতের বেলা যে সমস্ত অঞ্চলে উজ্জ্বল আলো থাকে, সেখানেও ডেঙ্গির মশা সক্রিয় থাকে। অফিস, মল, ইন্ডোর অডিটোরিয়াম ও স্টেডিয়ামের ভিতরে ডেঙ্গির মশা কামড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। কারণ এখানে সব সময় উজ্জ্বল কৃত্রিম আলো ব্যবহৃত হয় এবং প্রাকৃতিক রশ্মি প্রবেশ করতে পারে না।
কেমন দেখতে হয় ডেঙ্গির মশা
এটি ছোট, গাঢ় রঙের মশা। ডেঙ্গি সংক্রমণ ছড়িয়ে থাকা এই মশার পা বাঁধা থাকে, যে কারণে এরা বেশি ওপরে উড়তে পারে না। অন্য মশাদের তুলনায় ছোট আকারের হয় অ্যাডিস অ্যাজিপ্টি। কোনও ব্যক্তিকে কামড়ানোর তিন দিন পর ডিম পাড়ে এই মশা। ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে ডেঙ্গির লার্ভা পূর্ণাঙ্গ মশার আকার ধারণ করে। একটি বয়স্ক মশা প্রায় ৩ সপ্তাহ জীবিত থাকে। এই মশা গরমকালে জন্ম নেয়। শীতকাল পর্যন্ত এই মশা জীবিত থাকে না।
ডেঙ্গির জ্বর মৃদু ও গুরুতর উভয় ধরনের হতে পারে। এমন পরস্থিতিতে এর লক্ষণও পৃথক পৃথক হয়ে থাকে। অল্পবয়স্ক ও কিশোরাবস্থায় মৃদু ডেঙ্গি হলে এর কোনও লক্ষণ ধরা পড়ে না। সংক্রমিত হওয়ার ৪ থেকে ৭ দিন পর ডেঙ্গির লক্ষণ প্রকাশ্যে আসে। এ সময় তীব্র জ্বর থাকে। এ ছাড়াও—
- মাথা ব্যথা।
- মাংসপেশী, হাড় ও গাঁটে ব্যথা।
- বমি।
- গা গোলানো।
- চোখে ব্যথা।
- ত্বকে লাল গোল গোল দাগ।
- গ্রন্থি ফুলে যাওয়া।
তবে গুরুতর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে রক্তক্ষরণ হয়ে জ্বর বা ডিএইচএফ-এর কারণে ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে রক্তবাহিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রক্তের প্লেটলেট কাউন্ট কমতে শুরু করে। এ সময় নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দেয়—
- প্রচণ্ড পেটে ব্যথা।
- লাগাতার বমি।
- মাড়ি ও নাক থেকে রক্ত পড়া।
- মল, মূত্র ও বমিতে রক্ত।
- ত্বকের নীচে রক্তক্ষরণ। এটি দেখতে আঘাতের মতো হতে পারে।
- শ্বাসকষ্ট।
- ক্লান্তি অনুভব করা।
- খিটখিটে মেজাজ বা ব্যাকুলতা।
ডেঙ্গি সংক্রমণ গভীর আকার ধারণ করলে ফুসফুস, লিভার ও হৃদযন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে। এ সময় রক্তচাপ কমে যেতে পারে। অনেকক্ষেত্রে এর ফলে প্রাণ সংশয় পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গভীর ডেঙ্গির সংক্রমণে শরীরে নিম্নলিখিত জটিলতা দেখা দেয়—
- পেটে প্রচণ্ড ব্যথা।
- লিভারে তরল পদার্থ একত্রিত হয়ে যাওয়া।
- রক্তক্ষরণ।
- গা গোলানো।
- বুকে তরল পদার্থ জমা।
ডেঙ্গির জন্য কোনও বিশেষ ওষুধ নেই। জ্বর, ব্যথার জন্য ওষুধ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। শরীরকে হাইড্রেট রেখে ডেঙ্গিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী পদ্ধতি। এমন পরিস্থিতি বেশি করে জল পানের পরামর্শ দেওয়া হয়। ডাবের জল পান করেও এ সময় উপকার পাওয়া যায়। তবে ডেঙ্গি গভীর আকার ধারণ করলে রোগীকে হাসপাতালে ভরতি করতে হয়। গুরুতর পরিস্থিতিতে ইন্ট্রাভেনাস ফ্লুইড বা ইলেক্ট্রোলাইট সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্লাড প্রেশার মনিটরিং ও ব্লাড ট্রান্সফিউশানের মাধ্যমেও চিকিৎসা করা হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভুলেও অ্যাস্পিরিন বা ইবুপ্রোফেনের মতো ওষুধ খাবেন না। এটি রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
ডেঙ্গি হলে নিজের খাদ্য তালিকায় পেঁপে, কিউয়ি, বেদানা, বিট ও সবুজ শাকসবজি অন্তর্ভূক্ত করুন।
ডেঙ্গি থেকে নিজেকে কী ভাবে নিরাপদে রাখবেন
ডেঙ্গি মশা সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায়। তাই এ সময় যথাযত সতর্কতা অবলম্বন করুন। ফুল-হাতা জামাকাপড় পড়ে থাকুন। শরীরের কোনও অংশ উন্মুক্ত রাখবেন না। বাড়ি বা তার আশপাশে কোথাও জল জমতে দেবেন না। কুলার, টব, টায়ারে জল জমে থাকলে তা ফেলে পরিষ্কার করে নিন। এই সমস্ত জমা জলে মশা প্রজনন করতে পারে। রাতে ঘুমানোর সময় মশারি লাগিয়ে ঘুমান।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-10-28 17:03:11
Source link
Leave a Reply